পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৬৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৭
পল্লী-সমাজ


আলমারী, একটা খুব বড় ঘড়ি—একদিন তুমি গিয়ে দেখে এসো না, দিদি?” রমা অত্যন্ত আশ্চর্য্য হইয়া কহিল, “বলিস্‌ কি রে! হাঁ, দিদি সত্যি। রমেশবাবু এসেচেন না—তিনি সব ক’রে দিচ্চেন।” বলিয়া বালক আরও কি কি বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু সুমুখে মাসীকে আসিতে দেখিয়া রমা তাড়াতাড়ি তাহাকে লইয়া নিজের ঘরে চলিয়া গেল। আদর করিয়া কাছে বসাইয়া প্রশ্ন করিয়া এই ছোট ভাইটির মুখ হইতে সে রমেশ ও ইস্কুল সম্বন্ধে অনেক তথ্য সংগ্রহ করিল। প্রত্যহ দুই এক ঘণ্টা করিয়া তিনি নিজে পড়াইয়া যান, তাহাও শুনিল। হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিল, “হাঁরে, যতীন্‌, তোকে তিনি চিনতে পারেন?” বালক সগর্ব্বে মাথা নাড়িয়া বলিল, “হাঁ—” “কি ব’লে তুই তাঁকে ডাকিস্‌?” এইবার যতীন একটু মুস্কিলে পড়িল। কারণ, এতটা ঘনিষ্ঠতার সৌভাগ্য এবং সাহস আজও তাহার হয় নাই। তিনি উপস্থিত হইবামাত্র দোর্দ্দণ্ডপ্রতাপ হেডমাষ্টার পর্য্যন্ত যেরূপ তটস্থ হইয়া পড়েন, তাহাতে ছাত্রমহলে ভয় এবং বিস্ময়ের পরিসীমা থাকে না। ডাকা ত দূরের কথা—ভরসা করিয়া ইহারা কেহ তাঁহার মুখের দিকে চাহিতেই পারে না। কিন্তু দিদির কাছে স্বীকার করাও ত সহজ নহে! ছেলেরা মাষ্টারদিগকে ‘ছোটবাবু’ বলিয়া ডাকিতে শুনিয়াছিল। তাই, সে বুদ্ধিখরচ করিয়া কহিল, “আমরা ছোটবাবু বলি।” কিন্তু তাহার মুখের ভাব দেখিয়া রমার বুঝিতে কিছুই বাকী রহিল