পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৯৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৯৪


ফেলিল। খানিক পরে রমার মতই ধীরে ধীরে বলিল,—“কিন্তু তোমাকে স্মরণ ক’রে বল্‌চি, আজ আমার এ কথা কোন মতেই মনে হচ্চে না। আমি তোমার ত কেউ নই রমা, বরং তোমাদের পথের কাঁটা। তবু প্রতিবেশী ব’লে আজ তোমার কাছে যে যত্ন পেলুম, সংসারে ঢুকে এ যত্ন যারা আপনার লোকের কাছে নিত্য পায়, আমার ত মনে হয়, পরের দুঃখ-কষ্ট দেখ্‌লে তারা পাগল হয়ে ছোটে। এইমাত্র আমি একা ব’সে চুপ ক’রে ভাব্‌ছিলুম, আমার সমস্ত জীবনটি যেন তুমি এই একটা বেলার মধ্যে আগাগোড়া বদ্‌লে দিয়েচ। এমন ক’রে আমাকে কেউ কখনো খেতে বলেনি, এত যত্ন কোরে আমাকে কেউ কোন দিন খাওয়ায়নি। খাওয়ার মধ্যে যে এত আনন্দ আছে, আজ তোমার কাছ থেকে এই প্রথম জান্‌লাম রমা।” কথা শুনিয়া রমার সর্ব্বাঙ্গ কাঁটা দিয়া বারংবার শিহরিয়া উঠিল; কিন্তু সে তৎক্ষণাৎ স্থির হইয়া বলিল,—“এ ভুল্‌তে আপনার বেশী দিন লাগ্‌বে না। যদি বা একদিন মনেও পড়ে, অতি তুচ্ছ ব’লেই মনে পড়্‌বে।”

 রমেশ কোন উত্তর করিল না। রমা কহিল,—“দেশে গিয়ে যে, নিন্দে করবেন না, এই আমার ভাগ্য।” রমেশ আবার একটা নিঃশ্বাস ফেলিয়া ধীরে ধীরে বলিল,—“না রমা, নিন্দেও কর্‌ব না, সুখ্যাতি করেও বেড়াব না। আজকের দিনটা আমার নিন্দা-সুখ্যাতির বাহিরে।” রমা কোন প্রত্যুত্তর না করিয়া, খানিকক্ষণ স্থির হইয়া বসিয়া থাকিয়া, নিজের ঘরে