পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৬৫

 এদিকে, সেই শিশু সিংহশাবকের উপর অত্যন্ত উৎপীড়ন আরম্ভ করাতে, তাপমীরা কহিতে লাগিলেন বৎস! এই সকল জন্তুকে আমরা আপন সন্তানের ন্যায় খেই করি; তুমি কেন অকারণে উহাকে ক্লেশ দাও? আমাদের কথা শুম, ক্ষান্ত হও, সিংহশিশুকে ছাতিয়া দাও; ও আপন জননীর নিকটে যাউক। আর যদি তুমি উহাকে ছাড়িয়া না দাও, সিংহী তোমাকে জব্দ করিবেক। বালক শুনিয়া কিঞ্চিত্রও তত না হইয়া, সিংহশাবুকের উপর পূর্ব্বাপেক্ষায় আধিকতর উপদ্রব আরম্ভ করিল। তাপসীরা ভয় প্রদর্শন দ্বারা তাহাকে ক্ষান্ত করা সাধ্য বুঝিয়াপ্রলোভনার্থে কহিলেন বৎস! যদি তুমি সিংহশিশুকে ছাড়িয়া দাও, তোমাকে একটি ভাল খেলনা দি।

 রাজা, এই কৌতুক দেখিতে দেখিতে ক্রমে ক্রমে অগ্রসর হইয়া তাহাদের অতি নিকটে উপস্থিত হইলেন; কিন্তু সহসা তাহাদের সম্মুখে না আসিয়া, এক বৃক্ষের অন্তরালে থাকিয়া, সস্নেহ নয়নে সেই শিশুকে অবলোকন করিতে লাগিলেন। এই সময়ে সেই বালক, কই কি খেলনা দিবে দাও বলিয়া, হস্ত প্রসারণ করিল। রাজা, বালকের হস্তে দৃষ্টিপাত করিয়া চমৎকৃত হইয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন কি আশ্চর্য! এই বালকের হস্তে চক্রবর্ত্তিলক্ষণ লক্ষিত হইতেছে। তাপসীদিগের সঙ্গে কোন খেলা ছিল না; সুতরাং তাঁহারা তৎক্ষণাও দিতে না পারাতে, বালক কুপিত হইয়া কহিল তোমরা খেলাম দিলে না, তবে আমি উহাকে ছাড়িব না। তখন এক তাপসী অপর তাপসীকে কহিলেন সখি! ও কথায় ভুলবার ছেলে নয়। কুটীরে মাটির ময়ুর আছে স্বরায় লইয়া আইস। তাপসী মৃন্ময় ময়ূরের আনমনার্থ কুটীরে গমন করিলেন।

 প্রথমে সেই শিশুকে দেখিয়া রাজার অন্তঃকরণে যে স্নেহের