পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
শকুন্তলা

এরূপ স্মৃতিভ্রংশ হইয়াছিল যে ইহাকে চিনিতে পারিলাম না। চিনিতে না পারিয়া প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলাম। ইহাতে আমি মহাশয়ের ও মহর্ষি কণুের নিকট অত্যন্ত অপরাধী হইয়াছি। কৃপা করিয়া আমার এই অপরাধ মার্জনা করিতে হইবেক এবং মাহাতে মহর্ষি কণ আমার উপর অক্রোধ হন তাহারও উপায় করিতে হইবেক।

কশ্যপ শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন বংমে! সেজন্য কুণ্ঠিত হইও না। এবিষয়ে তোমার অণমাত্রও অপরাধ নাই। যে কারণে তোমার স্মৃতিভ্রংশ হইয়াছিল, তুমি ও শকুন্তলা উভয়েই অবগত নহ। এই নিমিত্ত আমি তোমাদিগকে | সেই স্মৃতিভ্রংশের প্রকৃত হেতু কহিতেছি। শুনিলে শকুন্তলার হৃদয় হইতে প্রত্যাখ্যান নিবন্ধন সকল ক্ষোভ দূর হইবেক। এই বলিয়া শকুন্তলাকে কহিলেম বৎসে! রাজা তপোবন হইতে প্রত্যাগমন করিলে পর, এক দিন তুমি পতিচিন্তায় মগ্ন হইয়া কুটীরে উপবিষ্ট ছিলে। সেই সময়ে দুর্বাসা আসিয়া অতিথি হন। তুমি এককালে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হইয়া ছিলে,সুতরাং তাহার সৎকার বা সংবর্ধনা করা হয় নাই। তিনি তাহাতে কুপিত হইয়া, তোমাকে এই শাপ দিয়া চলিয়া যান যে তুমি যাহার চিন্তায় মগ্ন হইয়া অতিধির অবমাননা করিলে সে কখনই তোমাকে স্মরণ করিবে না। তুমি সেই শাপ শুনিতে পাও নাই। তোমার সখীরা শুনিতে পাইয়া তাহার চরণে ধরিয়া অনেক অনুনয় বিনয় করে। তখন তিনি কহিলেন এ শাপ অন্যথা হইবার নহে। তবে যদি কোন অভিজ্ঞান দর্শাইতে পারে তাহা হইলে স্মরণ করিবেক। অনন্তর রাজাকে কহিলেন বৎস! দুর্বাসার শাপ প্রভাবেই তোমার স্মৃতিভ্রংশ হইয়াছিল, তাহাতেই তুমি উহাকে চিনিতে পার নাই। শকুন্তলার সখীর অনুনয় বিনয়ে