পাতা:পাবনা জেলার ইতিহাস ( ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২ পাবনা জেলার ইতিহাস { ২য় অঃ শৈতিক— পূৰ্ব্বে হিন্দু মুসলমান সমাজে শিক্ষত অশিক্ষিত সকল লোকই স্বীয় উন্নতিসহ সাধারণ জনহিতকর কার্বে অধিক মনোযোগী হইত; তাহারই ফলে এই জেলায় জয়সাগর, প্রাপদী, উদয়দীৰী, উল্লুর্থার দীর্ঘী প্রভূতি জলাশয়াদির চিহ্ন বৰ্ত্তমান আছে। সৎকার্ষ্যে ও ধৰ্ম্মক্রিয়ায় পূৰ্ব্বে লোকের অধিক প্রবৃত্তি ছিল, তাহার নিদর্শন স্বরূপ এই জেলায় স্থানে স্থানে নবরত্ন মন্দির ও নানাস্থানে মসজিদ আদি দেখিতে পাওয়৷ ষ ইতেছে। এরূপ দৃষ্টাস্ত আজকাল এই জেলায় বিরল। দশের ও দশের উপকারা-খ অধুনা নানারূপ সভাসমিতির আয়োজন পূর্বাপেক্ষ অধিক হষ্টয়াছে বটে, তবে ইহাতে পূৰ্ব্বের স্থায় ব্যক্তিগত আন্তরিক তার অভাব । সমবেত চেষ্টায় জলপ্লাবন, দুর্তিক্ষণদিতে লোকের বিপদাপদ হইতে রক্ষার প্রবৃত্তি পুৰ্ব্বাপেক্ষ বৃদ্ধি পাইয়াছে। দেশের দশের ও জনহিতকর কার্য্য করিয়া পূৰ্ব্বে রায় বাহাদুর, খান বাহাদুর উপাধি লাভ করিতে হইত; আজকাল তাহ তদপেক্ষ সহজ প্রাপ্য হুইয়াছে। অথিতিসেবী ও লোককে অন্নদান সৰ্ব্বত্র পুৰ্ব্বে অধিক ছিল। মফঃস্বলে অধিক থাকিলেও পাবনায় অতি কর্ম। পূৰ্ব্বে পাবনায় কাচাখড়ের ঘরে বাস করিয়| উকিল মোক্তারগণ দরিদ্র শিক্ষার্থীগণকে আহার্য্য ও বাসস্থান দানে সহায়তা করিলে-rমধুক্ষপাবনা দ্বিতল ত্রিতল অট্টালিকা পরিশোভিত হইলেও বিদ্যার্থিগণের অনেক স্থলেই স্থানাভাব ঘটিয়া থাকে । সিরাজগঞ্জের অড়িত আদিতে ছাত্র রাখা ও মুসলমান সমাজে জায়গীর রাখা প্রথার প্রচলন আছে। অধুনা অধিকাংশ লোক স্বীয় উন্নতিসহ স্বীয় পারিবারিক গৃহাদির সীনার্য্যাদি লইয়া ব্যস্ত । সম্পত্তিশালী হইলেই অনেক স্থলে লোকে অন্তের দম্পত্তি গ্রাসের জন্ত লালায়িত । পরের জমি কৌশলে পত্তনী লইয়া তাহাকে উচ্ছেদসাধনে প্রয়ালী। পাবনায় এ দৃষ্টান্ত বিরল নহে। ইহা আধুনিক নীতির পরিবর্তন | সামান্ত কারণে জমি জম। সংক্রান্ত মোকৰ্দমা আজকাল জেলার সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়। স্বীয় অর্থে নিজ নিজ পরিবারের নামে সম্পত্তি খরিদ কিম্ব ব্যবসায় পরিচালনাদি বেনামী কারবার পরিচালনে এবং মুসলমান সমাজে সাধারণতঃ স্ত্রীর নামে হেবানামা অথবা দেনমল্লাহর জন্ত দলিল সম্পাদন কার্য্যে এই দেশের লোকের নীতির কিঞ্চিৎ পরিচয় পাওয়া যায়। নৈতিক উন্নতি প্রভাবেই অধুনা সিরাজগঞ্জের গণিকাসংখ্যার হ্রাস ঘটিয়াছে।