এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পালামৌ
২৫


সাধিতেছে, তখন যুবার রাগ নিশ্চয় ভাতের উপর হইয়াছে; আমি বাঙ্গালী, সুতরাং এ ভিন্ন আর কি অনুভব করিব? এক কালে এরূপ রাগ নিজেও কত বার করিয়াছি, তাহাই অন্যের বীরদর্প বুঝিতে পারি।

 যখন আমি নিকটবর্ত্তী হইলাম, তখন স্ত্রীলোকেরা নিরস্ত হইয়া এক পার্শ্বে দাঁড়াইল। বৃত্তান্ত জিজ্ঞাসা করায় যুবা সদর্পে বলিল, “আমি বাঘ মারিতে যাইতেছি, এইমাত্র আমার গোরুকে বাঘে মারিয়াছে। আমি ব্রাহ্মণ-সন্তান; সে বাঘ না মারিয়া কোন্ মুখে আর জল গ্রহণ করিব?” আমি কিঞ্চিৎ অপ্রতিভ হইয়া বলিলাম “চল, আমি তোমার সঙ্গে যাইতেছি।” আমার অদৃষ্টদোষে বগলে বন্দুক, পায়ে বুট, পরিধানে কোট পেণ্টুলন, বাস তাঁবুতে; সুতরাং এ কথা না বলিলে ভাল দেখায় না, বিশেষতঃ অনেকে আমায় সাহেব বলিয়া জানে, অতএব সাহেবি ধরণে চলিলাম, কিন্তু নিঃসঙ্কোচচিত্তে। আমি স্বভাবতঃ বড় ভীত, তাহা বলিয়া ব্যাঘ্র ভুল্লুক সম্বন্ধে আমার কখন ভয় হয় নাই। বৃদ্ধ শিকারীরা কত দিন পাহাড়ে একাকী যাইতে আমায় নিষেধ করিয়াছে, কিন্তু আমি তাহা কখনও গ্রাহ্য করি নাই, নিত্য একাকী যাইতাম; বাঘ আসিবে, আমায় ধরিবে, আমায় খাইবে, এ সকল কথা কখনও আমার মনে আসিত না। কেন আসিত না, তাহা আমি এখনও বুঝিতে পারি না। সৈনিক পুরুষদের মধ্যে অনেকে আপনার ছায়া দেখিয়া ভয় পায়, অথচ অম্লান বদনে রণ-ক্ষেত্রে গিয়া রণ করে। গুলি কি তরবার তাহার অঙ্গে প্রবিষ্ট হইবে, এ-কথা তাহাদের মনে আইসে না। যত দিন তাহাদের মনে এ কথা না আইসে, তত দিন লোকের নিকট তাহারা সাহসী; যে বিপদ্‌ না বুঝে, সেই সাহসিক। আদিম অবস্থায় সকল পুরুষই সাহসী ছিল, তাহাদের তখন ফলাফলজ্ঞান হয় নাই। জঙ্গলীদের মধ্যে অদ্যাপি