পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

[ ৩ ]

ঘটনার কথা থাকে। অনেক শিলাপত্র একত্র না করিলে ইতিহাস পাওয়া যায় না। শিলাপত্রও আবার একজায়গায় থাকে না। কোনখানি হিমালয়ে, কোন খানি বিন্ধপর্ব্বতে, কোন খানি উরুবেলায়, কোন খানি আবার সুদূর নীলগিরিতে। এসকল সংগ্রহ করা বড় পরিশ্রমের কাজ। ইংরাজের নাকি বড় রাজত্ব, প্রচুর ক্ষমতা এবং অনন্ত জ্ঞানপিপাসা; তাই তাঁহারা এই সমস্ত শিলালিপি সংগ্রহ করিয়া ভারতের ইতিহাস উদ্ধার করিতেছেন। যাহা আমাদের সাধ্যের অতীত, তাঁহারা তাহা সুসাধ্য করিয়া তুলিয়াছেন। অনেক বিষয়েই আমরা ইংরাজের ঋণ শুধিতে পারিব না, এ বিষয়ে কিন্তু ইংরাজের নিকটে আমরা অনন্তকাল ঋণী থাকিব। এ ঋণ একেবারে শোধ হইবার নয়।

 যখন বৌদ্ধধর্ম্মের বড়ই প্রভাব তখন বুদ্ধ-দেবের পরম ভক্তেরা চাঁদা করিয়া পাথর কাটিয়া আনিয়া বড় বড় স্তূপ নির্ম্মাণ করিত এবং তাহার ঠিক মাঝখানে বুদ্ধদেবের অস্থি রক্ষা করিত এবং সেই স্তূপকে বুদ্ধ, ধর্ম্ম ও সঙ্ঘের একত্র মিলন বলিয়া মহা ভক্তিভরে তাহার পূজা করিত; সেই স্তূপের চারিদিকে বড় বড় পাথরের রেল দিত। টোকা টোকা খামের উপর রেলিং, আর দুই দুইটা থাম মিলাইবার জন্য তিনটী করিয়া সূচী। এমন করিয়া পালিস করিত যে হাত দিলে হাত পিছলাইয়া পড়িত। প্রত্যেক থামে, প্রত্যেক সূচীতে ও রেলের প্রত্যেক পাথরে যে চাঁদা দিত তাহার নাম লেখা থাকিত। ভারতবর্ষে এরূপ স্তূপ অনেক ছিল, দুই চারিটী এখনও আছে। এই স্তূপে অনেক পাষাণ আছে, তাহারা সকলে মিলিয়া অনেক কথা কয়, আমাদের অনেক পুরাণ কথা শুনায়, আমাদের যে গৌরব নষ্ট হইয়া গিয়াছে, তাহা আবার মনে করাইয়া দেয়।

 বাঘেলখণ্ডে বেরুট নামক স্থানে এইরূপ একটী প্রকাণ্ড স্তূপ ছিল, কালের কুটীল গতিতে বৌদ্ধদ্বেষীদিগের উৎপীড়নে সে স্তূপের অনেক ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। রেলিংয়ের যে অংশটুকু আভাঙ্গা টাট্‌কা ছিল,