পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

 প্রতিদিন পূর্ব্বতোরণের নিম্নে বসিয়া স্তূপসংলগ্ন সঙ্ঘারামবাসী ভিক্ষুগণ আর্য্যাবর্ত্তের বর্ত্তমান অবস্থার কথার আলোচনা করিতেন। তাঁহাদিগের নিকটই শুনিতাম যে, মহাসমুদ্রের উর্ম্মিরাশির ন্যায় শকজাতি আর্য্যাবর্ত্ত আচ্ছন্ন করিতে আসিতেছে, সিন্ধুনদের পশ্চিম তীরে আর আর্য্যাধিকার নাই। বাহ্লীকের যবনরাজ্য ধ্বংস হইলে পারদরাজগণ শকপ্লাবনস্রোত রোধ করিতে বৃথা চেষ্টা করিয়াছিলেন। সুদূর যোনদ্বীপে ও মিজ্রাইমে আন্তীয়োক ও তুরময় বংশীয় রাজগণ শকজাতির আক্রমণভয়ে কম্পিত হইতেছেন, শকজাতির গতিরোধের চেষ্টায় চারিজন পারদরাজ জীবন-বিসর্জ্জন করিয়াছেন, পঞ্চমের জীবন সঙ্কটাপন্ন। শকস্রোত ক্রমশঃ নিকটবর্ত্তী হইল। উপনগরবাসী জনৈক ব্যক্তি জালন্ধরে শকসৈন্য দেখিয়া আসিয়াছে। তাহার নিকট হইতে শকজাতির বিবরণ শুনিবার জন্য কৌশাম্বী হইতে রাজদূত আসিয়ছে। ক্রমশঃ শ্রুত হইল, মথুরায় রামদত্ত ও ত্রিগর্ত্তে উত্তমদত্তের অধঃপতন হইয়াছে; অতি প্রাচীন চেদি রাজবংশ মৎস্যদেশের অধিকার হইতে বিচ্যুত হইয়াছেন। একদিন সংবাদ আসিল যে, শকসৈন্য নগর অধিকার করিতে আসিতেছে। নগরের কথা বলি নাই। ধনভূতির শিশু পুত্ত্র যথাসময়ে বয়ঃপ্রাপ্ত, জরাগ্রস্ত ও কালকবলিত হইয়াছেন। তাঁহার পর তদ্বংশের অপর রাজদ্বয় সিংহাসন অধিরোহণ করিয়াছিলেন। শক আক্রমণকালে যিনি নগরাধিপতি ছিলেন তাঁহার সদ্ধর্ম্মের প্রতি তাদৃশ অনুরাগ ছিল না। তখন আর্য্যাবর্ত্তে দাক্ষিণাত্যবাসী অন্ধ্র জাতির অধিকার, সদ্ধর্ম্মদ্বেষী সুঙ্গবংশের অধঃপতন হইয়াছে। তৎপদানুবর্ত্তী অহিচ্ছত্রবাসী বিশ্বাসঘাতক কাণ্ববংশীয় ব্রাহ্মণগণও নির্ম্মূল হইয়াছে; আর্যাবর্ত্তের রাজচক্রে শিথিলতা প্রবেশ করিয়াছে। পাটলিপুত্রে অন্ধ্ররাজের জনৈক কর্ম্মচারী বাস করেন, কিন্তু তাঁহার ক্ষমতা

৬৭