পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



ভূমিকা

 পুরাণ কথা কে বলে, বলিবার লোক নাই। বুড়া মানুষে না হয় ১০০।১৫০ বৎসরের কথা বলিল, ইহার অধিক হইলে বলিবার মানুষ পৃথিবীতে পাওয়া যায় না। লেখায় পড়ায় রাখিয়া গেলে সে কথা অনেক দিন থাকে সত্য, কিন্তু যে জিনিসে লেখা হয়, সে ত আর বেশী দিন টিকে না। কাগজ ৮।৯ শত বৎসর টিকে, তালপাতা ১২।১৪ শত বৎসর টিকে, ভুজ্যিপত্র ১৫।১৬ শত বৎসর টিকে, পেপিরস না হয় দুহাজার বৎসর টেঁকিল। ইহার অধিক দিনের কথা শুনিতে গেলে কাহার কাছে যাই? পাথর ভিন্ন অন্য উপায় নাই। তাও আবার সকল পাথরে হয় না। বেলে পাথর ৫৭।৬০ বৎসরে ক্ষইয়া যায়। অনেক শক্ত পাথরে চটা উঠিয়া যায়। কেবল দুই প্রকার পাথরে আঁক চিরকাল থাকে। এক রকম পাথর আগুনের তাতে গলিয়া যায়, তাকে ধাতু কহে; আর এক রকম পাথর কিছুতেই গলে না, ক্ষয় হয় না, তাহাকে পাষাণ বলে। পুরাণ কথা শুনিতে গেলে এই পাষাণকে কথা কহাতে হয়, নহিলে পুরাণ কথা শুনিবার উপায় নাই।

 অন্যদেশে বরং ৩।৪ হাজার বৎসরের খবর পাওয়া বায়, কেননা সেখানকার পণ্ডিতেরা যে সকল পুঁথি রাখিয়া গিয়াছেন, তাহা বারবার নকল হইয়া আজ পর্য্যন্ত আসিয়া পঁহুছিয়াছে। আমাদের দেশেও এরকম অনেক পুঁথি আসিয়া পঁহুছিয়াছে; তাহাতেও আছে সবই—যাগ আছে, যজ্ঞ আছে, আইন আছে, কানুন আছে, চিকিৎসা আছে, জ্যোতিষ আছে, ব্যাকরণ আছে, কাব্য আছে, অলঙ্কার আছে, বিজ্ঞান আছে—আছে