পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ।


তারাদিদির পরিচয়।

 “তারাদিদি একজন বৈষ্ণবী, কিন্তু বৈষ্ণবের কন্যা কি না, জানি না। শুনিয়াছি, আমাদিগের গ্রামে পূর্ব্বে তাহার বাসস্থান ছিল না; বহুদিবস হইল, অপর কোন স্থান হইতে আসিয়া, এই স্থানে বাস করিতেছে। তারাদিদি এখন প্রবীণ স্ত্রীলোক; তাহার বয়ঃক্রম এখন পঞ্চাশ বৎসরের কম হইবে না। তাহার বর্ণ শ্যাম। নাক, চোক, মুখ প্রভৃতি প্রায় সমস্ত অবয়বের গঠন মন্দ নহে। পরমা সুন্দরী না হইলেও, তাহার যৌবনকালে বোধ হয়, সে দেখিতে নিতান্ত মন্দ ছিল না। যৌবনকালে কিরূপ সাজ-সজ্জায় সে থাকিত, তাহা জানি না; কিন্তু আমি যে সময়ের কথা বলিতেছি, সেইসময়ে তাহার গলায় তুলসীর মালা, নাকে রসকলি ও হাতে হরিনামের ঝুলি প্রায় সর্ব্বদাই দেখিতে পাওয়া যাইত। মুখে হরিনাম সর্ব্বদাই লাগিয়া থাকিত। আমাদিগের বাড়ীর সংলগ্ন তাহার একখানি নিতান্ত সামান্য খড়ের ঘর ছিল। সেই গৃহখানি এরূপ ভাবে আমাদিগের বাড়ীর সহিত সংলগ্ন ছিল যে, যিনি না জানিতেন, তিনি সেই ঘর দেখিয়া কখনই মনে করিতে পারিতেন না যে, সেই গৃহখানি আমাদিগের বাড়ীর সামিল নহে।

 “আমি বাল্যকাল হইতেই তারাদিদির আচার-ব্যবহার ও চালচলন দেখিয়া আসিতেছিলাম, কখনও তাহার ইতরবিশেষ কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারি নাই। কিন্তু ইদানীন্তন্‌কালে তাহার কিছু