পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

তারাদিদিকে গ্রামের কেহই কোন বিষয়ে অবিশ্বাস করিত না; সকলেই বিশ্বাস করিত, এবং সকলের বাড়ীর ভিতরেই তারাদিদি তাহার ইচ্ছানুযায়ী গমনাগমন করিত। তারাদিদির বিপক্ষে কোন কথা আমরা কখনও শুনি নাই, বা ইতিপূর্বে তাহার কোন দোষ আমরা স্বচক্ষে দর্শন করি নাই; কিন্তু আজকাল বৈষ্ণবদিগের ঘরে সে দোষের কথা প্রায়ই শুনিতে পাওয়া যায়, যৌবনে সেই দোষ হইতে তারাদিদি নিষ্কৃতি পায় নাই বলিয়া, সকলেই সন্দেহ করিত মাত্র।

 “আমি তারাদিদিকে প্রাণের সহিত ভালবাসিতাম ও অন্তরের সহিত বিশ্বাস করিতাম বলিয়াই, আমার মহাপাপের উৎপত্তি, এবং এই সর্ব্বনাশের সৃষ্টি হইয়াছে। পরিশেষে সেই মহাপাপের শেষ ফলে আমার ইহ-জীবনের এই বীভৎস পরিণামও হইতে বসিয়াছে।

 “গ্রামে যত দিবস অতিবাহিত হইতে লাগিল, তারাদিদির সহিত আমার প্রণয় ততই ঘনীভূত হইতে লাগিল। এমন কি, সাংসারিক কার্য্য হইতে অবসর পাইলে আমি আর কোন স্থানে তিলার্দ্ধ বিলম্ব করিতে পারিতাম না, তাহারই নিকট গিয়া উপস্থিত হইতাম। আমি তারাদিদিকে যতদূর ভালবাসিতাম, তাহার ব্যবহার দেখিয়াও বোধ হইত, সে আমাকে তাহা অপেক্ষা অধিক ভালবাসে, এবং ততোধিক যত্ন করে। তারাদিদি যে কি নিমিত্ত আমাকে এত ভালবাসা দেখাইত, আর কেনই বা আমাকে এত যত্ন করিত, তাহার অর্থ তখন আমি কিছুমাত্র বুঝিতে পারিতাম না। তারাদিদির সহিত এতটা মেশামিশি করাতে আমার পিতামাতা যেন একটু রাগ করিতেন। সকল সময়েই তারাদিদির বাড়ীড়ে যাওয়া, তাঁহারা যেন