পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
দারােগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

নিমিও সংসার হইতে একটীমাত্র পয়সা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। তারাদিদি ইহা জানিত; সুতরাং এই সময় সে আরও একটী নূতন উপায় বাহির করিয়া আমাকে আরও বশীভূত করিতে সমর্থ হইল। আবশ্যকমত গামছাখানা, কাপড়খানা, টাকাটা-সিকিটা ত আমাকে দিতেই লাগিল; তদ্ব্যতীত আমার পিতামাতাকেও সে সবিশেষরূপে সাহায্য করিতে আরম্ভ করিল। আমার পিতামাতা তারাদিদির নিকট হইতে সহজে সাহায্য গ্রহণ করিতে সম্মত না হওয়ায়, সে তাহাদিগকে এইরূপে বুঝাইয়াছিল,—‘আমি এতদিবস পর্য্যন্ত ভিক্ষা করিয়া যাহা কিছু সংস্থান করিয়াছি, তাহা আমার নিকটেই আছে। কিন্তু আমি আর কতদিবস বাঁচিব, এবং আমার মৃত্যুর পরই আমার যাহা কিছু আছে, তাহা কে গ্রহণ করিবে? আপনারা ব্রাহ্মণ, বিশেষতঃ এখন আপনারা অত্যন্ত কষ্টে পড়িয়াছেন। আমি বৈষ্ণব, অমর প্রধান কর্ত্তব্য কর্ম্ম কোনরূপে ব্রাহ্মণের সাহায্য করা। এই নিমিত্তই যথাসাধ্য আমি আপনাদিগকে সাহায্য করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছি। আপনাদিগের এইরূপ দরিদ্রাবস্থা যত দিবস থাকিবে, ততদিবস আপনাদিগের যাহা কিছু আবশ্যক হইবে, তাহা আমার নিকট হইতে গ্রহণ করুন। পরে যখন আপনাদিগের অবস্থার পরিবর্ত্তন হইবে, তখন যদি ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে আমার নিকট হইতে এখন যাহা গ্রহণ করিতেছেন, তখন না হয় তাহার হিসাব করিয়া আমাকে সমস্ত ফিরাইয়া দিবেন।’

 “আমার বৃদ্ধ পিতামাতাকে এইরূপে তারাদিদি যাহা বুঝাইল, দুরবস্থায় পড়িয়া সংসার-যাত্রানির্ব্বাহে কষ্ট পাইতেছিলেন বলিয়া, তাঁহারাও পরিশেষে তাহাই বুঝিলেন। এখন তারাদিদিই অমাদিগের সকলের সমস্ত খরচ যোগাইতে লাগিল। এই সমস্ত হইতে আমিও