পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
দারােগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

হইয়া দিনরাত্রি মহাসুখে অতিবাহিত করিতে লাগিলাম, তথাপি কেহই তাহার বিন্দুবিসর্গও জানিতে পারিল না। এমন কি, আমার পিতামাতা পর্য্যন্তও ঘূণাক্ষরে তাহার বিন্দুবিসর্গও বুঝিতে পারিলেন না। কিন্তু আমার এমনই অদৃষ্ট যে, এইরূপে একবৎসর অতিবাহিত হইতে না হইতেই আমার সেই প্রাণের দিদির মৃত্যু হইল, এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে আমার অদৃষ্টও ভাঙ্গিয়া গেল। তারাদিদির যাহা কিছু ছিল, মৃত্যুকালে সে আমার পিতামাতাকেই তাহা দিয়া গেল।

 “তারাদিদির মৃত্যুর আট দশদিবস পর হইতেই আমার এত দিবসের সকল গুপ্তকথা ব্যক্ত হইতে আরম্ভ হইল। এক কান, দুই কান করিয়া আমার পাপের কথা সকলের কানে কানে ফিরিতে লাগিল; ক্রমে উহা আমার পিতামাতার কানে পর্য্যন্ত আসিয়া উপস্থিত হইল। কেবল যে পরের মুখে তাঁহারা আমার চরিত্রের কথা শুনিলেন তাহা নহে। একদিবস সন্ধ্যার পর তারাদিদির খালি বাড়ীতে আমি আমার সেই ‘আর একজনের’ সহিত অদ্ভুত ক্রিয়াকলাপে উন্মত্তা আছি, এমন সময়ে আমার মাতা কিরূপে তাহা জানিতে পারেন, এবং পরিশেষে আমার পিতাকে ডাকাইয়া তিনি আমার সেই অদ্ভুত ক্রিয়া-কলাপ তাঁহাকে দেখাইয়া দেন। তিনি পূর্ব্বে লোক-পরম্পরায় যাহা শুনিয়া সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করিতে পরিতেছিলেন না, আজ তিনি তাহা স্বচক্ষে দেখিয়া একেবারে মর্ম্মাহত হইলেন, এবং আমাকে সেই ‘আর একজনের’ সহিত হত্যা করিয়া এই ভয়ানক পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিবেন, ইহাই মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন। কিন্তু স্ত্রীহত্যা মহাপাপ, এই কথা তাঁহার মনে উদিত হওয়ায়, সহসা সেই কার্য্য তিনি হস্তক্ষেপ