পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

অধিক হইবে, কিন্তু হঠাৎ দেখিলে চল্লিশ বৎসরের কম বলিয়াই অনুমান হয়। ইহার বর্ণ গৌর, কলেবর স্থূল, হস্তে সোণার কয়েকগাছি চুড়ি, পরিধানে একখানি মিহি কাশির পাছাপেড়ে পরিষ্কার সাদা শাটী, নাকের উপর তিলক, হস্তে হরিনামের ঝুলি। পরে জানিতে পারিয়াছিলাম, ইনিই সেই বাড়ীর বাড়ীওয়ালী।

 “বাড়ীওয়ালী আমার নিকট কিয়ৎক্ষপ উপবেশন করিবার পরই, অন্যান্য ঘর হইতে এক এক করিয়া প্রায় সমস্ত স্ত্রীলোকই আমার নিকট আগমন করিল। উহাদিগের মধ্যে কেহবা গৌরাঙ্গী, কেহ শ্যামাঙ্গী; কিন্তু সকলেই পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন, দুই একখানি সোণার অলঙ্কার এবং ধপ্‌ধপে পরিষ্কার বস্ত্র সকলেই পরিধান করিয়াছিল। আমি উহাদিগের চালচলন, বেশভুষা, অঙ্গভঙ্গি প্রভৃতি দেখিয়া বিবেচনা করিলাম যে, ইহারাই সর্ব্বপ্রকার দুঃখ ও কষ্ট হইতে পরিত্রাণ পাইয়া পরমসুখে এই স্থানে বাস করিতেছে।

 “আমি কিরূপ দুঃখ ও কষ্টে পিতামাতার গৃহে বিধবা অবস্থায় বাস করিতেছিলাম, তাহার কিছু কিছু বিবরণ উহারা আমার নিকট শ্রবণ করিয়া কতই দুঃখ প্রকাশ করিতে লাগিল, এবং এখন আমি যাহাতে তাহাদিগের মত স্বাধীন হইয়া তাহাদিগের ন্যায় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনের অবশিষ্টকাল অতিবাহিত করিতে পারি, তদ্বিষয়ক কতপ্রকার যুক্তিপূর্ণ উপদেশ প্রদান করিতে লাগিল।

 “দেখিতে দেখিতে দিবা চারিটা বাজিয়া গেল, সেই সময় ‘তিনি’ বাজার হইতে ফিরিয়া আসিলেন। বাজার হইতে তিনি যে সকল দ্রব্যাদি ক্রয় করিয়া আপনার সঙ্গে করিয়া আনিলেন, তাহা দেখিয়া আমি অতিশয় সন্তুষ্ট হইলাম। এক কথায়, আমার নূতন ঘর, তিনি অন্যান্য সকলের ঘরের ন্যায় দ্রব্যাদিতে সজ্জিত