কোন বন্ধুই তাঁহার অবর্ত্তমানে আমার ঘরে আসিতেন না; কিন্তু যখন তাঁহারা আসিতেন, আমাদিগের দুই চারি টাকা মদ্যপানাদিতে খরচ না করাইয়া তাঁহারা প্রতিগমন করিতেন না। বলা বাহুল্য, সেই সমস্ত খরচই আমার ‘তিনি’ প্রদান করিতেন। এ নিয়ম কিন্তু বহুদিবস থাকিল না। ক্রমে সময়ে, অসময়ে, রাত্রিকালে ও দিবাভাগে তাঁহার সহিত একত্র, কখন বা পৃথক, অর্থাৎ যখন ইচ্ছা তখনই তাঁহারা আমার ঘরে আসিতে আরম্ভ করিলেন। ইহাতে আমারও কোন প্রতিবন্ধক রহিল না; অধিকন্তু, একাকী কেহ কোন সময়ে আমার ঘরে আগমন করিলে, তাহা আমি কোনরূপেই অপরের কর্ণগোচর হইতে দিতাম না। এই সময় তাঁহারা ‘তাহাকে’ লুকাইয়া আমাকে কিছু কিছু প্রদান করিতেও পরাঙ্মুখ হইতেন না; আমিও তাহা গ্রহণ করিতে কোন প্রকার আপত্তি করিতাম না।
“এইরূপে এক বৎসরকাল অতীত হইতে না হইতেই আমি যাহা কখন স্বপ্নেও ভাবি নাই, তাহাই হইল। যদিও এখন অনেকেই আমার সহায় হইয়াছিলেন, তথাপি আমার প্রধান এবং যাঁহাকে আমি আন্তরিক একটুও ভালও বাসিতাম, ‘তিনি’ আমাকে পরিত্যাগ করিলেন;—বিসূচিকা রোগে হঠাৎ ‘তাঁহার’ মৃত্যু হইল। ইহাতে আমার মনে অতিশয় কষ্ট হইল বটে, কিন্তু সে কষ্ট অধিকক্ষণ স্থায়ী হইতে পাইল না, অবিরত সুরাপান ও অপরের সহিত আমোদ-প্রমোদ করিয়া সেই কষ্টকে আমার মন হইতে সহজেই দূরীভূত করিতে সমর্থ হইলাম।
“হায়! তখন আমি ঘূণাক্ষরেও বুঝিতে পারিয়াছিলাম না যে, আমি দিন দিন কেবল পাপকেই প্রশ্রয় দিতেছি। পাপের