পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

কুহকিনী মায়ায় ভুলিয়া তাহাকেই সুখ-জনক জ্ঞান করেতেছি, এবং নিত্য নিত্য সেই পাপের অতলস্পর্শ সমুদ্রের ভিতর অরক্ষিত ভাবে ক্রমে ক্রমে প্রবিষ্ট হইতেছি।

 “আমি যদিও বিধবা; কিন্তু পূর্ব্বে স্বামীসহবাস আমার অদৃষ্টে ঘটে নাই। যদিও আমি ধর্ম্মের মস্তকে পদাঘাত করিয়াছিলাম, কিন্তু এ পর্য্যন্ত আমাকে কেহ দ্বিচারিণী বলিতে পারিত না। যদিও আমি অন্য পুরুষের সহিত আমোদ আহ্লাদ করতাম, যদিও তাহাদিগের সহিত কখন সর্ব্বসমক্ষে,কখন বা নির্জ্জনে বসিয়া একত্র সুরাপান ও আমোদ-আহ্লাদ করিতে কোনরূপে কুণ্ঠিত হইতাম না, তথাপি সেই একজন ভিন্ন অন্য কাহাকেও এ পর্য্যন্ত কোন ভাবে আমার হৃদয়ে স্থান প্রদান করি নাই; কিন্তু এখন আমার মহাপাপের পরিণাম স্মরণ করিয়া হৃদয়ে ভয়ানক আতঙ্ক আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে! আর পাপমুখে এখন আমার বলিতেও লজ্জা হইতেছে যে, ‘তাঁহার’ মৃত্যুর পর, আর আমার কিছুই বাকী রহিল ন! ক্রমে ক্রমে আমি ‘দ্বিচারিণী, ত্রিচারিণী ও বহুচারিণী হইয়া পড়িলাম।

 “উঃ! প্রথম অবস্থায় বুঝতে না পারিয়া, আমি কি ভয়ানক কার্য্যই করিয়াছিলাম! হে জগদীশ্বর! এই বিধবা হিন্দু-রমণীর সেই মহাপাপের ভয়ানক যন্ত্রণা হইতে কি কখনও পরিত্রাণ নাই? হে জগৎপিতা! অমি শুনিয়াছি যে, অপনার নিকট সকলেরই ক্ষমা আছে, সকল পাপীকেই আপনি পাপানুযায়ী ক্ষমাও করিয়া থাকেন; কিন্তু জগদীশ! আমি নিজেই বুঝিতে পারিতেছি, আমার দ্বারা যে সকল মহাপাপের অবতারণা হইয়াছে, সেই সকল পাপের কোন প্রকার ক্ষমা নাই; আমার ন্যায় মহাপাপিনী যদি ক্ষমা-