পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

তিনি। সুতরাং তিনি যাহাই করুন না কেন, বা যাহাই বলুন না কেন, আমি তাঁহাকে কোন কথা বলিতাম না।

 “বিনা-আয়ে বসিয়া বসিয়া ব্যয় করিলে, কুবেরের ভাণ্ডারও ক্ষয় হইয়া যায়, আমি কোন্‌ ছার! আমার সমস্ত অর্থ যেরূপ জোয়ারের মত আসিয়ছিল, এখন ভাঁটার মত চলিয়া যাইতে লাগিল! আমার এবং কালীবাবুর সেই পূর্ব্বের মত আহারের নিমিত্ত খরচ, সেই পূর্ব্বের মত পরিচ্ছদ, ও সেই পূর্ব্বের মত সুরাপানের কিছুমাত্র হ্রাস না পাইয়া, এখন বরং বৃদ্ধিই হইতে লাগিল। তাহার উপর কালীবাবুর দেশে তাহার পরিবারের খরচ আছে; এখানকার নাচ-থিয়েটার আছে; গাড়িভাড়া আছে; বাবুগিরি আছে। বিনা-আয়ে এই সকল ব্যয় হইতে থাকিলে, সঞ্চিত অর্থ আর কতদিবস থাকিবে? ক্রমেই তাহার হ্রাস হইয়া আসিতে লাগিল।

 “সেই সময়ে কালীবাবুর দেশ হইতে এক পত্র আসিল যে, তাঁহার স্ত্রী ভয়ানক পীড়িতা, মৃতু-শয্যায় শায়িতা, মৃত্যুকালে কালীবাবুকে একবার জন্মশোধ দেখিতে তাঁহার নিতান্ত ইচ্ছা। এইরূপ পত্র পাইয়াও কালীবাবু আমাকে ছাড়িয়া যাইতে চাহিলেন না। তিনি প্রায় চারি বৎসর দেশে যান নাই। তাঁহার একটী পুত্র সন্তানও হইয়াছে, এখন তাহারই বয়ঃক্রম প্রায় সাড়ে তিন বৎসর হইবে। তিনি এ পর্য্যন্ত তাঁহার সেই পুত্রের মুখও দেখেন নাই। আমি কালীবাবুকে অনেক বুঝাইলাম; তাঁহার অনিচ্ছা-সত্ত্বেও তাঁহার মত করাইলাম, এবং কিছু খরচের টাকা দিয়া তাঁহাকে সাতদিবসের জন্য দেশে পাঠাইয়া দিলাম। আমিও তাঁহার সহিত ষ্টেশন পর্য্যন্ত গমন করিয়া তাঁহাকে রেলে উঠা-