“যিনি আমার বাড়ীতে মদ্যপান করিতে আসিতেন, তাঁহারই খরচে মদ্য আনীত হইত; ইহাতেও কিছু লাভ করিতাম। যিনি অধিক রাত্রিতে মদ্যপান করিতে আসিতেন, তাঁহাকে আমার ঘরের সঞ্চিত মদ্যই দিতাম! তাহাতে সিকি মদ ও বার আনা জল থাকিত; তিনি তাহাই গ্রহণ করিতেন। কারণ, অধিক রাত্রিতে আর কোন স্থানে মদ্য পাওয়া যাইত না। তখন সকলে একত্র উহা পান করিতাম। কালীবাবুও সেই সঙ্গে মদ্য পান করিতেন, এবং ঘন ঘন চু্রুট টানিতেন। অন্য সময় কালীবাবু অধিক পরিমাণে চুরুট খাইতেন না; কিন্তু মদ্যপানের সময় এত অধিক পরিমাণে চুরুট খাওয়ার সবিশেষ কারণ ছিল। যাঁহারা কখন ঠেকিয়াছেন বা শুনিয়াছেন, তাঁহারাই তাহা বুঝিতে পারিবেন; কিন্তু অন্যে সহজে তাহা বুঝিয়া উঠিতে পারিবেন না বলিয়াই, তাহার কিঞ্চিৎমাত্র আভাস আমি এই স্থানে প্রদান করিতেছি।
“চুরুটের ছাই অতি অদ্ভুত দ্রব্য। মদ্যের সহিত সেই ছাই মিশ্রিত হইলে যে কিরূপ ভয়ানক নেশা হয়, তাহা বোধ হয়, অনেক মাতালই জানেন। কালীবাবু সেই সুরাপান-অভিলাষী ব্যক্তিগণকে তাঁহাদিগের অজ্ঞাতসারে মদ্যের সহিত সেই ছাই মিশাইয়া খাওয়াইতেন। ইহাতে তাঁহাদিগের অতিশয় নেশা উপস্থিত হইত, তাঁহারা একবারে অজ্ঞান হইয়া পড়িতেন। তখন আমরা উভয়ে তাঁহাদিগের নিকট যাহা কিছু থাকিত, সমস্তই অপহরণ করিয়া তাঁহাদিগকে বাড়ীর বাহির করিয়া দিতাম। তখন তাঁহারা অচেতন অবস্থায় পথে দুই এক পদ অগ্রসর হইলেই পড়িয়া যাইতেন; এবং পরিশেষে পুলিস কর্ত্তৃক থানায় নীত হইয়া আপন আপন পাপের পরিণাম ফল দর্শন করিতেন। ভদ্রলোকের সন্তান