তথাপি বিবাহের পর আরও দুই তিন দিবস আমাদিগের বাড়ীতে অবস্থান পূর্ব্বক আরও যাহা কিছু পাইলেন, তাহা গ্রহণ করিয়া আমাকে আমার পিতৃভবনে রাখিয়া আপন দেশাভিমুখে প্রস্থান করিলেন। দুই তিন বৎসর আর তাঁহার কোন সন্ধানই পাইলাম না। চারি বৎসর পরে একদিন শুনিতে পাইলাম যে, আমার স্বামী অসিয়ছেন। সেই বৃদ্ধ স্বামীর সন্নিকটে গমন করিতে আমার প্রবৃত্তি হইল না, দূর হইতে তাঁহাকে একবার দেখিলাম মাত্র; কিন্তু চিনিতে পারিলাম না। বাড়ীতে থাকিলে, পাছে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে হয়, এই ভয়ে সেই দিবস আমি আমাদিগের বাড়ী পরিত্যাগ করিলাম, এবং আমাদিগের বাড়ীর সংলগ্ন তারা বৈষ্ণবীর বাড়ীতে গিয়া লুকাইয়া রহিলাম। বলা বাহুল্য, রাত্রিকালও তারাদিদির সহিত তাহারই বাড়ীতে কাটিয়া গেল। আমার স্বামীও, কি জানি, কি ভাবিয়া, তাঁহার পাথেয় খরচ বুঝিয়া লইয়া, পরদিবস প্রত্যুষেই আমাদিগের বাড়ী হইতে চলিয়া গেলেন।
“স্বামী আমাদিগের বাড়ী হইতে প্রস্থান করিলে পর, পিতামাতা আমাকে তারাদিদির বাড়ী হইতে ডাকাইয়া আনাইয়া আমাকে সহস্র গালি প্রদান করিলেন, ও পরিশেষে দুই এক ঘা প্রহার করিতেও ক্রটি করিলেন না। রাত্রিবাসের নিমিত্ত তারাদিদি আমাকে তাহার গৃহে স্থান দিয়াছিল বলিয়া, তাহারও অপমানের কিছু বাকী রহিল না। পিতামাতা কর্ত্তৃক এইরূপ অবমানিত হইয়া আমি মনে মনে স্থির করিলাম, আত্মহত্যা করিয়া পিতামাতার দুর্ব্বাক্য হইতে নিষ্কৃতি লাভ করিব; কিন্তু তারাদিদির পরামর্শে তাহা আর করিতে পারিলাম না। কেমন এক মোহিনীশক্তি অবলম্বন করিয়া তারাদিদি আমার মনের গতি ফিরাইয়া দিল। এই সময় হইতে তারাদিদির