পাতা:পুণ্ডরীককুলকীর্ত্তিপঞ্জিকা.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট 86: আক্রমণের কাহিনী হর্ষচরিতে বিবৃত হইয়াছে। হুয়েং চাংএর সময়ে কর্ণসুবর্ণ মধ্যে বৌদ্ধধৰ্ম্মের যথেষ্ট প্রচার ছিল । রাক্ষসীডাঙ্গা প্রভৃতি স্থান বৌদ্ধ মঠের ভগ্নাবশেষ বলিয়া পুরাবিদেরা অনুমান করেন। হুয়েং চাং কর্ণসুবর্ণ রাজ্যে লোচোমোচি নামক স্থানের উল্লেখ করিয়াছেন । লোচোমোচি প্রাকৃত লক্তমত্তি শব্দের অপভ্রংশ। প্রাকৃত লৰ্ত্তমত্তি সংস্কৃত রক্তমৃত্তি হইতে উৎপন্ন । রক্তমৃত্তি বাঙ্গালায় রাঙ্গামাটি । হুয়েং চাংএর সময়ে বৌদ্ধধৰ্ম্ম ক্রমশঃ তান্ত্রিক হিন্দুধৰ্ম্মে পরিণত হইতেছিল। উত্তর রাঢ় প্রদেশে জেমোকান্দির উত্তরে পশ্চিমে ও দক্ষিণে কয়েক ক্রোশের মধ্যে অনেকগুলি প্রসিদ্ধ পীঠস্থানের অবস্থিতি । আর্য্যাবর্তের সৰ্ব্বত্রই এই সময় বৌদ্ধ মঠ সকল শৈব বা শাক্ত মঠে পরিণত হইতেছিল ; বৌদ্ধ দেবমূৰ্ত্তি সকল হিন্দু দেবমূৰ্ত্তির নাম গ্রহণ করিতেছিল। সম্ভবতঃ পাল রাজাদের অস্তিম সময়ে বৌদ্ধ উপাসনা বিকার লাভ করিয়া ধৰ্ম্মপূজাদিতে পরিণত হইতেছিল। ফতেসিংহ প্রদেশে ধৰ্ম্মপূজা অদ্যাপি বিস্তৃতভাবে প্রচারিত আছে। প্রায় প্রত্যেক গ্রামেই বৈশাখী পূর্ণিমায়, কচিৎ বা জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমায় ধৰ্ম্মঠাকুরের পূজা হয়। নিম্ন শ্রেণীর লোকে পরম উৎসাহে ধৰ্ম্মপূজায় যোগ দেয়। ধৰ্ম্মের উপাসনায় যে সকল অনুষ্ঠান প্রচলিত আছে, তাহা নিতান্ত অনার্য্য ও বীভৎস । ডাক্তার ওয়াডেল কর্তৃক বণিত তিববতমধ্যে ও সিকিমমধ্যে প্রচলিত লামাধৰ্ম্মের বিবিধ অনুষ্ঠানের সহিত এই অঞ্চলের ধৰ্ম্মপূজার প্রচলিত অনুষ্ঠান সকলের সাদৃশু বিস্ময়জনক । পাঠান অধিকার কালে এই প্রদেশের দুর্গতি ঘটিয়াছিল বলিয়া বোধ হয় । সেই সময়ে বিস্তর লোক মুসলমান ধৰ্ম্ম আশ্রয় করে । ফতেসিংহে অনেক গ্রাম অদ্যাপি মুসলমানপ্রধান এবং অনেকগুলি ধনবান সম্রান্ত ও সদাচার মুসলমান গৃহস্থের বাস। মুসলমানেরা সৰ্ব্বত্রই হিন্দুর সহিত সদ্ভাবে বাস করেন । চৈতন্যদেব ও তাহার পরবত্তী কালে ফতেসিংহ অঞ্চলে বৈষ্ণবমতের প্রচুর প্রতিষ্ঠা ঘটে । মালিহাটি গ্রামে শ্ৰীনিবাস আচার্য্যের বংশধরেরা বাস করেন। এই বংশের রাধামোহন ঠাকুর পদাযুতসমুদ্রের সঙ্কলনকৰ্ত্তা। পদকল্পতরুর সংগ্রাহক গোকুলানন্দ সেন ও কৃষ্ণকান্ত মজুমদার টেয়াগ্রামের অধিবাসী।