এখন প্রমাণসংগ্রহের চেষ্টা করা সুযুক্তি নহে; যেমনই হউক, বিশ্বাস করাই ভালো। তা ছাড়া রাইচরণ এমন ছেলেই বা কোথায় পাইবে। এবং বৃদ্ধ ভৃত্য তাঁহাকে অকারণে প্রতারণাই বা কেন করিবে।
ছেলেটির সহিতও কথোপকথন করিয়া জানিলেন যে, সে শিশুকাল হইতে রাইচরণের সহিত আছে এবং রাইচরণকে সে পিতা বলিয়া জানিত, কিন্তু রাইচরণ কখনো তাহার প্রতি পিতার ন্যায় ব্যবহার করে নাই, অনেকটা ভৃত্যের ভাব ছিল।
অম্বুকূল মন হইতে সন্দেহ দূর করিয়া বলিলেন, “কিন্তু রাইচরণ, তুই আর আমাদের ছায়া মাড়াইতে পাইবি না।”
রাইচরণ করজোড়ে গদ্গদ কণ্ঠে বলিল, “প্রভু, বৃদ্ধবয়সে কোথায় যাইব।”
কর্ত্রী বলিলেন, “আহা, থাক্। আমার বাছার কল্যাণ হউক। ওকে আমি মাপ করিলাম।”
ন্যায়পরায়ণ অনুকূল কহিলেন, “যে কাজ করিয়াছে উহাকে মাপ করা যায় না।”
রাইচরণ অনুকূলের পা জড়াইয়া কহিল, “আমি করি নাই, ঈশ্বর করিয়াছেন।”
নিজের পাপ ঈশ্বরের স্কন্ধে চাপাইবার চেষ্টা দেখিয়া অনুকূল আরো বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “যে এমন বিশ্বাসঘাতকতার কাজ করিয়াছে তাহাকে আর বিশ্বাস করা কর্তব্য নয়।”
রাইচরণ প্রভুর পা ছাড়িয়া কহিল, “সে আমি নয়, প্রভু।”
“তবে কে।”
“আমার অদৃষ্ট।”
কিন্তু এরূপ কৈফিয়তে কোনো শিক্ষিত লোকের সন্তোষ হইতে পারে না।
রাইচরণ বলিল, “পৃথিবীতে আমার আর কেহ নাই।”
ফেল্না যখন দেখিল, সে মুন্সেফের সন্তান, রাইচরণ তাহাকে