পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV) ভারতবর্ষ। মেণ্ডল উপকূলের অভিজ্ঞতার বিষয় যথাযথ লিপিবদ্ধ আছে। কথিত হয়, সেই নাবিক বহুকাল ‘বারিগাজায়’ ( বরেীচে ) অবস্থান করিয়াছিলেন। ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সম্বন্ধে টলেমির ভূগোল এবং ‘পেরিপ্লাস’ গ্ৰন্থ বিশেষ প্রামাণ্য এবং পাশ্চাত্য-জাতির নিকট আদরণীয়। সুতরাং ঐ দুই গ্রন্থে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের যে পরিচয় দেখিতে পাই, পরবর্তী অংশে তদ্বিষয় আলোচনা করিতেছি। 谤 ‘পেরিপ্লাসে” বন্দরের পরিচয় । ‘পেরিপ্লাসের’ মতে, “বরেীচ’ পশ্চিম ভারতের একটী সর্বপ্রধান বাণিজ্য-কেন্দ্র। সেখান হইতে ভারতবর্ষের অভ্যন্তরে, বিভিন্ন স্থানে বৈদেশিক পণ্য-সমূহ সংবাহিত হইত। ‘পেরিপ্লাস।” গ্রন্থে ‘পৈথান” ও “টগর” নামক আর দুইটী বাণিজ্য-কেন্দ্রের পরিচয় পাওয়া যায়। সে মতে ‘পৈথান’-বারিগাজার দক্ষিণে অবস্থিত। “বারিগাজা’ হইতে ‘পৈথান’ পৌছিতে প্ৰায় কুড়ি দিন লাগিতা। ‘টগরের” অবস্থান তখন ‘পৈথানের” পশ্চিম দিকে নির্দিষ্ট হইত। ‘পৈথান’ হইতে টেগরে” পৌছিতে দশ দিন লাগিতা। পৈথান বা পিথােন—অধুনা নিজাম-রাজ্যের অন্তর্গত ধাড়াব’ নামক স্থানে চিহ্নিত হয়। ঐ দুই বন্দর হইতে বহু পরিমাণ মণি-মাণিক্য, মসলিন, তুলা ও বিবিধ পণ্য বরেীচ’ বন্দরে সংবাহিত হইয়া বিদেশে-ইউরোপ প্ৰভৃতি পাশ্চাত্য-দেশে রপ্তানি হইত। ‘পেরিপ্লাসে’ আর আর যে সকল সমুদ্রতীরস্থ বন্দবের উল্লেখ আছে, তন্মধ্যে “সৌপ্লারি’, কল্লিয়েনা, সে মুল্লা, মাণ্ডাগোড়া, পালাই, পাতামাই, মেলিজেইগড় প্রভৃতি বিশেষ প্ৰসিদ্ধিসম্পন্ন। সৌগ্লার-বোম্বাই প্রেসিডেন্সীর বেসিন বন্দরের সন্নিকটে ‘সুপার’ নামক স্থানে চিহ্নিত হয়। ‘পেরিপ্লাসে’ বর্ণিত ‘কল্লিয়েনা” বর্তমান “কল্যাণ” সহর বলিয়া প্ৰতিপন্ন হইতেছে। কল্যাণসহর এক সময়ে বাণিজ্যের কেন্দ্ৰস্থান ছিল। কেনাড়ির এবং জুন্নারের গহবরাভ্যন্তরে খোদিত লিপিতে র্যাহাদের দানের বিষয় উল্লিখিত, তঁাহারা কল্যাণের অধিবাসী বাণিজ্য-ব্যবসায়ী বলিয়া পরিচিত। “সেমুল্লা” বন্দরকে কেহ বা ‘চেম্বার’, কেহ বা ‘মৌল’ বলিয়া অনুমান করেন। মাণ্ডাগোড়া-বর্তমান মান্দাদ। “পালইপাতামাই’ বন্দর কাহারও কাহারও মতে ‘মহাদেবের নিকটবৰ্ত্ত ‘পাল’-বন্দর বলিয়া সিদ্ধান্তিত হয়। ‘মেলিজেইগড়’ অধুনা “জয়গড়’ নামে পরিচিত । উত্তর ভূভাগের এই সকল বন্দর ব্যতীত, দক্ষিণ ভূভাগে তিনটী প্ৰধান বন্দরের উল্লেখ ‘পেরিপ্লাস’ গ্রন্থে পরিদৃষ্ট হয়। সেই তিনটী বন্দরের নাম-“টিণ্ডিস, মুজিরিস, নিলকিণ্ড।’ এই বন্দরত্রয় হইতে পিপ্পল, মশলা, মুক্তা, গজদন্ত্র, সুন্ন মসৃণ, রেশম এবং হীরক, পান্না, চুনি প্রভৃতি বহুমূল্য প্রস্তরাদি বিদেশে রপ্তানি হইত। এতদ্ভিন্ন হিন্দু-বণিকগণের বাণিজ্য-পোত-সমূহ পূৰ্ব-আফ্রিকায়, আরবের ও পারম্ভের বন্দরসমূহে সৰ্ব্বদা গতিবিধি করিত ;-সকোত্ৰী-দ্বীপের উত্তর উপকূলে হিন্দুবণিকগণ উপনিবেশস্থাপন করিয়াছিলেন,-“পেরিপ্লাস’ গ্রন্থে এ সকলেরও উল্লেখ আছে। প্রকৃতপক্ষে ‘পেরিপ্লাস’ গ্ৰন্থ রচনা-কালে বারিগাজার বণিকগণ আরব হইতে গাঁদ ও সুগন্ধ