পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ هg$ কসমাসের সাক্ষ্য । প্লিনি, টলেমি এবং পেরিপ্লাস প্রভৃতির পর, ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসঙ্গ ‘কসমাস ইণ্ডিকোপ্লিউষ্ট্রেসের’ ‘ক্রিষ্টিয়ান টপোগ্রাকি? গ্রন্থে পরিদৃষ্ট হয়। ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যাদি সম্বন্ধে কসমাস যে মত ব্যক্ত করিয়াছেন, এতৎপ্রসঙ্গে তাহ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। নিয়ে তাহার আভাস প্ৰদান করিতেছি। কসমাস রোম-দেশীয় একজন প্ৰসিদ্ধ বণিক ছিলেন। রোম-সম্রাট দ্বিতীয় জাষ্টিনিয়ানের রাজত্বকালে তিনি বাণিজ্য ব্যপদেশে আফ্রিকার ‘ইথিত্তপিয়া’ প্রদেশে, ‘আডুল” বন্দরে গমন করেন। তখন ঐ বন্দর “আকসুমের’ রাজার অধিকারভুক্ত ছিল । বন্দরের সমৃদ্ধির অবধি ছিল না। প্ৰকাশ,-৫৬০ খৃষ্টাব্দে কসমাস আভুল বন্দরে গমন করিয়াছিলেন। কসমাসের গ্রন্থে সে সময়ের খৃষ্টধৰ্ম্মাবলম্বিগণের বসতি-স্থানের উল্লেখ ছিল। কসমাস যে সকল বাণিজ্য-বন্দরের নাম উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন, তন্মধ্যে নিম্নোক্ত বাণিজ্য-বন্দরগুলি সবিশেষ প্ৰসিদ্ধিসম্পন্ন। কসমাস সৰ্ব্বপ্রথম মালা বা মালবার বন্দরের নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ঐ বন্দর তখন লঙ্কা ব্যবসায়ের জন্য প্ৰসিদ্ধ ছিল। মালা ভিন্ন আরও পাচটী বন্দরে লঙ্কা রপ্তানি হইত। সে পাঁচটী বন্দর,-পুড়ডোপাটনা, নালোপাটনা, সালোপাটনা, মাঙ্গারুথ, পাট। এই পাঁচটী এবং আরও কয়েকটী বন্দর ভারতের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। ঐ বন্দর ভিন্ন ‘সুরাট’ বন্দর এবং “কল্লিয়েন’ বা কল্যাণ বন্দর ও সিবর প্রভৃতিও তখন প্ৰতিষ্ঠা-সম্পন্ন ছিল। কোনও কোনও মতে বােম্বাই বন্দরই কল্যাণ নামে অভিহিত হইত। দেবল-রাজ্য ও “সুবহেট” হইতে কসমস লঙ্কাদ্বীপে বাণিজ্য-পোত যাইতে দেখিয়াছিলেন। তিনি লঙ্কা দ্বীপকে “সেবেণী-দ্বীপ’’ বলিতেন। তখন সেরেণ-দ্বীপ প্ৰাচ্য ও পাশ্চাত্য বাণিজ্যের কেন্দ্ৰস্থল ছিল। তখন লঙ্কা-দ্বীপ হইতে এক দিকে চীনদেশে এবং অন্য দিকে লোহিত্য-সাগরে ও পারস্য উপসাগরে পণ্যবাহী অর্ণবপোত-সমূহ গতিবিধি করিত। তখন চীনের সহিতও ভারতের বাণিজ্য চলিতেছিল। সে বিষয় কসমাস ভিন্ন পাশ্চাত্যদেশের কোনও গ্ৰন্থকার উল্লেখ করেন নাই। কসমাসের পর, মার্কে পোলো । তাহার অভিমত পণ্ডিতগণ প্রামাণ্য বলিয়া গ্ৰহণ করেন। মার্কোপোলোর গ্ৰন্থ ফরাসী-ভাষায় লিখিত। নানা ভাষায় ঐ গ্রন্থের অনুবাদ হইয়াছে। প্তাহার গ্রন্থেও বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারতের অশেষ সমৃদ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। এইরূপ পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধানে বুঝা যায়, যেমন বহির্বাণিজ্যে, তেমনই অন্তৰ্বাণিজ্যে ভারত কৃতিত্বের পরাকাষ্ঠী প্রদর্শন করিয়াছিল। বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন জনপদে ভারতীয় বণিকগণের উপনিবেশ স্থাপন-সে কেবল ভারতের প্রতিষ্ঠা-গৌরবেরই পরিচায়ক। ফলতঃ, যে ভাবে যে দিক দিয়াই দেখি, সর্বত্রই ভারতের শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন বৰ্ত্তমান । উপসংহারে বক্তব্য। f প্রতীচ্যের সহিত প্রাচ্যের এই বাণিজ্য-ব্যাপারে উভয়ের মধ্যে এক অপূৰ্ব্ব রাজনৈতিক সম্বন্ধের সুত্রপাত হয়। ষ্ট্রাবোর গ্রন্থে ২০ পুৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দে, অগাষ্টাস সিজারের দরবারে ভারতীয়