পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্তর্বাণিজ্যে প্ৰতিষ্ঠা। YRA হইয়াছিল;-প্ৰাকৃতিক অবস্থানে জগতের সহিত সম্বন্ধ-শূন্য হইয়াও, প্ৰতি নগর-জনপদে ভারত নৈকট্য স্থাপনে সমর্থ হইয়াছিল। ইতিহাসের চিত্রপটে সে আলেখ্য উজ্জল হইয়া আছে। তখন দুর্ভেদ্য গিরিবক্ষ, বিদীর্ণ হইয়া পথ প্ৰস্তুত করিয়া দিয়াছিল ; তরঙ্গায়িত মহাসমুদ্র তালে তালে নৃত্য করিয়া ভারতের অর্ণবষযান-সমূহ নাচাইয়া চলিয়াছিল ;-তাহার উগ্ৰ মূৰ্ত্তি প্ৰশান্ত ভাব ধারণ করিয়াছিল। তখন একদিকে যেমন ধৰ্ম্মের বিজয়-বৈজয়ন্তী উডডীন হইয়াছিল; অন্যদিক তেমনি তাহার ধন-সমৃদ্ধির অবধি ছিল না। 米 棒 ভারতে খাদ্য-শস্যের রপ্তানি বন্ধ । এখন দুৰ্ভিক্ষ-মহামারী ভারতের নিত্য-সহচর। কিন্তু সেকালে ভারতে তাহদের অস্তিত্ব পৰ্যন্ত ছিল না। পুরাতত্ত্বে প্ৰকাশ,-তখন ভারতবাসী “দুৰ্ভিক্ষ’ নামটী পৰ্যন্ত জানিত না। ভারতের সে সমৃদ্ধির মূলে অক অভিনব নীতির ক্রিয়াশক্তি বৰ্ত্তমান ছিল। সে নীতিভারত হইতে তখন খাদ্য-শস্তের এবং পরিধেয় বস্ত্রের রপ্তানি হইত না । যদিও কেহ কখনও সে নীতির লঙ্ঘনে প্রলোভিত হইত ; রাজকীয় বিধানে, তাহাকে উপযুক্ত পরিমাণ-স্থলবিশেষে তাহারও অধিক-খাদ্য ও পরিধেয় প্রভৃতি গৃহে সংরক্ষণ করিতে হইত। তখন ভারত বিলাস-সামগ্রীর বিনিময়ে আহাৰ্য্য বা বস্ত্ৰ কদাচ প্ৰদান করে নাই। তখন স্বদেশীয়তায় ভারতবাসী অনুপ্ৰাণিত ছিল ; “স্বধৰ্ম্মে’ মতিমান থাকিয়া স্বদেশের স্বজাতির উন্নতিকল্পে ভারতবাসী তখন উদবুদ্ধ হইয়াছিল ;-“সংরক্ষণ-নীতি” অবলম্বনে দেশের সামগ্ৰী দেশে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করিয়াছিল! তাই ভারত তখন সমৃদ্ধির উচ্চ-চুড়ায় সমাসীন হইয়াছিল। ভারতের এই আদর্শ-নীতির পরিচয়-‘পেরিপ্লাস’ গ্রন্থে প্ৰাপ্ত হই । সেখানে ভারতের রপ্তানি দ্রব্যের বিবরণ দেখিতে পাই। গ্ৰন্থকার সেখানে এই অভিনব তত্ত্বের সন্ধান প্ৰদান করিয়াছেন। ভারতীয় রপ্তানি দ্রব্যের মধ্যে গ্ৰন্থকার খাদ্য-শস্য বা পরিধেয় বস্ত্ৰাদি প্ৰত্যক্ষ করেন নাই। তাই তাহার সিদ্ধান্ত-ভারত তখন ঐ সকল সামগ্ৰী বিদেশে প্রেরণ করিত না। “আত্ম-রক্ষার’ মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হইয়াছিল বলিয়াই ভারত সে-কালে দুৰ্ভিক্ষ-মহামারীর নিষ্পেষণে নিম্পেষিত হয় নাই। কিন্তু একবার বর্তমান অবস্থা ভাবিয়া দেখুন। এখন ভারত তুচ্ছ অর্থের লোভে আপনার মুখের গ্ৰাস পরকে তুলিয়া দিয়া পরমুখাপেক্ষী প্রার্থী হইয়া দণ্ডায়মান। এখন কোথায় তাহার সে সমৃদ্ধি -কোথায় তাহার সে গৌরব-গরিমা । ভারতের এই সনাতন নীতি ভারতবাসী যদি অনুসরণ করিতে উদবুদ্ধ হয়, সুদিন ফিরিয়া আসিবার সম্ভাবনা। ভারত তাহার সনাতন নীতিসুত্র হারাইয়াছে-স্বধৰ্ম্মে আস্থাহীন হইয়া বিপথগামী হইয়াছে—তাই তাহার এই অধঃপতন । ফলতঃ, ভারতের এই রাজনীতি-খাদ্যশস্তের সংরক্ষণ-ভারতবাসীর শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক জ্ঞানের এবং দূরদর্শিতার পরিচায়ক, সন্দেহ নাই। আজি যে পাশ্চাত্য-দেশে ‘প্ৰটেকশন” বা সংরক্ষণ-নীতির প্রবর্তন দেখি, তাহাতে ভারতের সেই সনাতন নীতিরই অনুসরণ প্রত্যক্ষ করি। তাই মনে হয়,-ভারতই সকল দেশের সকল জাতির-সকল উন্নতির সকল