পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sv)) ভারতবর্ষ । নদীর গতিরোধ করিয়া “সুদৰ্শন হ্রদ’ প্ৰভৃতি সুরম্য সরোরুরাদি নিৰ্ম্মাণ মৌৰ্য-সমাট-গণের অশেষ কীৰ্ত্তির পরিচায়ক। ১৫০ খৃষ্টাব্দে ঐ সরোবরের তীরদেশ এবং তৎসংলগ্ন পয়ঃপ্ৰণালী ধ্বংসমুখে পতিত হয়। ফলে প্ৰজাগণ পীড়িত হইয়া পড়ে। শক-নৃপতি সাত্রাপ রুদ্ৰদমন তাহার সংস্কার-সাধন করেন। সেখানে এক লিপি উৎকীর্ণ হয় ৷৷ ৪৫৮ খৃষ্টাব্দে পুনরায় বঁাধ ভাঙ্গিয়া যায়। স্কন্দগুপ্তের অধীনস্থ রাজকৰ্ম্মচারী পুনরায় তাহার সংস্কার করেন । রাজ্যের সুদূর সীমান্ত-প্রদেশে পয়ঃপ্রণালী-সংরক্ষণের এইরূপ সুব্যবস্থা দৃষ্ট মনে হয়, তৎকালে জলসেচন ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে রাজকীয় শ্রেষ্ঠ বিধিবিধান প্ৰবৰ্ত্তিত হইয়াছিল। এবং রাজ্যের সর্বত্র পয়ঃপ্ৰণালী বিধানে ভারতীয় নৃপতিগণ বিশেষ যত্নপর ছিলেন। ফলতঃ, ভারতের নৌ-বিভাগ, ভারতের সৈনিক-বিভাগ, ভারতের বাণিজ্য-বিভাগ, ভারতের পণ্য-বিভাগ ; অপিচ, ভারতের সাহিত্য, ভারতের শিল্প, ভারতের স্থাপত্যসকলই সভ্য-সমুন্নত জাতির শ্রেষ্ঠ সভ্যতার পরিচায়ক। 物 汰 প্ৰাচীন ভারতে স্বায়ত্ত-শাসন । সমাজ-ব্যবস্থাও ভারতের অল্প কৃতিত্বের নিদর্শন নহে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গণ্ডগ্রামে নানা শ্রেণীতে বিভক্ত হইয়া ভারতের অধিবাসীবা বসবাস করিতেন,-প্ৰমাণ পাওয়া যায়। পল্লী অপেক্ষা ‘কারবাট বৃহৎ, আবার কারবাটা হইতে ‘নগর’ বৃহৎ। পল্লীসমূহের মধ্যও আবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভাগ ছিল । রাজা রাজকর গ্ৰহণ কবিয়াই সন্তুষ্ট থাকিতেন । যতক্ষণ পৰ্য্যন্ত গ্রামবাসীরা রাজকর অৰ্পণ করিতেন, রাজা কোনও বিষয়েই হস্তক্ষেপ করিতেন না। পল্লীর বিবাদ-বিসম্বাদ পল্লীবাসীই মিটাইয়া লইতেন। প্ৰধানগণের মধ্যস্থতায় বিবাদের মীমাংসা হইত। পল্লীর সমাজ, পল্লীর স্বাস্থ্য, পল্লীর অর্থ-সকল বিষয়ের সকল উন্নতির ভার পল্লীর উপরই ন্যস্ত ছিল। পাশ্চাত্য গ্রন্থেই সে পরিচয়ু প্রাপ্ত হই। ফলতঃ, তৎকালে ভারতের প্রতি পল্লীতেই স্বায়ত্ব-শাসন-প্ৰথা প্ৰবৰ্ত্তিত ছিল । তখন একান্নভুক্ত-পরিবার-প্রথা দৃঢ় রূপে প্রতিষ্ঠিত। স্বতন্ত্রভাবে থাকিবার চেষ্টা করিলে, তিনি সমাজে তিরস্কৃত হইতেন। ‘এজমালী” সম্পত্তির কোনও অংশ কোনও ভ্রাতা বিক্রয় করিবার ইচ্ছা করিলে, “তঁহাকে প্রথমত: অপর ভ্রাতার অনুমতি গ্রহণের আৱশ্যক হইত। ফলতঃ, একের অনিচ্ছাক্রমে অপর ভ্রাতা ভূ-সম্পত্তি হস্তান্তর করিতে পারিতেন না। আধুনিক "r-et-startetri' ( Low of Pre-emption) (2iSir ভারতের এই প্রথারই অনুবন্ত্ৰী । কৃষি-বাণিজ্য এ সময়ে বিশেষ সমৃদ্ধিসম্পন্ন ছিল, পূর্বেই তাহ প্ৰদৰ্শিত হইয়াছ। অভিন্ন, বয়নশিল্পের সমৃদ্ধির পরিচয়-“মসলিন” প্রভৃতি বিদেশে রপ্তানি হওয়ার দৃষ্টাস্তে দেদীপ্যমান। মসলিনের ন্যায় সুন্ম তন্তুশিল্প পৃথিবীর কোথাও পরিদৃষ্ট হয় না। দেশ কিরূপ সভ্য-সমুদ্রত হইলে, মসলিনের ন্যায় সুন্ম কারুশিল্প প্ৰচলন হওয়া সম্ভবপর, তাহ সহজেই উপলব্ধ হয়। তখন এত সুন্ম কার্পাস-বস্ত্ৰাদি প্ৰস্তুত হইত যে, গ্ৰন্থাদিতে সেই সকল বস্ত্ৰ সৰ্পের খোলসের সহিত উপমিত হইয়াছে।