পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ । سریر ফাগুসনের এই সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে বিশেষ মতান্তর দেখি না। তবে তিনি যে কনিক্ষ কর্তৃক শকাব্দ প্রতিষ্ঠার বিষয় উল্লেখ করিয়াছেন, তৎসম্বন্ধে পণ্ডিতগণের মতানৈক্য পরিদৃষ্ট হয়। ফাগুসন আরও বলেন,-থুষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে এবং তাহার পরও বহুদিন পৰ্যন্ত বিক্রমাব্দসুচনার পরিচয় পাওয়া যায় না। সুতরাং রাজা বিক্রমের সহিত পূৰ্বোক্ত “বিক্রম-সংবতের” সম্বন্ধ-খ্যাপন কোন ক্রমেই সমীচীন নহে। রাজ-তরঙ্গিণীর আলোচনা । এদিকে “রাজতরঙ্গিণী” গ্রন্থের আলোচনায় আর এক তথ্য অবগত হই। ‘রাজতরঙ্গিণী” গ্রন্থে ‘প্রতাপাদিত্য” নাম পরিদৃষ্ট হয়। প্রতাপাদিত্যের সম্বন্ধে সেখানে লিখিত আছে,- প্ৰতাপাদিত্য-বিক্ৰমাদিত্যের আত্মীয়। কাশ্মীরের সিংহাসনে প্ৰতিষ্ঠিত করিবার জন্য বিদেশ হইতে প্ৰতাপাদিত্যকে আনয়ন করা হইয়াছিল। সেই বিক্ৰমাদিত্যকেই অনেকে ভ্রমবশতঃ ‘শকারি’ বলিয়া মনে কারিত ! ‘রাজতরঙ্গিণী” গ্রন্থে আরও দেখি,-কাশ্মীর-রাজ হিরণ্য। যখন লোকান্তর গমন করেন, তখন বিক্ৰমাদিত্য নামক জনৈক প্রতাপান্বিত নৃপতি উজ্জয়িনীতে রাজত্ব করিতেন। তাহার অপর নাম-হর্ষ। প্ৰকাশ,-তিনিও শকদিগের উচ্ছেদ সাধন করিয়াছিলেন। কিন্তু আলবারুণির সিদ্ধান্তে বুঝা যায়,-“সংবৎ’ প্ৰতিষ্ঠার ১৩৫ বৎসর পরে বিক্ৰমাদিত্য শকদিগকে পরাজিত করেন। আলবারুণিব মতে, কারুরের যুদ্ধে শকদিগের উচ্ছেদ-সাধন প্রসঙ্গে যে বিক্ৰমাদিত্যের নাম উল্লিখিত হয়, তিনি উজ্জয়িনীর হর্ষ বিক্ৰমাদিত্য ।। ৫৪৪ খৃষ্টাব্দে কারুরের যুদ্ধ হয়, আর ৫৫০ খৃষ্টাব্দে বিক্ৰমাদিত্য পরলোকগমন করেন। ইহাতে ফাগুসনের পূৰ্বোক্ত মন্তব্যের সহিত বিশেষ অসামঞ্জস্য হইয়া পড়ে। যাহা হউক, এই প্রসঙ্গে ফাগুসন আরও বলেন,-১০০০ খৃষ্টাব্দে, বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের লোপের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুধৰ্ম্মের গৌরব প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন হিন্দুগণ অভিনব পদ্ধতিতে কাল-গণনার প্ৰয়াসী হন । হিন্দুগণ কনিক্ষ-প্রতিষ্ঠিত “শাক-সংবতের” হিসাবে কালগণনার নানা অসুবিধা প্ৰদৰ্শন করেন। সুতরাং সে পদ্ধতি পরিবর্জিত হয়। তঁহারা তখন বিক্ৰমাদিত্যের নামে কাল-গণনা সুচনা করেন। সে সময় এই নবনির্বাচিত কালের প্রারম্ভ ও সুচিত হয়, তখন গুপ্ত ও বল্লভী রাজবংশের চিহ্ন পৰ্যন্ত বিলুপ্ত হইয়াছে। * আধুনিক নৃপতির সম্বন্ধ সুচনায় তাহাদের প্রবৃত্তি হয় না। সেইজন্য হিন্দুগণ কারুরের যুদ্ধের (৫৪৪ খৃষ্টাব্দের) প্ৰায় ছয় শত বৎসর পূর্বে এক কালের সুচনা ধরিয়া লন এবং ৫৬। পূৰ্ব্ব-ধৃষ্টাব্দে বিক্রম-সংবতের প্রারম্ভ স্থির করেন। তার পর, বিক্রম-সংবতের নামও পরিবৰ্ত্তিত হয়। তখন তাহার নাম হয়-হৰ্ষ-সংবৎ। । ফলতঃ, ফাগুসন প্ৰধানতঃ রাজতরঙ্গিণীর” কাল অবলম্বনে আপনার মতের সমর্থনে প্ৰয়াস পাইয়াছেন। কিন্তু তাহা সৰ্ব্বথা পরিগ্ৰহণী-যোগ্য নহে। প্রত্নতত্ত্ববিদগণের মতে রাজতরঙ্গিণীতে যে কাল-পরিমাণ নির্দিষ্ট আছে, তাহা প্ৰমাণসাপেক্ষ। কারণ, উজ্জয়িনীর হর্ষ-বিক্ৰমাদিত্যের কাল-নিরূপণে যদি কাশ্মীরের হিরণ্যের বিদ্যমান