পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্র-গুপ্ত। S8 নির্বাচন সার্থক হইয়াছিল। সমুদ্র-গুপ্ত পিতৃন্তান্ত বিশ্বাসের অপলাপ করেন নাই। পরন্তু অক্ষরে অক্ষরে তাহার সার্থকতা সম্পাদন করিয়াছিলেন। রাজনৈতিক, সমাজনৈতিক, অর্থনৈতিক-বিবিধ উন্নতি-সাধনে সমুদ্র-গুপ্ত ভারত-সাম্রাজ্যকে যে শ্রেষ্ঠ পদবীতে প্ৰতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন, তাহার তুলনা নাই। ভারতের ইতিহাসে তাই সমুদ্র-গুপ্ত শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করিয়া আছেন। সমুদ্র-গুপ্ত যে রাজ্যের অধিপতি হইয়াছিলেন, তেমন সমৃদ্ধি-সম্পন্ন বিশাল সাম্রাজ্য তাহার পূৰ্ব্বে ভারত বহুদিন প্রত্যক্ষ করে নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সমুদ্র-গুপ্তের দিগ্বিজয়। সিংহাসনে অধিয়োহণ করিয়া সমুদ্র-গুপ্তের বিজয়লিপস বলবতী হইয়া উঠিল। বহুকালের সঞ্চিত আশা-আকাঙ্ক্ষা । পিতার বর্তমানে সে আকাঙ্ক্ষণ-পূবণেব সুযোগ ঘটে নাই। তাই সিংহাসন-লাভ করিয়াই সমুদ্র-গুপ্ত দিগ্বিজয়ে মনোনিবেশ কবিলেন। রাজ্য-জয়েই রাজশক্তির পরীক্ষা। দেশ-বিজয়েই শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব নিৰূপিত হয় । সমুদ্র-গুপ্ত বুঝিয়াছিলেন,-দিগ্বিজয়ী না হইলে, রাজ-সন্মান প্রতিষ্ঠিত হয় না। তাই তিনি সিংহাসন লাভ করিয়াই দিগ্বিজয়ে মনোনিবেশ করিয়াছিলেন। ফলে, পারিপাশ্বিক নৃপতিগণ তাহার অধীনতা পাশে আবদ্ধ হইয়াছিল। সিংহাসনাধিরোহণের পর বহুদিন পৰ্য্যন্ত তিনি যুদ্ধ-বিগ্ৰহে লিপ্ত ছিলেন। সেই উপলক্ষে সমগ্ৰ উত্তর ভারত র্তাহার বশ্যতা স্বীকার করিয়াছিল। 事 দিগ্বিজয়েব পরিচয় । সমুদ্র-গুপ্তের দিগ্বিজয়ের বিশদ চিত্ৰ-এলাহাবাদের স্তম্ভ-গাত্রে অঙ্কিত দেখি। প্ৰায় ছয় শত বৎসর পূর্বে, মৌৰ্য-সম্রাট অশোক ঐ স্তম্ভ নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। স্তম্ভ-গাত্ৰে ভঁাহার অনুশাসন-সমূহ ক্ষোদিত ছিল। এলাহাবাদের সেই স্তম্ভ-গাত্রেই সমুদ্র-গুপ্তের দিগ্বিজয়ের লিপি উৎকীর্ণ হইয়াছিল। যুদ্ধের অবসানে, দিগ্বিজয়ের স্মৃতি-সংরক্ষণে, সমুদ্র-গুপ্ত বিশেষ উদ্বিগ্ন হইযা পড়েন। সংস্কৃতভাষাভিজ্ঞ একজন পণ্ডিতের উপব সেই দিগ্বিজয়-কাহিনী-বর্ণনের ভার অর্পিত হয়। সমুদ্র-গুপ্ত খাটি হিন্দু ছিলেন ; ধৰ্ম্ম-শাস্ত্ৰে তাহার অশেষ পারদর্শিতা ছিল। ধৰ্ম্মে সমদৰ্শন-নীতি-ৰ্তাহার রাজনীতির মূল সুত্ৰ হইলেও, তিনি অশোকের প্রতিষ্ঠিত স্তম্ভ-গাত্রেই সে দিগ্বিজয়-কাহিনী-সে নরশোণিত-প্রবাহের চিত্ৰ-সন্নিবিষ্ট করিয়াছিলেন। স্তম্ভের এক দিকে অশোকের লিপি-“অহিংসা পরমোধিৰ্ম্ম” বিঘোষিত করিতেছিল ; অন্য দিকে সমুদ্র-গুপ্তের লিপিতে জীঘাংসা-নীতির বিজয়োচ্ছাস ব্যক্ত করিতে লাগিল। সমুদ্র-গুপ্তের উদ্যম ব্যর্থ হয় নাই। তঁহার পরিশ্রম সাৰ্থক হইয়াছিল। তাই আজি আমরা তঁহার রাজ্য-বিজয়ের প্রকৃত অ্যালেখ্যের সন্ধান পাইয়াছি। এলাহাবাদের সে স্তম্ভ লক্ষুদ্রগুপ্তের বিজয়-স্মৃতি বক্ষে ধারণ করিয়া, আজ পৃথিবীর প্রতি কেন্দ্রে ভারতের শ্রেষ্ঠত্ব বিঘোষিত করিতেছে। কাল-পরিমাণ নির্দিষ্ট না থাকিলেও খৃষ্ট-জন্মের ৩৬২ বৎসর পরে সে লিপি উৎকীর্ণ