পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SGtS ভারতবর্ষ। সমতট এবং কামরূপের মধ্যবৰ্ত্তী স্থানে ডবাকের অবস্থান নির্দিষ্ট হয়। সে মতে, বগুড়া, দিনাজপুর এবং রাজসাহী উহার অন্তর্গত বলিয়া বুঝা যায়। নেপাল এবং কামরূপের অবস্থান বিষয়ে কোনও মতান্তর নাই। হিমালয়-শৈলশ্রেণীর পাদদেশে পশ্চিম দিকের ভূভাগ একত্রীপুর’ নামে অভিহিত হইত। কুমায়ূন, আলেমোরা, ঘাড়োয়াল এবং কাঙ্গড়া প্ৰভৃতি ঐ অংশেৱ অন্তভূক্ত। এ হিসাবে সমুদ্র-গুপ্তের রাজ্যের উত্তর-পশ্চিমের সীমানা যমুনা-নদী নির্দিষ্ট হয়। উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে, পাঞ্জাবে, যৌধেয় এবং মদ্রকগণ, দক্ষিণে মালব, অৰ্জ্জুনিয়ন এবং আভিরগণ, সমুদ্র-গুপ্তের প্রাধান্য স্বীকার করিয়াছিল। প্রার্জন, সনকানিক, কক, খরপারিক প্রভৃতি রাজ্যও তাহার অধিকারে আসিয়াছিল। সুতরা সিন্ধু নদের চন্দ্ৰভাগা পৰ্যন্ত সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যসীমা বিস্তৃত হইয়াছিল, বুঝা যায়। প্রত্নতত্ত্ববিদগণের নির্দেশে যৌধেয়-রাজ্য শতদ্রুর উভয় পাশ্বে অবস্থিত। পাঞ্জাবের মধ্যভাগ —মদ্রক নামে অভিহিত। অর্জনায়ন, মালব এবং আভীরগণ রাজপুতানা এবং মালবের অধিবাসী । এ হিসাবে চম্বল বা শম্বর নদী গুপ্ত-সমাজ্যের দক্ষিণ-দিকের সীমানা নির্দিষ্ট হয়। 神 棒 অন্যান্য নৃপতিবৃন্দ । সমুদ্র-গুপ্তের রাজ্য-সীমা এইরূপে বহুদূর পর্য্যন্ত বিস্তৃত হইয়াছিল। পূর্বে গঙ্গার ব-দ্বীপ, পশ্চিমে যমুনা ও চম্বল ( শম্বর ), উত্তরে হিমালয় এবং দক্ষিণে নিৰ্ম্মদ-এই সীমা বেষ্টনের অন্তবৰ্ত্তী উষর ভূমিখণ্ড সমুদ্র-গুপ্তের নিজ শাসনাধীনে ছিল। এতদ্ভিন্ন, সীমান্তবৰ্ত্ত আসাম ও গঙ্গার ব-দ্বীপ, হিমালয়ের অন্তৰ্ব্বৰ্ত্তী সমতলভূমি তাহার রাজ্যের অন্তভুক্তি ছিল। মালব ও রাজপুতানার স্বাধীন জাতি এবং দক্ষিণ-ভারতের যাবতীয় নগরজনপদ, সমুদ্র-গুপ্তের প্রাধান্য-স্বীকারে রাজকর প্রদানে বাধ্য হইয়াছিল। কেবল ভারতে নহে ; ভারতের বহির্ভাগেও সমুদ্র-গুপ্তের প্রভাব বিস্তৃত হয়। সীমান্তের বহির্ভাগে যাহারা অবস্থিত ছিলেন, সেই দৈবপুত্ৰ, সাহিী, সাহানুসাহী, শক, মুরুও এবং সিংহলের অধিবাসিগণ সমুদ্রগুপ্তের প্রভুত্ব স্বীকাৰ করিয়াছিলেন এবং তঁহার তুষ্টি-সম্পাদনে কেহ বা সুন্দরী রমণী উপহার দিয়াছিলেন, কেহ বা স্বর্ণমুদ্রায় তৃপ্তি-বিধান করিয়াছিলেন । সমুদ্র-গুপ্ত রাজনীতি-বিশারদ ছিলেন। বৈদেশিক নৃপতির সহিত রাজনৈতিক সম্বন্ধ-স্থাপনে মিত্ৰতা-সুত্রে আবদ্ধ হইয়া তাই সাম্রাজ্যের ভিক্তি-ভূমি সুপ্ৰতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। কিন্তু লিপিবৰ্ণিত বৈদেশিক নৃপতিগণকে সমুদ্র-গুপ্ত পরাজিত ও রাজ্যচ্যুত করিয়াছিলেন কিনা, লিপিতে তাহার স্পষ্ট উল্লেখ নাই। চীনাদিগের গ্ৰন্থপত্রে সিংহল-দেশের রাজার সহিত মিত্রতা-স্থাপনের পরিচয়ই প্ৰাপ্ত হই। লিপিতে সিংহলরাজ কর্তৃক উপঢৌকন প্রেরণের বিষয় লিপিবদ্ধ আছে । চীনাদিগের গ্রন্থপত্রে দেখিতে পাই-বুদ্ধগয়ায় বৌদ্ধমন্দির নিৰ্ম্মাণ জন্য সিংহলরাজ সমুদ্রগুপ্তের নিকট দূত প্রেরণ করিয়াছিলেন ; অনুরোধ জানাইয়াছিলেন,-সিংহলাদেশীয় যাত্রীর সুবিধার জন্য তিনি যেন বুদ্ধগয়ায় একটী বৌদ্ধধৰ্ম্মমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সমুদ্র-গুপ্ত, সিংহল রাজের সে অনুরোধ রক্ষা করিয়াছিলেন। লিপিতে সেই বিষয়ই সন্নিবিষ্ট আছে।