পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSSR ভারতবর্ষ । এই উপলক্ষে তিনি আরব-সাগরের উপকূল পৰ্যন্ত অগ্রসর হন। মালব, গুজরাট, এবং সৌরাষ্ট্র দেশ তাহার পদানত হয়। তখন সৌরাষ্ট্রে ক্ষত্রপ-বংশের নৃপতিগণ প্রতিষ্ঠান্বিত ছিলেন। পাশ্চাত্য পণ্ডিত-গণের ভাষায় তাহারা “পশ্চিম-দেশীয় ক্ষত্রপ” ( Western Satraps ) নামে অভিহিত হইয়া থাকেন। মালব এবং সৌরাষ্ট্র সমুদ্র-গুপ্তের রাজ্যান্তভুক্ত হয় নাই। কিন্তু এইবার দ্বিতীয় চন্দ্ৰ-গুপ্ত তাহা গুপ্ত-সাম্রাজ্যের অন্তভূক্ত করিয়া লইলেন। তখন সৌরাষ্ট্র, মালব প্রভৃতি ধন-সম্পদে অশেষ সমৃদ্ধি-সম্পন্ন ছিল। তখন সৌরাষ্ট্র-দেশ বাণিজ্য-ব্যবসায়ে যথেষ্ট সমৃদ্ধ হইয়াছিল। সৌরাষ্ট্র এবং মালব-বিজয়-গুপ্ত-গণের ইতিহাসে এক প্ৰসিদ্ধ ঘটনা। এই দুই রাজ্য অধিকৃত হওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যের পথ প্রশস্ত হয় । তখন সৌরাষ্টের পথে বৈদেশিক বাণিজ্য চলিতেছিল। মিশরের “আলেকজান্দ্ৰিয়া” বন্দরেব মধ্য দিয়া প্রতীচ্যের সর্বত্র ভারতীয় পণ্য রপ্তানি হইতেছিল। সৌরাষ্ট্র প্রভৃতি গুপ্ত-সমাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ভারতের অন্যান্য সকল প্ৰদেশই সে বাণিজ্যের সুবিধা প্ৰাপ্ত হইল। মালব এবং সৌরাষ্ট্রের শক-নৃপতিগণকে পরাজিত করিয়া চন্দ্ৰ-গুপ্ত ( দ্বিতীয় ) সেই প্রদেশে রৌপ্য-মুদ্রা প্ৰবৰ্ত্তন করেন। সেই মুদ্রাব এক দিকে তাহাব প্রতিমূৰ্ত্তি অঙ্কিত হয়। প্রত্নতত্ত্ব বিদগণের মতে, ক্ষত্রপদিগের্ব অনুকাবণে চন্দ্ৰ-গুপ্ত সেই মুদ্ৰা প্রবর্তিত কবিয়ছিলেন । 米 米 ক্ষত্রপদিগের পরিচয় । ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে, সৌরাষ্ট্রে ও মালবে, দুইটী ক্ষত্ৰিপ-বংশের পরিচয় পাই। তঁহাদের একটী শাখা মহারাষ্ট-দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়। পশ্চিম-ঘাট-পৰ্ব্বত-সংলগ্ন নাসিকে তাহদের রাজধানী ছিল ; খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে অন্ধ, রাজ গৌতমীপু ৭ কর্তৃক মহাবাষ্ট্রেব ক্ষত্রপাগণ পরাজিত হন। ১২৬ খৃষ্টাব্দে তাহদের বাজ্য অন্ধ-বাজ্যোব অন্তর্ভুক্ত হইয়া যায়। দ্বিতীয় ক্ষত্রপ-বংশ চম্ন প্রতিষ্ঠিত করেন। মালবের অন্তর্গত উজ্জয়িনীতে, খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে, তাহদের প্রতিষ্ঠার পরিচয় পাই।। চশ্নের পৌত্র প্রথম কন্দ্ৰদমন, ১২৬ খৃষ্টােব্দ হইতে ১৫০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে, গৌতমী-পুত্রের পুত্র দ্বিতীয় পুলমায়ীকে পরাজিত করিয়া, অন্ধ, রাজ্য অধিকার করিয়া লন । তখন ভারতের দক্ষিণ পশ্চিম উপকুল সৌরাষ্ট্র হইতে আরম্ভ করিয়া, মালব, কচ্ছ, সিন্ধাদেশ, কোঙ্কণ এবং অন্যান্য জনপদে ক্ষত্ৰিপ প্ৰথম রুদ্রদমনের আধিপত্য বিস্তৃত হয়। উজ্জয়িনীতে চশ্নের এবং তঁহার বংশধরগণের রাজধানী ছিল। তখন উজ্জয়িনী হইতে ভারতের সর্বত্র, এমন কি বিদেশে পৰ্য্যন্ত, ভারতের বাণিজ্য চলিতেছিল । কেবল বাণিজ্যের কেন্দ্ৰ বলিয়া নহে ;-উজ্জয়িনী তখন শিক্ষা-দীক্ষার-জ্ঞান-বিজ্ঞানের এবং শ্রেষ্ঠ-সভ্যতার উৎসস্থানীয় ছিল। তখন উজ্জয়িনীর যশোগৌরব এমনই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল যে, এখনও পাশ্চাত্যের নিকট উজ্জয়িনী “ভারতের গ্ৰীণউইচ’ বলিয়া অভিহিত হইয়া থাকে। যাহা হউক, সমুদ্র-গুপ্ত দিগ্বিজয়ী হইলেও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল বিজয়ে তখন অগ্রসর হন নাই। দাক্ষিণাত্যই তখন তাহার প্রধান লক্ষ্যস্থল ছিল। তখন ক্ষত্রপ-নৃপতি কন্দ্ৰদমনের