পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈদেশিক সংশ্রবে পরিবর্তন-প্ৰসঙ্গ। २ॐ (১) “ধেনুকাকাটা যবনস সিহধযান থংভে দান । * (২) ধেনুকাকাটা ধংমষবনস।”- কালি। (৩) “যবানস ইরিলস গতান দেয়ধম তে পোঢ়িয়া । (৪) যবনস চিটস গতানং ভোজনমটপো দোধম সধে। (৫) যবনস চংদানং দেয়ধন গভদার।”-জুন্নার। (৬) “সিধং ওতরাহস দত্যাক্ষিতিয়কস যোনিকস ধংমদেবপুতস ইন্দ্ৰাগ্নিদতস ধংমাত্মনা ইমং লেণং।”-নাসিক । ঐ সকল লিপির এইরূপ অর্থ প্ৰতিপন্ন হয়। যথা,- (১) “ধেনুকাকাতার সিংহধয্য নাম জনৈক যবনের দান-এই স্তম্ভ ; (২) ধেনুকাকাতার ধৰ্ম্ম-নাম যবনের দান’-কালি। (৩) “গৰ্ত্তাসের যবন ইরিলাব দান ; (৪) সংঘের হিতসাধন জন্য গৰ্ত্তাসের যবন চিত এই ভোজনাগার দান করেন। (৫) যবন চংদ এই দরজা নিৰ্ম্মাণ কবিয়া দেন”-জুন্নাব । (৬) “দত্তমিত্ৰবাণী ধৰ্ম্মদেবের পুত্ৰ ধৰ্ম্মপ্ৰাণ ইন্দ্ৰাগ্নিদত্ত এই বাসগৃহ নিৰ্ম্মাণ করিয়া দেন।”-নাসিক । f 谢 () যবনগণ, কি হিন্দু হইয়াছিলেন ? লিপিসমূহের নাম এবং সেই নাম যাহাদেব, তাহাদেব অনেকেবা কাৰ্য্যকলাপ দেখিয়া, মনে স্বতঃই প্রশ্ন উঠে-যবনগণ কি হিন্দু হইয়াছিলেন ? লিপি-সমূহে উৎকীর্ণ যবন-নামের মধ্যে ইরিলা বৈদেশিক নাম বলিয়া প্ৰতিপন্ন হয়। তাড়ুন্ন, অন্যান্য নামের সহিত হিন্দু-নামের সোসাদৃশ্য আছে। পণ্ডিতগণেব মতে - কালির লিপিমধ্যস্থ ধেনুকাকাতাব যবন-হিন্দু বলিয়া প্ৰতিপাদিত। কারণ, তাহারা ‘সিংহধয্য” নামের সহিত ‘সিংহধৈৰ্য্য” নামেব, ‘ধৰ্ম্ম’ নামের সহিত ‘ধৰ্ম্ম’ নামের অভিন্নতা লক্ষ্য কবিয়া থাকেন। জুন্নারের ও নাসিকের লিপি-সম্বন্ধেও র্তাহারা একই সিদ্ধান্তে উপনীত হন। জুন্নাবের ‘চিত’ এবং ‘চংদী’ যথাক্রমে ‘চিত্র’ ও ‘চন্দ্র’ বলিয়া অভিহিত হয়। নাসিকের ‘ইন্দ্ৰাগ্নিদত্ত’ এবং তঁহার পিতার ‘ধৰ্ম্মদেব” নাম-হিন্দু নামের , অনুরূপ। মহাভাষ্যেব মতে-দত্তামিত্ৰ-নগর সৌবীবের অন্তর্ভুক্ত হয় ; সে মতে-গ্ৰীকরজি ডোমিত্রিয়াস ঐ নগর প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনিই যে দত্তামিত্র ; অথবা, দত্তামিত্ৰই যে বৈদেশিকের নিকট “ডেমিষ্ট্ৰীয়াস হইয়াছেন-এ বিষয়ে সংশয় আসে। 米片 যবনের হিন্দুধৰ্ম্ম-গ্ৰহণ। পশ্চিম ভারতের গুহালিপি সমূহে উৎকীর্ণ যবনগণের নামের সহিত হিন্দুনামের যে সাদৃশ্য আছে, তদৃষ্টে আমরা কি সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে পারি ? বৌদ্ধগণের চৈত্য-বিহারে ও সঙ্ঘারামে যবনগণের যে বদ্যান্যতার পরিচয় প্ৰাপ্ত হই, তাহাতে র্তাহারা যে বৌদ্ধধৰ্ম্মের পরিপোষক ও বৌদ্ধধৰ্ম্মাবলম্বী ছিলেন, তাহ নিঃসন্দেহে সপ্ৰমাণ হয়। যবনগণ কেবল বৌদ্ধধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই ; পরস্তু তঁাহারা হিন্দুর নাম-পৰ্যন্ত গ্ৰহণ করিতেও কুষ্ঠা বোধ করেন নাই। ফলতঃ, নামে ও কৰ্ম্মে তাহারা হিন্দুর সহিত এমনি ভাবে অঙ্গে অঙ্গ মিশাইয়াছিলেন যে, লিপিসমূহে ‘যবন’ শব্দের উল্লেখ মাত্র না থাকিলে, তঁহাদের প্রকৃত পরিচয়-নির্দেশ অসম্ভব হইয়া পড়িত।