পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§§9Š9 ভারতবর্ষ । চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন । ৪০৫-১১ খৃষ্টাব্দে চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন ভারত-ভ্ৰমণে আগমন করেন। প্রত্নতত্ত্ববিদগণ বলেন,-তখন দ্বিতীয় চন্দ্ৰ-গুপ্ত ভারতের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ফা-হিয়েন তাৎকালিক ভারতের নৃপতির নাম উল্লেখ করেন নাই সত্য ; তিনি বৌদ্ধধৰ্ম্মশাস্ত্ৰ আলোচনায় মনোনিবেশ করিয়াছিলেন । তিনি ধৰ্ম্মালোচনায় এমনই নিবিষ্ট ছিলেন যে, সাংসারিক ব্যাপারে আদেী। তিনি মনোনিবেশ করিতে পারেন নাই। তবে তঁহার ভ্রমণ-বৃত্তান্তে তাৎকালিক ভারতের সমৃদ্ধি-প্ৰতিষ্ঠার যথেষ্ট পরিচয় প্রাপ্ত হই। তখনকার বৌদ্ধধৰ্ম্মের অবস্থাদির বিষয় পরিব্রাজকের বর্ণনা হইতে কিছুই পাওয়া যায় না। তঁহার সমসাময়িক মুদ্রা এবং লিপি হইতে বুঝিতে পারি,-ভারতের তৎকালিক সম্রাট হিন্দু ছিলেন এবং তখন বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের প্রতিষ্ঠা ক্ষুন্না হইয়াছিল। তখনও পাটলিপুত্ৰই গুপ্ত-গণেব রাজধানী ছিল। তখনও পাটলিপুত্রের সমৃদ্ধি-গৌরবের পরিসীমা ছিল ; আর মগধ তখন ঐশ্বৰ্য্য-গৌববে প্রতিষ্ঠার উচ্চ-চুড়ায সমাসীন হইয়াছিল। কিন্তু সমুদ্র-গুপ্তের দিগ্নিজয়ের পর, সামাজ্য-বৃদ্ধিব সঙ্গে সঙ্গে, বাজধানী পরিবর্তনেরও আবশ্যক হইয়াছিল। পূৰ্ব্ব-সীমান্তে পাটলিপুত্র। এত দূর সীমান্ত হইতে বিশাল সাম্রাজ্যের সুশাসন-সুপালন সুশৃঙ্খলায় সম্পন্ন হওয়া সম্ভবপর নহে ; তাই গুপ্ত-সমাজ্যের রাজধানী অযোধ্যায় স্থানান্তরিত হয়। সমুদ্র-গুপ্তের সময় হইতেই বাজধানী স্থানান্তরিত হইয়াছিল। সমুদ্র-গুপ্ত অযোধ্যায় ‘টাকশাল’ স্থাপন করিয়াছিলেন,-মুদ্রাদি হইতে সংপ্ৰমাণ হয়। প্রত্নতত্ত্ববিদগণ বলেন,- সেই টাকশালে রৌপ্য-মুদ্রা প্ৰস্তুত হইত। রাজধানী স্থানান্তরিত হইলেও তখনও পাটলিপুত্ৰ ঐশ্বৰ্য্য-সম্পদে গরীয়ান ছিল। তখনও গুপ্ত-সম্রাট সময় সময় সে রাজধানীতে অবস্থান করিতেন। সমুদ্র-গুপ্ত এবং চন্দ্ৰ-গুপ্ত বিক্রমাদিত্য অধিকাংশ সময় অযোধ্যায় থাকিতেন বটে ; কিন্তু পাটলিপুত্র রাজধানীর শ্রেষ্ঠত্ব তখনও অক্ষুন্ন ছিল। পরবৰ্ত্তিকালে, পরিব্রাজক হুয়েন সাং ( ৬৪০ খৃষ্টাব্দে) পাটলিপুত্রের ভগ্নাবশেষ মাত্র দর্শন করিয়াছিলেন । * তখন পাটলিপুত্র অতি ক্ষুদ্র গণ্ডীতে সীমাবদ্ধ। তখন লোক-সংখ্যা এক সহস্রের অধিক মহে । হৰ্ষবৰ্দ্ধনের রাজত্বকালেও পাটলিপুত্রের পুর্বগৌরব প্রতিষ্ঠার কোনও প্রয়াস হয় নাই। তাহার রাজত্বকালে অযোধ্যাও পরিত্যক্ত হইয়াছিল । তিনি কনৌজে রাজধানী স্থাপন করিয়াছিলেন। পাল-বংশের রাজা ধৰ্ম্মপালের রাজত্বকালে পাটলিপুত্ৰ-নগবের সংস্কার-সাধনের প্ৰয়াস হইয়াছিল বটে ; কিন্তু তাহাও অধিক দিন স্থায়ী হয় নাই । যাহা হউক, ফা-হিয়ান প্রায় ছয় বৎসর ভারতে অবস্থান করিয়াছিলেন। সেই সময় তাহার ভ্রমণবৃত্তান্তে চন্দ্র-গুপ্তের রাজত্ব-কালের কিছু কিছু পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। চন্দ্ৰ-গুপ্ত বিক্রমাদিত্য প্রজারঞ্জক ছিলেন, তিনি প্ৰজাপুঞ্জের ধন-সমৃদ্ধির সহায়তা করিতেন,- পরিব্রাজকের গ্রন্থে সে নিদর্শন বিদ্যমান। প্রথম বার ফা-হিয়ান যখন ভারতে আগমন করেন, তখন অশোকের প্রাসাদ প্রভৃতি দর্শনে