পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Str8 ভারতবধ । এদিকে পুর-গুপ্তের পরও গুপ্ত-বংশের দুই পুরুষের নাম বংশ-লতায় পরিদৃষ্ট হয়। যখ,- পুর-গুপ্তের পুত্র নরসিংহ-গুপ্ত / বৎসদেবীর গর্ভ-জাত ) এবং নরসিংহ-গুপ্তের পুত্র মহালক্ষ্মীদেবীর গর্ভসস্তাত দ্বিতীয় কুমাব-গুপ্ত। সুতরাং প্রশ্ন উঠে - স্কন্দ-গুপ্তের সহিত পুর-গুপ্ত কি সম্বন্ধে সম্বন্ধযুক্ত। উত্তরে ঐতিহাসিকগণ র্তাহাদিগকে পরস্পর বৈমাত্ৰ ভ্ৰাত বলিয়া সিদ্ধান্ত করিয়া লইয়াছেন । এতদ্ভিন্ন আরও এক সমস্যামূলক প্রশ্নের অবতাবণা হইয়া থাকে। বসুবন্ধুব জীবনীতে পরমাৰ্থ বলিয়াছেন,-অযোধ্যাপতি বিক্ৰমাদিত্য বৌদ্ধ-গ্ৰন্থকার বসুবন্ধুর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি তঁাহার মহিষীকে এবং যুবরাজ বালাদিত্যকে বসুবন্ধুব নিকট শাস্ত্ৰ-শিক্ষার জন্য প্রেরণ করেন। বালাদিত্য সিংহাসন প্ৰাপ্য চ’নীrল বসুবন্ধ অযোধ্যায়। নীত হন। পরমার্থের পূর্বোক্ত উক্তি হ’ত পক-গুপ্তকেই “বিক্ৰমাদিত্য’ বলিতে হয়। তঁহার পুত্ৰ নরসিংহ-গুপ্ত-“বালাদিতা’ নামেও অভিহিত হইতেন । কিন্তু হর্ণেল প্ৰমুখ পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের সিদ্ধান্ত অ্যান্যকপ। তঁাতাদেব মতে স্কন্দ-গুপ্তই বিক্ৰমাদিত্য। তিনিই আবাব পুব-গুপ্ত। কিন্তু স্কন্দ-গুপ্ত যে পুব-গুপ্ত নহেন পাবস্তু উভয়েই যে স্বতন্ত্র,-তাহার যথেষ্ট প্রমাণ বৰ্তমান । পুর গুপ্তেব মাদ্রাব এক শশাংশে ‘শ্ৰী-বিক্রমঃ’ পদ পরিদৃষ্ট হয়। আবাব কোনও কোনও মুদ্রায় “ত্যাদিত্য’ পদ সন্নিবিষ্ট তাছে। সুতবাং পুব-গুপ্তই যে “বিক্ৰমাদিত্য” উপাধিযুক্ত ছিলেন, তাহা নিঃসন্দেহে সপ্ৰমাণ হয় । দুষ্টান্তবও অসদ্ভাব নাই। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তেব প্ৰবৰ্ত্তিত 'ধনুৰ্দ্ধব-মূৰ্ত্তি” অঙ্কিত মুদ্রার একদিকে “শ্ৰী-বিক্রমঃ’ শব্দ এবং ছাত্রাঙ্কিত” মুদ্রার একদিকে “বিক্ৰমাদিত্য’ শব্দ অঙ্কিত রহিয়াছে। যাহা হউক, পুর-গুপ্তেব “বিক্ৰমাদিত্য’ সংজ্ঞায় পরমার্থেব উক্তির সহিতও সামঞ্জস্য সংরক্ষিত হয়। পুর-গুপ্ত, স্কন্দ-গুপ্তের বৈমাত্র কি সহোদর ভ্রাতা-তােহা নির্ণয় করা সুকঠিন। তবে তাহারা উভয়ে যে স্বতন্ত্র ব্যক্তি, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই । 兴 来 নরসিংহ-গুপ্ত বালাদিত্য । বালাদিত্যের রাজত্বকালে এক অভাবনীয় পরিবর্তনেব। সুত্রপাত হয়। প্ৰথম কুমার-গুপ্তের রাজত্বকালে যে বিষ-বীজ উপ্ত হইয়াছিল, বালাদিত্যের রাজত্ব-কালে তাহার অস্কুরোদগম হইতে লাগিল। ধৰ্ম্মে সমদৰ্শন-নীতি এবং স্বধৰ্ম্মনিষ্ঠা গুপ্ত-নৃপতিগণে সুপ্ৰতিষ্ঠার মূলীভুত। তঁহারা হিন্দু ছিলেন। ব্ৰাহ্মণ্য-প্রভাবে তাহাবা প্রভাবান্বিত হইয়াছিলেন। কিন্তু যখন তাহারা স্বধৰ্ম্মে আস্থাহীন হইলেন, অপিচ যখন তঁহাদের সমদৰ্শন-নীতির অভাব ঘটিল; তখনই তঁহাদের অধঃপতনের সূত্রপাত হইল । কুমার-গুপ্তের বৌদ্ধধৰ্ম্মে অনুরাগ জন্মে,-মানকুয়ার লিপিই তাহার সাক্ষ্য। ক্ৰমে সেই বীজ। পরবত্তী নৃপতিদিগের মধ্যেও সংক্রামিত হয়। তখন স্বধৰ্ম্মে-হিন্দুধৰ্ম্মে ক্রমশঃ তাহাদেৱ অনুরাগ কিমিয়া আসে। নরসিংহ-গুপ্ত বালাদিত্যের রাজত্বকালে, তাহার পূর্ণ প্রভাব প্ৰত্যক্ষ হয়। বালাদিত্য বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের অনুরাগী হন। তঁহারই প্ৰচেষ্টায় মগধের নালান্দায় বৌদ্ধবিহার নিৰ্ম্মিত হয়। কুলধৰ্ম্মের খৰ্ব্বত-সাধনে ৰালাদিত্য পরাধৰ্ম্মের পৃষ্ঠপোষক হন।