পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sis8 ভারতবর্ষ । প্ৰজার শিক্ষোল্পতির জন্য হর্ষবৰ্দ্ধন বিশেষ ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। তখন ব্ৰাহ্মণ ও বৌদ্ধসন্ন্যাসিগণই বিদ্যার অধিক চর্চা করিতেন । হর্ষবন্ধন গুণগ্ৰাহী ছিলেন । তিনি কবি ও সুলেখক। তিনি ব্যাকরণে অশেষ বুৎপন্ন ছিলেন। তিনখানি সংস্কৃত নাটক তিনি রচনা করিয়াছিলেন । সেই তিনখানি নাটকনাগানন্দ, রত্নাবলী ও প্রিয়দর্শিক-তঁাহার রচনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। কথিত হয়,-“কাদম্বরী’- প্ৰণেতা বাণভট্ট হর্ষবন্ধৰ্দ্ধনের সভাপণ্ডিত ছিলেন । 事 불 臀 ধৰ্ম্ম-বিশ্বাস । বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রতি হৰ্ষবৰ্দ্ধনের প্রগাঢ় অনুরাগ ছিল । প্ৰথমে তিনি হীনযান বা হীনায়ন সম্প্রদায়ের অন্তভুক্তি ছিলেন। পরিশেষে তিনি “মহাযান’ বা মহায়ন সম্প্রদায়ে দীক্ষা গ্ৰহণ করেন। তঁহার রাজত্বকালে প্ৰাণিহত্যা একেবারে নিষিদ্ধ হয় । কথিত হয়,-“বোধিদ্রুম’ প্ৰতিষ্ঠা-কল্পে হর্ষপৰ্দন আচাব-নিদ্রা পবিত্যাগ কবিয়াছিলেন । সপ্তম শতাব্দীতে ধৰ্ম্মবিশ্বাস কোনও নির্দিষ্ট বিধিনিষেধেব মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ছিল না। যে বংশে হর্ষ জন্মগ্রহণ কবিয়াছিলেন, সে বংশেবা যাহার যেৰূপ ইচ্ছা-তিনি সেই ধৰ্ম্মই পালন করিতেন। হর্ষের পিতা সুৰ্য্যের উপাসক ছিলেন। হর্ষের ভ্রাতা ও ভ্ৰাতৃবধু বৌদ্ধ ছিলেন। কিন্তু হর্ষ-শিব, সুৰ্য্য ও বুদ্ধ-তিনেরই উপাসনা করিতেন । শেষজীবনে হৰ্ষবৰ্দ্ধন বৌদ্ধধৰ্ম্মকেই একমাত্র অবলম্বন বলিয়া গ্ৰহণ করিয়াছিলেন। জনসাধারণ আপনাপন ইচ্ছামত কেহ বা হিন্দু-ধৰ্ম্ম, কেহ বা বৌদ্ধধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিত। রাজদরবারে বৌদ্ধদিগকে প্রতিপত্তিশালী দেখিযা হিন্দুগণ ক্ষুন্ন হইলেও, তখন জনসাধারণের মধ্যে কোনও ধৰ্ম্ম বিদ্বেষের ভাব প্ৰকাশ পায় নাই । 来源 郑项-不叹1 হিউয়েনৎ-সাঙের সহিত ধৰ্ম্ম-বিষয়ে বিচার-মীমাংসার নিমিত্ত ৬৪৩ খৃষ্টাব্দে হৰ্ষবৰ্দ্ধন কান্যকুক্সে একটী সঙ্গা আঙ্গবান করেন। সেই সভায় বহু রাজা এবং বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন সমবেত হন । এই উৎসব বহু দিন ধবিয়া চলিয়াছিল। উৎসবের পবিসমাপ্তি কালে এক দুর্ঘটনা ঘটে। বহুবায়ে সেই সন্মিলন-ক্ষেত্রে হর্ষ এক অস্থায়ী বিহার নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। সহস, তাহাতে আগুন লাগিয়া যায়। বিহারের অধিকাংশ ভস্মসাৎ হয় । কথিত হয়,- সেই সময় হর্ষ সেখানে উপস্থিত হইবা মাত্র আগুন নিবিয়া যায়। তখন হষের পবিত্ৰ হৃদয়েব জয়জয়কার পড়ে। এই উপলক্ষে হর্ষ যখন স্তুপের উপরিভাগে দণ্ডায়মান হইয়া সেই ধ্বংসাবশেষ পৰ্য্যবেক্ষণ করিতেছিলেন, সেই সময়ে এক ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে র্তাহার প্রাণ-সংহারের প্রয়াস পায়। হৰ্ষবৰ্দ্ধন তখন তৃপ হইতে অবতরণ করিতেছিলেন। যাহা হউক, সেই গুপ্তঘাতক বন্দী হয়।

  • প্রশ্নের উত্তরে ঘাতক বলে,-“বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রতি রাজার বিশেষ অনুরাগ দেখিয়া, ব্ৰাহ্মণগণ ঈর্ষান্বিত হইয়াছেন। তঁহাদেরই প্ররোচনায় সে রাজাকে হত্যা করিতে আসিয়াছে।”