পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ। مواo () রাজসাহী জেলার দেবপাড়া গ্রামে আবিষ্কৃত উমাপতি ধীর রচিত বিজয়সেনের প্রশস্তিতে বিজয়সেন কর্তৃক গৌড়েশ্বর পরাজয়ের বিষয় লিখিত আছে। বিজয়সেন বোধ হয় মদনপালদেবের রাজত্ব-কালে সমগ্র বরেন্দ্ৰ ভূমি অধিকার করিয়া পালাদিগকে তাহদের পিতৃ-ভূমি হইতে বিতাড়িত করেন । মদনপালদেবই বোধ হয় পাল-বংশের শেষ রাজা । খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে গোবিন্দপাল নামক একজন রাজা কিছু সময়ের জন্য মগধের সিংহাসন লাভ করিয়াছিলেন। কিন্তু সেনরাজগণের আক্রমণে তিনি রাজ্যচ্যুত হন। পালবাজ-বংশের সহিত এই গোবিন্দপালেব কোনও সম্বন্ধ আছে কিনা, তৎসম্বন্ধে নানা মতান্তর দেখি । নালন্দায় লিখিত ‘অষ্টসাহস্রিকা প্ৰজ্ঞাপারমিতা’ পুথি হইতে অবগত হওয়া যায় যে, নালন্দা নগর তাহার অধিকারভুক্ত ছিল । ১১৭৫ খৃষ্টাব্দেও তিনি জীবিত ছিলেন। তঁহার উপাধি ‘মহারাজাধিরাজ” ও বৌদ্ধ ধৰ্ম্মে অনুরাগ-সূচক উপাধি পরামসৌগত” প্রভৃতি দেখিয়া পণ্ডিতগণ তাহকে পাল বংশীয় বলি । অনুমান কবেন। অনেক প্ৰাচীন গ্রন্থে ও বৌদ্ধ পুথিতে র্তাহার সম্বং প্রচলিত আছে। তিনি নানা স্থান হইতে তাড়িত হইয়া অবশেষে মুসলমানগণের হস্তে জীবন বিসর্জন দিয়াছিলেন। কাহারও কাহাব ও মতে, গোবিন্দপালদেব ১১ ৬০ খৃষ্টাব্দে রাজ্যচ্যুত হইয়াছিলেন। কিন্তু তাহাব প্রমাণাভাব। পাল-বংশ ভাৰতবর্ষের একটা (শ্রষ্ঠ রাজবংশ। এক অন্ধু-বংশ ভিন্ন অন্য কেহ বোধ হয় এত অধিক দিন রাজত্ব করে নাই। ধৰ্ম্মপাল ও দেবপালের সময় বাংলা দেশই ভারতবর্ষের মধ্যে সর্বাপেক্ষ ক্ষমতাশালী ছিল। কম্বোেজদিগেৰ তন্যায় অধিকারে ও কৈবর্ত-বিদ্রোহে পাল-বংশের অনেক শক্তি ক্ষয় হইয়াছিল এবং সেই জন্য সেনা-বংশ অতি সহজে রাজ-শক্তি হস্তগত করিতে পাবিয়াছিল । পাল-রাজাদিগেব সময়ে বঙ্গদেশ শিল্পোন্নতির পরাকাষ্ঠ প্ৰদৰ্শন করিয়াছিল। ধীমান ও র্তাহার পুত্ৰ বিত্তপাল প্রস্তর-শিল্প ও চিত্ৰ-বিতায় সে সময়ে অত্যন্ত খ্যাতি লাভ করিয়াছিলেন। সে সময়ের কোনও বিশেষ চিত্ৰ বৰ্ত্তমানে পাওয়া যায় না। তবে পালরাজগণ সুশাসক ও সুপালক ছিলেন,-প্ৰজারঞ্জনে তঁ! হাবা পরায়ুথ ছিলেন না,-তাহাব নিদর্শন প্ৰাপ্ত হওয়া যায়। উত্তরবঙ্গের সুবৃহৎ দীঘি, পুষ্করিণী প্রভৃতি পালরাজগণেব সৎকার্ঘ্যের ও প্রজা-বাৎসল্যের দৃষ্টান্ত। পাল-বংশীয় রাজারা প্ৰত্যেকেই বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের প্রতি বিশেষ অনুরাগী ছিলেন। র্তাহারা অকাতরে বৌদ্ধ-ভিক্ষু ও ধৰ্ম্ম-প্রচারকদিগকে অর্থ-সাহায্য করিতেন। ধৰ্ম্মপাল বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের একজন সংস্কাৰক বলিয়া ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। ধৰ্ম্ম-পালের বংশধরগণ বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের তান্ত্রিক মতাবলখী হইলেও তাহারা ভিন্ন-প্রদেশের অনেক বৌদ্ধ-গুরুর সহানুভূতি হইতে বঞ্চিত হয় নাই । পাল-বংশের সঙ্গে সঙ্গে স্বাধীন বঙ্গের স্বাধীন নৃপতি-গণের স্মৃতি ক্ৰমে বিলুপ্ত হইতে থাকে। পরিশেষে তাহারা বিস্মৃতির অন্ধতম গর্ভে নিমজ্জিত হন। বঙ্গের স্বাধীনতার গৰ্ব্বও চূর্ণ হইয়া যায়। বঙ্গ তখন আবার অধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হইয়া পড়ে। অন্ধকারে বিদ্যুদ্বিকাশের ন্যায় স্বাধীমতার বিজনিচমক একবার বিকাশ পাইয়াই চিরতরে নির্বাপিত হইল। 崇 冰河 r