পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

wo ভারতবর্ষ। ১২০০ খৃষ্টাব্দে নদীয়া লুণ্ঠন করেন। সুতরাং প্ৰতিপন্ন হয়,-লক্ষ্মণসেনের রাজ্যাবসানের প্রায় ত্রিশ বৎসর পরে ব্যক্তিয়ার নদীয়া-লুণ্ঠনে অগ্রসর হইয়াছিলেন। এ হিসাবে মুসলমান ঐতিহাসিকের উক্তি সম্পূর্ণ অমূলক সপ্রমাণ হয়। 锋 带 বিরুদ্ধ যুক্তির আলোচনা। কিন্তু আর এক শ্রেণীর পণ্ডিত প্ৰতিবাদে মিনহাজের উক্তির যাথার্থ-সপ্রমাণে অগ্রসর হন। এই মতের প্রতিষ্ঠা কল্পে তাহারা যে যুক্তিজালের অবতারণা করেন, এস্থলে তাহার কিঞ্চিৎ মৰ্ম্মাভাস প্ৰদান করিতেছি। তাহারা সুচনায় মিনহাজের উক্তি বিশ্বাসযোগ্য বলিয়া গ্ৰহণ করিয়াছেন ; বলিয়াছেনআধুনিক প্রত্নতাত্বিকদিগের প্রকৃতি-মিনহাজের উক্তির অসারত্ব প্রতিপন্ন করা। মিনহাজ সমসাময়িক ঐতিহাসিক। তিনি স্বয়ং যাহা প্ৰত্যক্ষ কবিয়াছিলেন, তাহাই লিপিবদ্ধ কয়িযাছেন। জনশ্রুতির উপর তিনি আদৌ নির্ভর করেন নাই। ঐতিহাসিককে বিশ্বাস

  • করিবার আর এক কাবণ,-ডক্টর কিলহৰ্ণ বিবিধ গবেষণায় যে তথ্য উদঘাটনের প্রয়াস

পাইয়াছেন, মিনহাজের গ্রন্থে তাহ পূৰ্ব্ব হইতেই বিদ্যমান আছে। মিনহাজের মতে,-লক্ষ্মণসেন আশী বৎসর জীবিত ছিলেন। আর সেই আশী বৎসরই তিনি রাজ্যভোগ কবিয়াছিলেন। ১২০০ খৃষ্টাব্দে মহম্মদ ব্যক্তিয়াব নদীয়া লুণ্ঠন করেন। ডক্টর কিলহর্ণের মতে, ১১:১৯, ২০ খৃষ্টাব্দে লক্ষ্মণসেনের বাজারম্ভ হয়। ১২০০ খৃষ্টাব্দে মহম্মদ কর্তৃক নদীয়া আক্রমণ এবং ১১১৯-২০ খৃষ্টাব্দে লক্ষ্মণসেনেব রাজ্যপ্ৰাপ্তি-এতদুভয়েব ব্যবধান সে ক্ষেত্রে ৮০ বৎসব দাড়ায় । সুতরাং লক্ষ্মণাব্দ লক্ষ্মণসেনের জন্মকাল হইতেই আবিস্ত হইয়াছিল, সপ্ৰমাণ হয়। মিনহাজেব গ্ৰন্থ হইতে নিম্নোক্ত কয়েকটী প্ৰধান এবং আবশ্যক বিষয় অবগত হওয়া যায়,- (১) লক্ষ্মণসেন যখন মাতৃগর্ভে, বলাল তখন লোকান্তবে ; (২) সন্তান প্রসবকালে লক্ষ্মণসেনের মাতা পরলোকগমন করেন। (৩) জন্মমুহূৰ্ত্ত হইতেই লক্ষ্মণসেন সিংহাসনে প্ৰতিষ্ঠিত হন। (৪) লক্ষ্মণসেন আশী বৎসর জীবিত ছিলেন। (৫) মহম্মদ ব্যক্তিয়ার যখন নদীয়া লুণ্ঠন করেন, লক্ষ্মণসেন তখন অশীতিপর বৃদ্ধ হইয়াছিলেন। কিন্তু ‘লঘুভাবত” ঐতিহাসিক গ্ৰন্থ হইতে এতদ্ভিন্ন আর দুইটী তথ্য সংগৃহীত হয় ; যথা(১) বিক্রমপুরে যখন লক্ষ্মণসেনের জন্ম হয়, বল্লালসেন তখন রাজধানীতে উপস্থিত ছিলেন না। তখন মিথিলায় যুদ্ধ চলিতেছিল। বল্লালসেন তখন মিথিলায় মিথিলাধিপতির সহিত যুদ্ধে ব্যাপৃত। (২) মিথিলার যুদ্ধে বল্লালসেনেৰ মৃত্যুমূলক মিথ্যা জনরব রািটয়াছিল। বস্তুতঃ যুদ্ধে তিনি বিজয়লাভ করিয়া প্ৰত্যাবৃত্ত হইয়াছিলেন। মিনহাজের এবং “লঘুভারতের পূর্বোক্ত উক্তি-সমূহ তুলনায়ু সমালোচনা করিলে বুঝা যায়, -( ) বিক্রমপুবে লক্ষ্মণসেন যখন জন্মগ্রহণ করেন, বল্লাল তখন জীবিত ছিলেন ; মিথিলায় তখন যুদ্ধ চলিতেছিল। বল্লালেব মৃত্যুব মিথ্যা সংবাদ শুনিয়া রাজমন্ত্রী এবং রাজ-পরিষদগণ৷ লক্ষ্মণসেনকেই সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করেন।