পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য । } \రి(? সে রাজ্যের উৎপন্ন-সামগ্রীর পরিচয় জানা যায়,—“সে রাজ্যে সিংহ, ব্যঞ্জ, নকুল, উঃ, গণ্ডার, হস্তী, কচ্ছপ প্রভৃতি জন্তু এবং স্বর্ণ, তাম্র, লৌহ, সীসক, টন প্রভৃতি ধাতব পদার্থ প্রাপ্ত হওয়া যায় ;- সে দেশে স্বর্ণখচিত বস্ত্র, কাপাস-বস্ত্র এবং কম্বল প্রস্তুত হয় ; সেখানে 'অভ্রের ষ্ঠায় অথচ লাল-রঙের এক রকম প্রস্তর আছে —সে প্রস্তর বিদীর্ণ করিলে যে পাতলা পাতলা খণ্ড হয়, সে গুলিকে একত্র রাখিলে, রেশমের সূক্ষ্ম-বস্ত্রের ন্যায় প্রতীয়মান হয় । সেখানে হীরক পাওয়া যায় ; উহ। ময়দার ন্যায় শ্বেতবর্ণ, আগুনে উহ! দগ্ধ করা যায় ন}, চীনে উহার দ্বারা কাচ ও বহুমূল্য প্রস্তরাদি কৰ্ত্তিত হইয় থাকে। সে ভারতীয় দেশে চন্দশ-কাষ্ঠ, বিভিন্ন সুগন্ধ মসলা, ইক্ষু, মিছরী এবং সকলপ্রকার 钟廿出 ফল পাওয়া যায় । সে দেশের অধিবাসিগণ বৎসরে একবার ‘ত।-সিন’ ( সিরিয়া ) এবং ‘ফু-নান’ ( শুম-দেশ ) পেশে বাণিজ্য করেন। কড়ি সেই দেশে বিনিময়-ব্যাপারে মধ্যস্থ-রূপে প্রচলিত আছে ? প্রোক্ত তালিকায় যে সকল সামগ্রীর নাম দৃষ্ট হয়, ঐ সকল সামগ্রী সেই সময়ে ভারতবর্ষ হইতে বিদেশে রপ্তানী হইত, ইহাই বুঝা যায়। ইহার পর ‘হিউয়ান-টি’র রাজত্বকালে, ৫৭১ খৃষ্টাব্দে, ভারত হইতে আর এক দূত প্রেরিত হওয়ার বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে। সে দূত নানাবিধ ভারতীয় পণ্য উপহার-স্বরূপ লইয়া গিয়াছিলেন। খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর প্রারস্তে এই দূত-প্রেরণবিষয়ে একটু বিরোধ উপস্থিত হইয়াছিল। মুই বংশের প্রথম সম্রাট রাং-টি বিভিন্ন দেশের সহিত চীনের সম্বন্ধ-স্থাপনে প্রয়াস পান । কিন্তু সকলেই তাহার প্রাধান্য মান্য করুক, ইহাই তাহার আকাঙ্ক্ষ হয় । তিব্বতের এবং অন্যান্য অনেক দেশের রাজ তাহার বগুত। স্বীকার করেন । কিন্তু ভারতবর্ষ সেরূপ সম্বন্ধ-স্থাপন করিতে সন্মত হন না । ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার জন্য ভারতবর্ষ হইতে এ পর্য্যন্ত দুত প্রেরিত হইয়াছিল বটে, কিন্তু তাহাতে চীন-সম্রাটের প্রাধান্ত-স্বীকারের কোনই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয় নাই । সুতরাং এই সময়ে ভারতীয় নৃপতিগণ চীনে কোমও উপঢৌকনাদি প্রেরণ একেবারে বন্ধ করিয়া দেন। ফলে, পরবর্তিকালে অন্যরূপ প্রথা প্রবর্তিত হয়। তখন ভারতবর্ষ হইতেও যেমন দূত যাইতে আরম্ভ করেন, চীনদেশ হইতেও সেইরূপ ভারতবর্ষে রাজ-দূতগণ আসিতে বাধ্য হন। যে কারণেই হউক, ৬০৭ খৃষ্টাব্দে চীনরাঙ্গের জনৈক প্রতিনিধি লঙ্কাদ্বীপে আগমন করেন। লঙ্কাদ্বীপের তাৎকালিক অধিপতি র্তাহার অভ্যর্থনার জন্য ত্রিশখানি পোত-সহ "কিউ-মো-লো’ নামক জনৈক ব্রাহ্মণকে সমুদ্রপথে প্রেরণ করিয়াছিলেন। ‘সুই-তু’ নামক ‘সুইং বংশের ইতিবৃত্তে এতদ্বিবরণ লিখিত আছে । ইহার পর, ৬২৬ খৃষ্টাব্দে টাং বংশের সম্রাট টাই-সুংয়ের রাজত্বকালে দূত-গমনাগমনের প্রথা বিশেষভাবে প্রবর্তিত হয়। টাং বংশের ইতিহাসে লিখিত আছে,–৬৪১ খৃষ্টাব্দে উত্তর-ভারতের সম্রাট হর্ষবৰ্দ্ধন শিলাদিত্য চীনে দূত প্রেরণ করিয়াছিলেন । চৈন-পরিব্রাজক ‘হুয়েন-সাং ভারতবর্ষে আসিয়৷ চীনসম্রাটের গুণগাথ৷ কীৰ্ত্তন করায়, রাজ। হর্ষবৰ্দ্ধন ঐক্লপ দূত-প্রেরণে প্রলুব্ধ হইয়াছিলেন । তাহার ফলে, চীনদেশ হইতেও ভারতবর্ষে দূত আসিয়া, রাজা হৰ্ষবৰ্দ্ধনের প্রতি সম্বন্ধন জানাইয়াছিলেন। ‘মা-তুয়ান-লিন শিলাদিত্যের নাম “শি-লে-য়ি-টো রূপে এবং