পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বঙ্গের গৌরব-বিভব । Yళలి প্রোথিত হইয়া আছে। তাহার পরবৰ্ত্তিকালের বহুদিনের সম্বন্ধ-স্বত্র ছিন্ন-বিচ্ছি। কাজেই ফা-হিয়ানের ভারত-আগমন, আর তাম্রলিপ্তে বাণিজ্য-পোতে আরোহণ,—বঙ্গের বাণিজ্যপরিচয় হইয়া দাড়াইয়াছে। ফা-হিয়ানের পর হুয়েন-সাং ভারতবর্ষে আসেন। সৌভাগ্যক্রমে তিনি বঙ্গদেশে আসিয়াছিলেন, তাম্রলিপ্ত বন্দর দেখিয়াছিলেন ; তাই মুসলমানগণের বা খৃষ্টানগণের ভারত আগমনের পূর্বে বঙ্গদেশের বাণিজ্য-সম্পদের কথঞ্চিৎ পরিচয় দিতে সমর্থ হইতেছি। মনে করিয়া দেখুন দেখি,—তাম্রলিপ্ত কতকাল পূর্বের প্রাচীন নগর— কতকাল পূর্বের প্রাচীন বন্দর-কতকাল পূর্বের প্রাচীন রাজধানী । পুরাণ-সমূহের আদিভূত বিষ্ণুপুরাণ তাম্রলিপ্ত-প্রসঙ্গে লিখিয়াছেন,—“তাম্রলিপ্তান সমুদ্রতটপুরাশ্চ দেবরক্ষিতে। তাম্রলিপ্তের রক্ষিগুতি।” (বিষ্ণুপুরাণ, চতুৰ্ব্বিংশ অধ্যায়, অষ্টাদশ শ্লোক)। তবেই প্রাচীনত্ব । বুঝা যায়, বিষ্ণুপুরাণের সময়েও তাম্রলিপ্ত সমুদ্রতীরস্থ বন্দর বলিয়া বিখ্যাত ছিল যাহারা পুরাণ-সমূহকে আধুনিক বলিয়া মনে করেন, অথচ মহাবংশাদি বৌদ্ধধৰ্ম্ম-গ্রন্থের প্রাচীনত্ব অস্বীকার করেন না, তাহাদিগের প্রতীতির জন্য তাম্রলিপ্ত-সম্বন্ধে মহাবংশের উক্তিও উল্লেখ করিতে পারি। মহাবংশে প্রকাশ, খৃষ্ট-পূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে এই তাম্রলিপ্ত বন্দর হইতেই অর্ণবপোতে আরোহণ করিয়া, বিজয়সিংহ সিংহল-যাত্রা করিয়াছিলেন । সুতরাং এ হিসাবে খুষ্ট-জন্মের পাচ শত বৎসর পূৰ্ব্বে তাম্রলিপ্ত সমৃদ্ধি-সম্পন্ন বন্দর ছিল বলিয়। প্রতিপন্ন হয়। ফা-হিয়ান ৪১১ খৃষ্টাব্দে তাম্রলিপ্ত বন্দরের যে সমৃদ্ধি দর্শন করেন, দুই শত বৎসর পরে হুয়েন-সাং ঐ বন্দরের সেই সমৃদ্ধি দর্শন করিয়াছিলেন । এই তাম্রলিপ্ত বন্দর হইতে সরাসরি চীনদেশে বাণিজ্য-পোত গমনাগমনের বন্দোবস্ত ছিল। চুৈন-পরিব্রাজক ইৎ-সিং চীনদেশ হইতে যাত্রা করিয়া একেবারে তাম্রলিপ্ত বন্দরে উপনীত হন। ৬৭৩ খৃষ্টাব্দে ইৎ-সিং ঐ বন্দরে উপনীত হন এবং বার বৎসর পরে ঐ বন্দর হইতেই স্বদেশ-যাত্র করেন। স্বদেশ-যাত্র-কালে ইৎসিং তাম্রলিপ্ত হইতে পাচ-লক্ষাধিক শ্লোকযুক্ত একখানি ধৰ্ম্মগ্রন্থ চীনে লইয়া যান। ইৎসিংয়ের বর্ণনায় প্রকাশ, সেই গ্রন্থ চীনা-ভাষায় অনুবাদ করিলে সহস্ৰ-খণ্ডে বিভক্ত প্রকাণ্ড।গ্রন্থ হইতে পারিত । * যাহা হউক, ভারতবর্ষ হইতে চীনদেশে গতিবিধির পক্ষে তাম্রলিপ্ত-বন্দরই তখন প্রশস্ত ছিল । ইৎ-সিংয়ের সঙ্গিগণ অনেকে বহুদিন ঐ বন্দরে বাস করিয়াছিলেন । ইৎসিংয়ের সমসময়ে র্যাহার। চীনদেশ হইতে ভারতবর্ষে আগমন করেন, তাহারাও অনেকে তাম্রলিপ্তে আসিয়া অবস্থিতি করিয়াছিলেন। শেষোক্ত পৰ্য্যটকগণের মধ্যে ‘তাও-লিন', BBBSBBSBBBBSBSSBBSBBBBSHBBBBS BBB BBBSBBB S BBBB প্রত্যেকেই বৌদ্ধধৰ্ম্ম-শাস্ত্রের বিশেষ বিশেষ অংশে অভিজ্ঞ বলিয়া পরিচিত ছিলেন । ইহার কোন পথে কি ভাবে তাম্রলিপ্ত সহরে আসিয়াছিলেন, তবিবরণ আলোচনায়, কোন কোন দেশের সহিত তাম্রলিপ্তের বাণিজ্য-সম্বন্ধ বিদ্যমান ছিল বুঝিতে পারা যায়। তাও-লিন যবদ্বীপ ও নিকোবর-দ্বীপপুঞ্জের পথ দিয়া তাম্রলিপ্তে আসেন। তৎ-প্রসঙ্গে যবদ্বীপের ও নিকোবর-দ্বীপপুঞ্জের সহিত তাম্রলিপ্তের বাণিজ্য-সম্বন্ধ ছিল বুঝিতে পার। Vide I-Tsing's Memoirs by Chavannes.