পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য সম্পং । € a কর্কশ বোঁধ হইত। তাহার বিশাল লোচনের চঞ্চল-দৃষ্টি বায়ু-জান্দোলিত নীলপদ্মবৎ প্রতিভাত ছিল। সে দৃষ্টি-কুরঙ্গীর নিকট তিনি গ্রহণ করিয়াছিলেন কি কুরঙ্গীই তাহার নিকট গ্রহণ করিয়াছিল, নির্দেশ করা দুঃসাধ্য। তাঙ্গর অঞ্জনযুক্ত ক্ৰ-যুগল যেন তুলিকার স্বার। চিত্রিত ছিল । সে ক্র-যুগলে বিলাস-গুণ-সঞ্চালনে কন্দপেরও সৌন্দৰ্য্য-গৰ্ব্ব খৰ্ব্ব হইত। তিৰ্য্যগ জাতির লজ্জ যদি কোথাও দেখা যায়, সে এই পাৰ্ব্বতীর স্থবিন্যস্ত কেশরাশির নিকট ; তাহার মনোহর কেশকলাপ দর্শন কবিয়া চমরী নিজ পুচ্ছ-লোমের অসম্পূর্ণত মনে করিয়া লজ্জাবোধ করিভ। র্তাহার কমল-মুখে মধুর-হাস্য কি মনোহর । “পুষ্পং প্রবলোপহিতং যদি স্যান মুক্তাফলং বা ফুটবিদ্রুবমস্থম্‌ । ততোইকুকুৰ্য্যাদ্বিশদস্য তস্যাস্তাস্ত্রেীষ্ঠপর্য্যস্তরুচঃ স্মিতস্য ।” “যদি নবীন-পল্লবের উপর শ্বেতবর্ণ কুসুম সংস্থাপিত করা যায়, অথবা পৰিস্কৃত প্রবালের উপর মুক্তাফল সন্নিবেশ করা যায়, তাহ হইলে তাহার রক্তবর্ণ ওষ্ঠস্বয়ের উপর বিরাজমান শুভ্র দশনকাস্তি-সুশোভিত মধুর হাস্তের সহিত কথঞ্চিৎ তুলনা করা যাইতে পারে।” দ্বিতীয় সর্গে, তারকাসুর-উপক্রত দেবগণ ব্ৰহ্ম-সমীপে আপনাদের দুর্দশা-কাহিনী বর্ণন করিয়া প্রতিকারপ্রার্থী হইয়াছেন এবং ব্রহ্মা তারকাসুর-বধের উপায় উদ্ভাবন করিতেছেন। তৃতীয় সর্গে, যোগমগ্ন মহাদেবের যোগভঙ্গের চেষ্টা—মদনভস্ম । চতুর্থ সর্গে, রতিবিলাপ-রতির মৰ্ম্মভেদী শোকোচ্ছ,াস। পঞ্চম সর্গে, তপঃফলোদয়—পাৰ্ব্বতীর তপস্যায় মহাদেবের পরিতুষ্ট । ষষ্ঠ সর্গে উমাসম্প্রদান-প্রসঙ্গ, সপ্তম সর্গে উমা-পরিণয়, অষ্টম সর্গে সস্তোগ, নবম সর্গে কৈলাসগমন, দশম সর্গে কুমারোৎপত্তি, একাদশ সর্গে কুমারকৌমারবর্ণন, স্বাদশ সর্গে কুমার-সেনাপত্য, ত্রয়োদশ সর্গে কুমার-সেনাপত্যাভিষেক, চতুর্দশ সর্গে কুমার-প্রয়াণ, পঞ্চদশ সর্গে সেনাসন্নিবেশ, ষোড়শ সর্গে দ্বন্দ্ব, সপ্তদশ সর্গে তারকাসুরবধ । তারকাসুর-বধের জন্য কুমার কাৰ্ত্তিকেয়ের জন্ম-বৃত্তান্ত লইয়াই এই মহাকাব্য বিরচিত । এই কাব্যে যে সকল স্বভাবসুন্দর মনোহর চিত্র অঙ্কিত হইয়াছে, তাহার কয়েকটা উল্লেখ করিতেছি। প্রথমেই নগাধিপতি হিমালয়ের বর্ণনা । সে বর্ণনার আভাস পূর্বেই প্রদান করিয়াছি । তার পর, পাৰ্ব্বতীর রূপ-বর্ণনা । এমন রূপ-বর্ণন কোনও কবির কোনও কাব্যগ্রন্থে দৃষ্ট হয় না । আভরণ-সজ্জায় সজ্জিত হইলে, সেই লোকললামভূত রূপ আবার কত প্রস্ফুটিত হয়, দেখুন – “স সস্তবদ্ভিঃ কুমুমৈল তেব জ্যোতির্ভিরুদ্যক্তিরিব ত্রিযাম । সরিদ্বিহঙ্গৈরিব লীয়মানৈরামুচ্যমানাভরণা চকাশে ।” কুকুমোদগমে লতার যেমন সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি হয়, নক্ষত্রাতরণে রাত্রি যেমন শোভমান হয়, চক্রবাকাদি বিহঙ্গম-সমাগমে তরঙ্গিণীর যেমন শোভা বৃদ্ধি হয়, আভরণ-সজ্জায় পাৰ্ব্বতীর সৌন্দর্য্য তস্কপ প্রস্ফুটিত হইয়াছিল। এই উপমায় ত্ৰিবিধ স্বাভাবিক শোভার উল্লেখে কবি দেখাইলেন, পাৰ্ব্বতীর স্বভাবসুন্দর দেহে অলঙ্কারগুলিও স্বভাবসুন্দর-রূপে শোভমান হুইয়।ছিল । ইহার পর, কবির অনুপম তুলিকার অনুপম চিত্র—তপোবনে বসন্ত-বিকাশ। ষোড়শ শ্লোঞ্চে ( তৃতীয় সর্গের ২৪শ হইতে ৪•শ শ্লোক দ্রষ্টব্য) এই বসন্ত-বৰ্ণন। এমন সুন্দর পরিস্ফুট হইয়। জtছে যে, ঋতুরাজ যেন পাঠকের চক্ষের উপর বিরাজমান রহিয়াছেন । মলয়ানিল