পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२५” ভারতবর্ষ। সেই গকার, তদ্ভিন্ন স্বতন্ত্র নহে। (২) “প্রয়োগস্য পরমং’ ৷ ‘শব্দং করোতি’-এই বাক্যের অর্থ শব্দ-নিৰ্ম্মাণ নহে ; শব্দের উচ্চারণ মাত্র। (৩) ‘আদিত্যবৎ যৌগপদ্যং।" যেরূপ এক সুর্য্য নিকটস্থ এবং দূরস্থ সকল লোকেরই দৃপ্ত হইতেছে, তদ্রুপ এক শব্দ বছ ব্যক্তির শ্রব্য হইতে পারে । ( ৪ ) ‘বর্ণান্তরমবিকারঃ । বর্ণান্তরকে বিকার বলা উচিত নহে। যেহেতু ই-কার স্থানে ‘য’-কার হইলে বর্ণান্তর প্রয়োগ হইল ; ‘ই’-কারের কোনও বিকার হইল না । ( ৫ ) ‘নাদবুদ্ধিঃ পর। দশ ব্যক্তি এক ‘গে’ শব্দ উচ্চারণ করিলে দশট ‘গে’ শব্দ আবির্ভূত হইল বটে ; কিন্তু তাহ কেবল নাদ অর্থাৎ গোলমাল বৃদ্ধি মাত্র, শব্দ-বৃদ্ধি নহে। এক গো শব্দ একই রহিল ; তবে দশ বার উচ্চারিত হইল বলিয়৷ গোলমাল অধিক হইল। অতএব কোনপ্রকারেই শব্দের একত্ব এবং নিত্যত্ব হানি হইতে পারে না। সুতরাং শব্দের নিত্যত্ব সুস্থির রহিল ।” এইরূপে নৈয়ায়িকগণের যুক্তি খণ্ডন করিয়া মীমাংসকগণ শব্দের নিত্যত্ব প্রমাণ সম্বন্ধে আরও কয়েকটা সূত্রের অবতারণা করিয়াছেন । যথা,—“(১) নিত্যস্ত স্যাৎ দর্শনস্য পরার্থত্বাং । যেহেতু শব্দ উচ্চারিত হইলেই অন্য ব্যক্তি ঐ শব্দের অর্থগ্রহ করিতে পারেন ; অতএব অবগু শব্দ নিত্য হইবে। যদি শব্দ নিত্য ন হইত, তাহা হইলে কেহই শব্দের অর্থ বুঝিতে পারিত না । কারণ, শব্দ উচ্চারণ মাত্র বিনষ্ট হইবে। নচেৎ, বিষম দোষ ঘটে। এইরূপ শব্দের স্থিতি মানিলেই শব্দের নিত্যত্ব স্বতঃপ্রমাণ হইল। (২) সৰ্ব্বত্র যৌগপদ্যাৎ । ভিন্ন ভিন্ন পুরুষের এককালে এক শব্দের সমভাবে এবং অভ্রান্তরূপে প্রত্যভিজ্ঞ করিতে পারেন। যেহেতু শব্দ নিত্য এবং একস্বরূপ । (৩) ‘সংখ্যাভাবাৎ ।’ শব্দের সংখ্যা বৃদ্ধি নাই। একটা ‘গে’ শব্দের বারংবার উচ্চারণ করিলে, ঐ পুনঃপুনঃ-উচ্চারিত শব্দগুলি সংখ্যাবচ্ছেদে পরস্পর বিভিন্ন নহে । (৪) অনপেক্ষত্ত্বাং ’ শব্দের বিনাশ অকুমান করিবার কোনও কারণ বা অবলম্বন নাই । সুতরাং শব্দ অনিত্য কেন হইবে ? (৫) ‘লিঙ্গদর্শনাৎ চ |’ বেদসংহিতাতেও শব্দের নিত্যত্ব পরিস্ফুট রহিয়াছে। যথা—‘তস্মৈ নু্যনং অভিদ্যবে বাচ। বিরূপ নিত্যয় বৃষ্ণে চোদস্ব সুভূতিং । (৮৬৪।৬) হে বিরূপ নিত্য শব্দের দ্বার। সৰ্ব্বগামী এবং কামবর্ধিত অগ্নিকে শোভন স্তোত্র প্রেরণ কর।” এবম্বিধ নানা যুক্তির অবতারণায় মীমাংসকগণ শব্দের নিত্যুত্ব প্রমাণ করেন। বেদ শব্দ-সমষ্টি ; শব্দ নিত্য ; সুতরাং বেদ নিত্য । ইহাই মীমাসকগণের সিদ্ধান্ত । সুতরাং বুঝা গেল,—এখনও যেমন বেদের কাল-নির্ণয় লইয়। বিতণ্ড চলিয়াছে, স্কায়-দর্শন ও মীমাংসা-দর্শনের সময়ও সেই বিতণ্ডা—সেই বিতর্ক চলিয়াছিল। তবেই বুঝুন,—বেদ কত কালের ! বেদান্ত-দর্শন অন্ধ্যভাবে বেদ-তত্ব বিবৃত করিয়াছেন। বেদান্ত-দর্শনের স্বত্র-সমূহ সম্যক পরিস্ফুট নহে ; সুতরাং সে স্থত্রে সে তত্ত্ব অনায়াসে হৃদয়ঙ্গম হয় না। ক্রমৎ শঙ্করাচাৰ্য্য ‘শারীরক ভাষ্যে’ সে তত্ত্ব উদ্ধার করিয়া গিয়াছেন। বেদাঙ্ক-দর্শনের ཝཱ་ལཱ་ প্রতিপাদ্য—ব্রহ্ম সত্য, আর সমুদায় মিথ্যা ; ব্ৰহ্মজ্ঞানই মুক্তি ; অন্যথ। মুক্তি সস্তবে না। ঐযৎ শঙ্করাচাৰ্য্য শ্রুতি-স্মৃতি-তন্ত্র-পুরাণাদির সাহায্যে বোন্তের ঐ মত প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। “ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়, বৈখ–এই বর্ণজয় মাত্র ব্ৰক্ষ