পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য-সম্পং । 983 কন্তু মন্দাকিনী-তীরে বালুকার ক্রীড়া-পৰ্ব্বত রচনা করিয়া ক্রীড়া করিতেছিল। রাজা অনুরাগ ভরে উদকবতীর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি সঞ্চালন করেন। উৰ্ব্বশীর ইহাতে অভিমান হয়। রাজাকে পরিত্যাগ করিয়া উৰ্ব্বশী বনান্তরে প্রয়াণ করেন । রাজার অনুনয়-বিনয়ে অবহেলা করিয়া, উৰ্ব্বশী যে কাননে প্রবেশ করিয়াছিলেন, কুমার কাৰ্ত্তিকেয় সে কাননেব অধিকারী। সে কাননে কোনও রমণীর প্রবেশাধিকার ছিল না । মোহবশে সেই কাননে প্রবেশ করায় উৰ্ব্বশীর প্রতি ভরত মুনির অভিসম্পাতের ফল ফলিল। কুমারেব উপবনে প্রবেশমাত্র উৰ্ব্বশী লতারূপে পরিণত হইলেন । উৰ্ব্বশীর অনুসরণে পুরুরবা কাননাভ্যন্তরে প্রবেশ "করিলেন ; কিন্তু উৰ্ব্বশীকে আর দেখিতে পাইলেন না । উৰ্ব্বশীর বিবহে রাজ উন্মাদপ্রায় হইলেন। তিনি কখনও তরুরাজিকে সম্ভাষণ করিয়া, কখনও দেবতাগণকে আহবান করিয়া, কখনও গিরি-নির্ঝরিণীকে ডাকিয়া, উৰ্ব্বশীর সন্ধান লইতে বাকুল হইলেন। চতুর্থ অঙ্কের মনোহর অংশ–উৰ্ব্বশীর অনুসন্ধানে রাজার এই ব্যাকুলত । রাজা পৰ্ব্বতকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছেন,—হে মহীধর ! তোমার স্ফটিকময় শিলাতলে নিৰ্ম্মল নিঝর সকল প্রবাহিত হইতেছে, তোমার শিখরদেশ বচ্চবিধ কুসুমকুলে সুশোভিত, কিন্নরগণ তোমাতে অবস্থিত হইয়া মনোহর গান করিতেছে। তুমি কি আমার প্রিয়তমাকে দেখিয়াছ ? সরিৎ-মুন্দরীকে সম্বোধন করিয়া কহিতেছেন,—’হে সুন্দরি ! আমি তোমায় প্রণতি করিতেছি, তুমি প্রসন্না হও । তোমার সলিল-মধ্যে বিহগগণ ক্ষুব্ধ-চিত্তে কবণ-ধ্বনি করিতেছে। তোমার তীরে মৃগগণ সমুংমুক-চিত্তে অবস্থিতি করিতেছে। পূৰ্ব্বদিকগত পবনহিত কল্লোলরূপ বাহু তুলিয়া নীবনিধি মনোহর নৃত্য কবিতেছে। তুমি বলিয়া দাও—আমার প্রিয়া কোথায় গেল।’ এই বলিতে বলিতে হঠাৎ তাহার মনে হইল,—র্তাহার প্রিয়া যেন অভিমানিনী ৷ হইয় তবঙ্গিণীর রূপ পরিগ্রহ কবিয়াছেন। হংস-চক্রবাক-শঙ্খ-কুৰ্ম্ম যেন তাহার আভরণ, জলহস্তী ও মকরাদি দ্বাৰা পবিব্যাপ্ত নীল সলিল যেন তাহার উত্তরীয়, তীরদেশে উদগত সলিল-সঞ্চালন যেন তাহাব হস্ততল, তাহার বর্ণ নবীন মেঘের দ্যায় এবং রূপ দশ দিক আচ্ছাদিত করিয়াছে। তিনি তরঙ্গিণীকে সম্বোধন করিয়া কছিলেন,—“প্রিয়ে । আমি প্রিয়বাদী,— তোমাতে নিরুদ্ধচিত্ত। কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করিলে?” নদী নিরুত্তর । রাজা আবার কহিলেন,—“এ যে মৌনাবলম্বনেই রহিল ! অথবা এ যথার্থই নদী, উৰ্ব্বশী নহেন ! তাহা ন হইলে, পুরুরবাকে পরিত্যাগ করিয়া সমুদ্রাভিমুখে চলিবে কেন ? ইহার পর ষাহাকে দেখিলেন, তাহাকেই জিজ্ঞাসা করিলেন,—“তুমি কি আমার প্রিয়াকে দেখিয়াছ ? রাজা উন্মাদের স্তায় ইতস্তত: পরিভ্রমণ করিতেছেন, সম্মুখে একখণ্ড শিলা দৃষ্ট হইল। তাঙ্গ দেখিয়া রাজার মনে হইল,—‘দিনমণি যেন উহাকে তুলিয়া লইবার জন্য নির্দেশ করিতেছেন। কিন্তু পরক্ষণেই প্রস্তবখণ্ডের প্রতি বীতস্পৃহ হইলেন। মনে হইল,—মনারকুসুমে অধিবাসিত হইয় এ মণি যাহার উত্তমাঙ্গে অর্পণ করিবার যোগা, সেই প্রিয়াই যখন নাই, এ মণি কি হইবে ? এই ভাবিয়া মণিখণ্ড পরিত্যাগ করিলেন। এমন সময় নেপথ্যে দৈববাণী হইল,—“বৎস! মণি গ্রহণ কর। এই সঙ্গম-মণি-গ্রহণে প্রিয়জনের সঙ্গম লাভ হইবে । মদিগ্রহণের পরই সেই লতার প্রতি রাজার দৃষ্টি পড়িল। রাজা কহিলেন;–‘জাষাঙ্গ মনে হইণ্ঠেছে--