পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ8:Չ. ভারতবর্ষ। এই সেই। ইহার পল্পৰ মেঘজালে আজ হইয়াছে বলিয়া যেন ইহা অশ্রুজলে ধোঁতাধর হইয়াছে। কাল-বিরহে পুষ্পোদগম না হওয়ায় ইহা যেন আভরণ-শূন্ত হইয়া রহিয়াছে। আমার কোপন প্রিয়তম, আমি পাদপতিত হইলেও যেমন আমাকে পরিত্যাগ করিয়াছেন; ইহাকেও যেন তাহীর মত বোধ হইতেছে।” এই বলিয়া রাজা প্রেমভরে লতিকাকে আলিঙ্গন করিলেন । রাজার আলিঙ্গন মাত্রে লতিকা উৰ্ব্বশীতে পরিণত হইল। এই মিলনের পর রাজা ও উৰ্ব্বশী রাজধানী প্রতিষ্ঠান-নগরে গমন করেন । ইহার পর কয়েক বৎসর অতীত হইলে উৰ্ব্বশীর গৰ্ত্তে রাজার এক পুত্র-সন্তান জন্মগ্রহণ করিল। পুত্রের নাম—আয়ু। আয়ুর জন্ম-গ্রহণের পর উৰ্ব্বশী শাপমুক্ত হন ;–ইন্দ্রলোক চলিয়া যান। ইহার পর দৈত্য-দলনে ইন্দ্রের সহায়তার জন্য পুরুরবার প্রতি প্রীত হইয়া ইন্দ্ৰ উৰ্ব্বশী-পুরুরবার পুনৰ্ম্মিলন সংঘটন করিয়া দেন। দৈত্যদমনে বিক্রম-প্রদর্শন হেতু উৰ্ব্বশীকে লাভ করিয়াছিলেন,—এই ঘটনা পরিবর্ণিত আছে বলিয়াই এই নাটকের নাম-বিক্রমোর্কশী’ হইয়াছে। ‘মালবিকাগ্নিমিত্রম’-কাহারও কাহারও মতে কালিদাসের রচনা নহে। অভিজ্ঞান-শকুন্তলোর এবং বিক্রমোর্কশীর সহিত ইহার অনেক সাদৃশু আছে বটে। কিন্তু সে সাদৃশ্বের সঙ্গে সঙ্গে কবিত্বের ফুৰ্ত্তি ও সৌন্দর্ঘ্যের বিকাশ তাদৃশ লক্ষিত হয় না ; তজ্জন্তই ঐ মালবিকাগ্নিমিত্র । নাটককে অপরের রচনা বলিয়া কেহ কেহ প্রচার করিয়া থাকেন । কিন্তু কি অভিজ্ঞান-শকুন্তল, কি বিক্রমোর্কশী, কি মালবিকাগ্নিমিত্র, তিনেরই প্রস্তাবনায় কালিদাসের নাম একইভাবে স্বত্রধারের মুখে উক্ত হইয়াছে। এতদ্বারা তিন গ্ৰন্থই একজনের রচিত বলিয়া সপ্রমাণ হয় । কিন্তু একটু সূক্ষ্মভাবে বিচার করিতে গেলে, মালবিকাগ্নিমিত্রকে রঘুবংশ-শকুন্তলা প্রভৃতি কাব্য-নাটকের রচয়িত মহাকবি কালিদাসের রচনা বলিয়া মনে হয় না। যে যে কারণে বিপরীত ভাব মনে আসে, তাহার কয়েকটার উল্লেখ করিতেছি । প্রথম,—রঘুবংশ-রচয়িতা কালিদাস গ্রন্থ-স্বচনায় যে বিনয়-সৌজন্তের পরিচয় দিয়া গিয়াছেন,— এই ক্ষুদ্র দৃশুকাব্য-প্রণেতা কালিদাসে তাহার সম্পূর্ণ অসম্ভাব লক্ষিত হয়। পরন্তু তিনি এই গ্রন্থের স্বচনায় অহঙ্কারের পরাকাষ্ঠী প্রদর্শন করিয়া গিয়াছেন। রঘুবংশের প্রথম কয়েকট শ্লোক (এই খণ্ডের ২৬১ম পৃষ্ঠায়) দেখুন ; আর মালবিকাগ্নিমিত্রের প্রস্তাবনায় স্থত্রধারেব মুখে গুছুন— “পুরাণমিত্যেব ন সাধু সৰ্ব্বং ন চাপি কাব্যং নবমিত্যবস্তম্। সস্তঃ পরীক্ষান্ততরস্তজন্তে মুঢ়ঃ পরপ্রত্যয়নেয়ৰুদ্ধিঃ ॥” ধাবক, সেমিল্প প্রভৃতি প্রসিদ্ধ-যশঃসম্পন্ন আদি-কবিগণের রচিত নাটককে উপেক্ষা করিয়া কেন মালবিকাগ্নিমিত্রের অভিনয় হইতেছে, তাহারই কারণ-প্রদর্শন ব্যপদেশে সূত্ৰধার ঐ কথা বলিলেন। তিনি কহিলেন,—‘সদসৎবিবেকসম্পন্ন ব্যক্তিগণ সৰ্ব্বপ্রকার দোষগুণ বিচার করিয়া পুরাতন-নূতনের মধ্যে একের আদর করেন। কেবল মুখেরাই পরের কথায় নির্ভর করিয়া পুরাতনের অনুসরণ করে। ভালমন্দ বিচার করিবার ক্ষমতা তাহাদের অতি অন্ন। রঘুবংশ-রচয়িতা কালিদাস মালবিকাগ্নিমিত্র লিখিতে গিয়া যে এরূপ দম্ভের পরিচয় দিবেন, কখনই মনে হয় না । বিশেষতঃ, ধাবকাদি কবি মহাকবি কালিদাসের পরবর্তী বলিরাও কেহ কেহ প্রতিপন্ন করিয়া গিয়াছেন। এরূপ ক্ষেত্রে স্বতঃই মনে হয়,— মালবিকাগ্নিমিত্রের রচয়িত। তবে কোন কালিদাস ? ভোজ-প্রবন্ধ মতে ভোজরাজের সভাসদ