পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\5)e ভারতবর্ষ । মীমাংসকগণের সহিত নৈয়ায়িকগণের বেদ-বিষয়ে বিতর্কের আভাস পূৰ্ব্বেই প্রদান করিয়াছি । কিন্তু ন্যায়দর্শনের প্রবর্তৃক মহর্ষি গৌতম বেদ-বিষয়ে কি সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন, অনুসন্ধান করিয়া দেখিলে তদ্বিষয়েই বা কি অভিজ্ঞতা লাভ ੰ । করি ? “ন্যায়দর্শনের মতে জীবাত্মাতিরিক্ত একজন পরমেশ্বর অাছেন; তাহাব ভোগসাধন শরীর, সুখ-দুঃখ-দ্বেষাদি কিছুই নাই। কেবল নিত্যজ্ঞান, ইচ্ছা ও যত্নাদি কয়েকটা গুণ আছে । তিনি অসাধারণ শক্তিসম্পন্ন ও সমস্ত জগতের কর্তা । এতদ্বিষয়ের প্রমাণ—বেদাদি শাস্ত্র এবং অকুমান । নৈয়ায়িকেরা শব্দের নিত্যত্ব স্বীকার করেন না । সুতরাং মীমাংসকদিগের স্তায় বেদের প্রামাণ্য গ্রাহ করিতে পারেন ন। যে সমস্ত যুক্তি দ্বার। র্তাহারা শব্দ অনিত্য বলিয়া প্রমাণ করেন, তাহার কতকগুলি ইতিপূর্বে উক্ত হইয়াছে।” বেদ-বিষয়ে গোতম আর আর যে তর্ক উত্থাপন করিয়াছেন, এবং পরিশেষে যেরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন,—এস্থলে তাহার আভাস দিতেছি । তিনি তর্ক আরস্ত করিয়াছেন,—“তদপ্রামাণ্যম্ অমৃতব্যাঘাতপুনরুক্তদোষেভ্যঃ ।” বেদ অনিত্য ও অপ্রমাণ ; যেহেতু, ইহাতে অমৃত, ব্যাঘাত এবং পুনরুক্তি দোষ দৃষ্ট হয়। বৃত্তিকার লিখিতেছেন,—“অদৃষ্টার্থক শব্দ বেদ অপ্রমাণ ; কারণ, ইহাতে দোষত্রয় লক্ষিত হয়। প্রথম,—অমৃত অর্থাৎ মিথ্যাকথন ; যথা,—পুত্রেষ্টি যাগাদিতে অনেক সময় ফলের উৎপত্তি দেখিতে পাওয়া যায় না। তদ্ধেতু বেদ-বাক্যের অযথার্থ-কথন । দ্বিতীয়,—ব্যাঘাত অর্থাৎ পূৰ্ব্বাপরবিরোধ। যথা—উদিত কালে হোম করিবে না, এবং অমুদিত কালে হোম করিবে না । তৃতীয়,—পুনরুক্তি দোষ ; অর্থাৎ—এক কথার বারংবার কথন । অতএব বেদ প্রমাণ বলিয়। স্বীকার করা যাইতে পারে না।’ গোতম স্বত্রত্ৰয়ের উক্ত দোষত্রয় নিরাকরণ করিয়াছেন । প্রথমতঃ, কৰ্ম্মকর্তার অযথা-বিধি কৰ্ম্মকরণ প্রভৃতি বৈগুণ্য-প্রযুক্ত যাগ-ফলের অনুপপত্তি দেখিতে পাওয়া যায়। দ্বিতীয়তঃ, অনুদিত কালে হোম করিব অথবা উদিত-কালে হোম করিব,—এইরূপ স্বীকার করিয়া, যে ব্যক্তি তদ্বিপরীত কাৰ্য্য করে অর্থাৎ উদিত-কালে হোম করে অথবা অনুদিত-কালে হোম করে, তাহার পক্ষে উক্ত নিষেধ, সাধারণের পক্ষে নহে । তৃতীয়তঃ, পুনরুক্তি দোষ নহে ; বরং গুণবিশেষ। কারণ, অনেক বিষয় দুই তিন বার না বলিলে, শ্রোতৃবর্গ তাহার তাৎপৰ্য্য গ্রহণ করিতে পারেন না। তজ্জন্য পুনরুক্তি স্থলবিশেষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । সুতরাং বেদের প্রামাণা কোনও প্রকারেই ব্যাহত হইল না। এইরূপ দোষত্রয় প্রত্যাদেশ করিয়া গোতম স্বমত প্রতিপন্ন করিয়াছেন। ‘মন্ত্রায়ুৰ্ব্বেদবৎ চ তৎপ্রামাণ্যং আগু প্রামাণ্যাৎ।' বৃত্তিকার ব্যাখ্যা করিতেছেন—“আঞ্চস্য বেদকর্তৃঃ প্রামাণ্যাৎ যথার্থোপদেশকত্বাৎ বেদস্য তদ্ভূক্তত্বমর্থাংলৰূং। তেন হেতুনা বেদস্ত প্রামাণ্যমনুমেয়ং। তত্র দৃষ্টান্তমাহ। মন্ত্রে বিষাদিনাশকঃ । আয়ুৰ্ব্বেদভাগশ্চ বেদস্থ এব। তত্র সংবাদেন প্রামাণ্যগ্রহাৎ তদৃষ্টাস্তেন বেদত্বাবচ্ছেদেন প্রামাণ্যমনুমেয়ং ।” যেরূপ প্রণেতার উপদেশ যথার্থ বলিয়া আয়ুৰ্ব্বেদ প্রমাণ, তদ্রুপ বেদকৰ্ত্ত যথার্থবাদী বলিয়া বেদের প্রামাণ্য স্বীকার করিতে হইবে। বাৎস্যায়ন ভট্টাচাৰ্য্য তাহার বৃত্তিতে এই সূত্রের অতি সরল ভাষায় পরিস্ফুট ੋਂ