পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য-সম্পং । 8 » ጳ থাকে। তাহারা পরস্পরে যেন পরম্পরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে প্রবৃত্ত হইয়াছে,—এই কথা গোপনে সে পরস্পরকে জানাইরা দেয়। ইহাতে সিংহে ও যণ্ডে ঘোর যুদ্ধ উপস্থিত হয়। যুদ্ধে ষণ্ড পঞ্চত্র লাভ করে। শৃগাল সিংহের মন্ত্রিত্ব-পদ প্রাপ্ত হয়। মিত্রভেদ নামক প্রথম অংশের ইহাই স্থল আখ্যায়িক। পঞ্চতন্ত্রের দ্বিতীয় অংশের নাম—মিত্র-সংপ্রাপ্তি। কচ্ছপ, হরিণ, বায়স এবং মুষিকের প্রসঙ্গে পরস্পর মিত্ৰত স্বত্রে আবদ্ধ হওয়ায় স্বফল প্রদর্শিত হইয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের তৃতীয় অংশ—কাকোলুকীয় । পুরাতন শত্রুর সহিত মিত্রত করার বিষময় ফলের বিষয় এই অংশে বায়ুসপেচকবিগ্রহে প্রতিপন্ন করা হইয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের চতুর্থ অংশের নাম —লব্ধ-প্রণাশ। বানরের ও কুম্ভীরের উপাখ্যানে, চাটুকারিতার বশবৰ্ত্তী হওয়ায় প্রাপ্তধননাশের বিষয় পরিব্যক্ত হইয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের পঞ্চম অংশের নাম—-অপরীক্ষিতকারক । এই ংশে অবিমূন্যকারিতার বিষময় ফল পরিবর্ণিত আছে। বুদ্ধির দোষে অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করায়, ক্ষৌরকারের অবস্থা-বিপৰ্য্যয়-প্রসঙ্গে এই তত্ত্ব বিশদীকৃত করা হইয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের গল্প-সমূহে বিভিন্ন জীবজন্তুকে ময়ূন্যের স্তায় শক্তিসম্পন্ন কল্পনা করিয়া লইয়া কবি আখ্যায়িকা-সমূহ বিবৃত করিয়াছেন। পঞ্চতন্ত্রে যে সকল গল্পের ও নীতি-কথার অবতারণা আছে, কেহ কেহ মনে করেন, সেগুলি বৌদ্ধদিগের জাতক.গ্ৰন্থ-সমূহের ভাব অবলম্বনে রচিত হইয়াছিল। জাতক-গ্রন্থে বুদ্ধদেবের পূর্ব পূৰ্ব্ব জন্মের বিবরণ গল্পছলে বিবৃত আছে ; আর সেই সকল গল্পে সন্নীতি-থ্যাপন উদ্দেশু্যে পশুপক্ষিকীটপতঙ্গ প্রভৃতির মনুষোচিত । কাৰ্য্যকারিতার বিষয় পরিবর্ণিত হইয়াছে। ৩৮০ পূৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দে বৈশালী নগরে বৌদ্ধ-সম্মিলনে জাতক-গ্রন্থের বহু গল্প সংগৃহীত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই সকল কাহিনী পঞ্চম , শতাব্দীর প্রারম্ভে বা মধ্যভাগে পালি-ভাষায় ‘স্বত্তপিটক’ গ্রন্থের অন্তনিবিই হয়। চীনা-ভাষার একখানি প্রাচীনতম কোষ গ্রন্থে (এনসাইক্লোপিডিয়া ) ভারতবর্ষে প্রচারিত এইরূপ অনেক গল্প অনুবাদিত আছে। ঐ কোষ-গ্ৰন্থ ৬৬৮ খৃষ্টাব্দে চীনা-ভাষায় সঙ্কলিত হয়। তাহতে প্রকাশ,—দুই শত দুই খানি বৌদ্ধগ্রন্থ হইতে ঐ প্রকার গল্প সংগ্রহ করা হইয়াছিল। এই সকল হেতুবাদে অর্থাৎ ঐ প্রকার গল্প অনেক প্রাচীনকালে বৌদ্ধগ্রন্থের অন্তর্নিবিষ্ট ছিল বলিয়া পঞ্চতন্ত্রকে বৌদ্ধগ্রন্থ-সমূহের অনুসরণ বলা হইয়া থাকে। পঞ্চতন্ত্রকার গল্পের মধ্যে ব্রাহ্মণ্য-প্রভাব অক্ষুণ্ণ রাখিবার উদ্দেন্তে স্থান-বিশেষ পরিবর্তন ও পরিবর্জন করিয়া গিয়াছেন এবং অংশ-বিশেষ নূতন সংযোগ করিয়াছেন বলিয়াই উহা অভিনব মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়া আছে। কিন্তু এ সকল কল্পনা মাত্র। ইহাই গ্রামাণ্য বলিয়া গ্রহণ করা যাইতে পারে না । পঞ্চতন্ত্র এখন যদিও পাঁচ ভাগে বিভক্ত ; কিন্তু বহু পূৰ্ব্বে উহা বার ভাগে বিভক্ত ছিল। আরও, এই গ্রন্থের নাম প্রথমে পঞ্চতন্ত্র ছিল কি ন,—তদ্বিষয়ে নানা সংশয়-প্রশ্ন উঠিয়া থাকে। করতক ও দমনক শৃগালদ্বয়ের নামায়সারে ঐরূপ একটা কিছু নাম থাকার বিষয় কেহ কেহ অনুমান করেন। তাহদের যুক্তির প্রধান ভিত্তি—সিরীয়-দেশের ভাষায় ঐ গ্রন্থ ‘কালীয়াগ ও দমনাগ নামে এবং আরবী-ভাষায় "কালিল-উদিমনা’ নামে পরিচিত আছে। বৈদেশিক ভাষায় পঞ্চস্তম্বের ংশ-বিশেষ প্রোক্ত নামে প্রচলিত হইয়াছিল বলিয়াই যে উছার পঞ্চতন্ত্র নাম গোপ করিয়া ઇશદ૭