পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈব স্বত মন্ধ স্তরের রাজপ্তবর্গ । \రినీ অনেকে গ্রীক গণকে ‘যবন বলিয়। নির্দেশ করিতেছেন । কিন্তু যবনগণের উৎপত্তির বিষয় আলোচনা করিলে, তাহারা যে এই ভারতবর্ষ হইতে তথায় গিয়া উপনিবেশ স্থাপন করিয়া প্রতিষ্ঠাপন্ন হইয়াছিলেন, তাহা বুঝিতে পারা যায়। আমরা সূৰ্য্যবংশের এবং চন্দ্রবংশের প্রধান প্রধান নৃপতিগণের সংক্ষিপ্ত পরিচয় যথাস্থানে প্রদান করিয়াছি । তাহাতেই তাহা বিবৃত হইয়াছে। সে সকলের পুনরুল্লেখ বাহুল্য মাত্র । তবে কোন বংশের কোন নৃপতি কোন সময়ে ভারতবর্ষে তথা পৃথিবীতে একছত্র প্রভাব বিস্তার করিয়াছিলেন, ভারতের ইতিহাস সঙ্কলন করিতে হইলে, তাহার একটু আভাস প্রদান করা বোধ হয় আবশুক । কিন্তু সেই একছত্র-প্রভাবের বিষয় অনুধাবন করিবার কি পরিচয়-চিহ্ন শাস্ত্ৰ-মধ্যে নিহিত আছে ? অশ্বমেধ-রাজস্য প্রভৃতি যজ্ঞ ভারতীয় নৃপতির একছত্র-প্রভাবের পরিচয় খ্যাপন করে । স্বৰ্য্যবংশে দেখিতে পাই,—পৃথু, মান্ধাত, সগর, দীলিপ, রঘু, দশরথ, ঐরামচন্দ্র, অম্বরীষ, নহুষ প্রভৃতি নৃপতিগণ অশ্বমেধ বা রাজস্থয় যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়া দিকে দিকে আপনাদের বিজয়-পতাকা উডডীন করিয়াছিলেন। পৃথু পৃথিবীর আধিপত্য লাভ করেন। র্তাহার নামানুসারে পৃথিবী নামের উৎপত্তি । পৃথু শত অশ্বমেধ যজ্ঞ সম্পন্ন করিয়া যশস্বী হইয়াছিলেন । শাস্ত্রে আছে,—তিনি গোরূপ। পৃথিবীকে দোহন করিয়াছিলেন । অর্থাৎ,--তিনি পৃথিবীর সকল দেশের সকল নৃপতিকে করদ নৃপতি মধ্যে গণ্য করিয়া র্তাহাদের নিকট হইতে কর-গ্রহণে সমর্থ হইয়াছিলেন । মান্ধাতা দিগ্বিজয়ে বহির্গত হইয়া বহু দেশ জয় করেন। সসাগর। পৃথিবী জয় করিয়া, তিনি অমরাবতীতে উপস্থিত হইয়াছিলেন। সেখানে দেবগণের চক্রান্তে লবণ শূলে আহত হইয়া মান্ধাত প্রাণত্যাগ করেন। সগর, দীলিপ, রঘু, শ্রীরামচন্দ্ৰ—ইহঁার প্রত্যেকেই অশেষ প্রতিষ্ঠা-সম্পন্ন। রামায়ণে এবং প্রত্যেক পুরাণে ইহঁদের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হইয়াছে। রামায়ণ-প্রসঙ্গে এতদ্বিষয় যথাসম্ভব বিস্তৃতভাবে আলোচনা করিয়াছি । * যেমন স্থৰ্য্যবংশে তেমনি চন্দ্রবংশে, এক এক সময়ে এক এক জন মহাপুরুষের আবির্ভাব হইয়াছিল। র্তাহারাও এক এক জন দিকৃপাল-রূপে দিকে দিকে আপনাদের আধিপত্য বিস্তার করিয়াছিলেন । যযাতি, পুরু, কুরু, ভরত, যদু, যুধিষ্ঠির প্রভৃতির প্রভাব শাস্ত্ৰ শতমুখে কীৰ্ত্তন করিয়াছেন। এই ভারতবর্ষ নামের প্রবর্তনা—রাজ-চক্ৰবৰ্ত্তী ভরত হইতে । যুধিষ্ঠিরাদির প্রতাপের বিষয় কাহারও অবিদিত নাই। আমরা সে বিষয় মহাভারত প্রসঙ্গে পূৰ্ব্বেই প্রকাশ করিয়াছি। ” চন্দ্রবংশের অন্তর্গত যদুবংশেই কৃষ্ণ-বলরাম জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। শাস্ত্র-গ্রন্থ আলোচনা করিলে যদিও প্রতিপন্ন হয়,–চন্দ্রবংশ ও সূর্য্যবংশ দুই বংশেরই অভু্যদয় ভারতে সমসময়ে সংঘটিত হইয়াছিল ; কিন্তু সূৰ্য্যবংশ অর্থাৎ মকুর পুত্ৰগণের, বংশই প্রথমে সাৰ্ব্বভৌম সম্রাট-পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। র্তাহাদের প্রভাব-প্রতিপত্তির সময়ে চন্দ্রবংশের কোনও নৃপতি ভারতে একছত্র প্রভাব-বিস্তারে কচিৎ সমর্থ হইয়াছিলেন। ত্রেতায় স্থৰ্য্যবংশেরই একছত্র প্রভাব ছিল। স্বাপরের শেষভাগে চন্দ্রবংশীয়দিগের প্রতিষ্ঠার দিন উপস্থিত হয়। কলির প্রারম্ভ পৰ্য্যস্ত চন্দ্রবংশের শাখা-প্রশাখাই ভারতে রাজত্ব করিয়াছিলেন। * পৃথিবীর ইতিহাস, প্রথম খণ্ড, উনবিংশ ও বিংশ পরিচ্ছেদরে রামায়ণ ও মহাভারত প্রসঙ্গ অষ্টব্য।