পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈবস্বত মস্ব স্তরের রাজস্থ্যবৰ্গ । 8 * কুরুক্ষেত্রের মহাসমরে ভারতের ভাগ্য-বিপর্যায়ের বিষবীজ প্রোথিত হয় । সূৰ্য্যবংশের প্রভাব তাহার পূৰ্ব্বেই বিলুপ্ত হইয়াছিল। তখন চন্দ্রবংশেরই শাখা-প্রশাখা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দ্বেষান্বিত হইয়া মহাসমরে প্রবৃত্ত হন । সেই সমরে—কুরুক্ষেত্রের কাল ੰ সমরে—ভারতবর্ষ বীরহীন হইয় পড়ে। ভারত-জননী আপন বীর সন্তানদিগকে একে একে কালকবলে সমৰ্পণ করেন । ভারতের যে প্রদেশে যেখানে যে বীরপুরুষ ছিলেন, সকলেই সেই যুদ্ধে কোন-না-কোনও পক্ষে যোগদান করিয়াছিলেন। পাণ্ডবগণ কুরুক্ষেত্রের মহাসমরে জয়লাভ করিলেন বটে ; কিন্তু সূক্ষ-দৃষ্টিতে দেখিতে গেলে, সে জয়ও পরাজয়-বিশেষ । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরে তাহারা নিশ্চয়ই হীনবল হইয়া পড়িয়াছিলেন । তবে পাণ্ডবগণ যত দিন জীবিত ছিলেন, আপনাদের অদ্বিতীয বাহুবলে আপনাদিগের প্রভাব-প্রতিপত্তি অব্যাহত রাখিয়াছিলেন । কিন্তু তঁহাদের তিরোধানের অল্পদিন পরেই কেন্দ্রীভূত রাজশক্তি বিচ্ছিন্ন হইয় পড়ে। তখন ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বাধীন নৃপতিগণের অভু্যদয় হয়। তখন কেহই আর সমগ্র ভারতসাম্রাজ্যে একছত্র প্রভাব বিস্তার করিতে সমর্থ হম না। পরন্তু যে সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজশক্তির অভু্যদয় হয়, তাহার ও পরম্পর ঈর্ষাদ্বেষে বিবাদ-বিসম্বাদে প্রবৃত্ত হন । যাদবগণ দ্বারকপ্রদেশে এবং জরাসন্ধের পুত্ৰগণ মগধু-দেশে, পরীক্ষিতের বংশধরগণ হস্তিনায়,—এইরূপ মান বংশের ধরন্ধরগণ নানা দেশে স্বস্বপ্রধান হইয় উঠেন। তখন দাক্ষিণাত্যের বিভিন্ন জনপদে বিভিন্ন রাজ-শক্তির অভু্যদয় হয় ; আর্ষাবৰ্ত্তের বিভিন্ন জনপদে বিভিন্ন রাজশক্তি মস্তক উত্তোলন করেন । কুরুক্ষেত্রের মহাসমরের পর কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বাধীন রাজ্যে ভারতবর্ষ বিভক্ত হইয়াছিল, তাহার ইয়ত্ত হয় না। রাজপুতানার প্রতি দৃষ্টিপাত করুন, তাহার পরিচয়-চিহ্ন আজিও কিছু কিছু প্রত্যক্ষীভূত হইবে । রাজপুতানার স্বাধীন নৃপতিগণ কেহ আপনাদিগকে চন্দ্রবংশীয, কেহ আপনাদিগকে সূর্য্যবংশীয় বলিয়া পরিচয় দিয়া থাকেন। তাহাতে সেই বিচ্ছিন্নতার স্মৃতিই জাগরুক হয় না কি ? মৌর্য্যবংশ, সুঙ্গবংশ, কশ্ববংশ, অন্ধ্রবংশ প্রভৃতির অভু্যদয় কুরুক্ষেত্র-যুদ্ধেরই অবশুম্ভাবী ফল ভিন্ন অন্ত আর কি নির্দেশ করিতে পারি ? ফলতঃ, কুরুক্ষেত্রের মহাসমরের পর, অনেক দিন পৰ্য্যস্ত, ভারতের রাজ-শক্তি বিছিন্ন-ভাবে অবস্থিত ছিল। পরিশেষে বৌদ্ধ-নৃপতিগণের অভু্যদয়ে আর একবার ভারত-গগন ভারতীয় নৃপতিগণের গৌরব-প্রভায় উদ্ভাসিত হইয়াছিল। কিন্তু প্রাচীন-ভারতের গৌরব-সন্ত্রমের তুলনায় সে যেন মেঘাচ্ছন্ন আকাশে ক্ষীণ বিষ্ক্যদ্বিতা-বিকাশ মাত্র । কুরুক্ষেত্র মহাসমরের পর, বিচ্ছিন্ন রাজ-শক্তির পরম্পর বিবাদ-বিসম্বাদের অবসর পাইয়া, বৈদেশিকগণ ভারতাভিমুখে অগ্রসর হইতে আরম্ভ করেন । কিন্তু বৈদেশিকগণের ভারতাগমনের যে কোনও পরিচয়-চিহ্ন দেখিতে পাই, তাহা কুরুক্ষেত্ৰ-মহাসমরের বহু পরবৰ্ত্তি-কালের ঘটনা বলিয়া বুঝিতে পারি। কুরুক্ষেত্রমহাসমরের পর দুই সহস্ৰ বৎসরের মধ্যে সে পরিচয় কিছুই পাওয়া যায় না। এমন কি, কোনও দেশের উপকথার মধ্যেও তেমন কোনও প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয় নাই। sưusạ# 8 ॐ ! ७