পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যে-ইতিহাস । 8y, a সমর্থ হন । তিনিই প্রথম বৈদিক সংস্কৃতকে ইউরোপের জনসাধারণের বোধগম্য করিয়৷ প্রকাশ করেন। তাহারই আদর্শের অনুবর্তী হইয়া জৰ্ম্মণ পণ্ডিতগণ বিভিন্ন ভাষার সাদৃশু তত্ত্ব-নিরূপণে প্রবুদ্ধ হইয়াছিলেন। রোথ এবং ম্যাক্সমুলার প্রমুখ পণ্ডিতগণ র্তাহারই ছাত্র বলিয়া পরিচিত। ১৮১৯ খৃষ্টাব হইতে ১৮৫২ খৃষ্টাজ পৰ্য্যস্ত বামুফ বৈদিক সাহিত্যালোচনায় যশস্বী হইয়াছিলেন । এই বানুফেরই সমসময়ে ডক্টর (হোরেস হেমান ) উইলসন সংস্কৃত-ভাষার চর্চায় প্রসিদ্ধি-লাভ করেন। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংস্কৃত-সাহিত্যের অধ্যাপক। ১৮৫০ খৃষ্টাৰে তিনি ঋগ্বেদের অনুবাদ-কার্য্যে ব্ৰতী হন। বিষ্ণুপুরাণের ইংরাজী অনুবাদে এবং কতকগুলি সংস্কৃত-গ্রন্থের ও মেঘদূতের অনুবাদে তিনি যশস্বী হইয়া আছেন । ইহার পর যাহারা সংস্কৃত-সাহিত্যের আলোচনায় ইউরোপে প্রসিদ্ধিসম্পন্ন হইয়াছেন, তাহাদের মধ্যে গ্রিম, হামবোণ্ট, হুইটনে, বোথলিং, লাসেন, বেনফি, মুইর, কুন, বুলার, কেলহৰ্ণ, প্রিন্সেপ, চৌগ, ৰাৰ্ণেল প্রভৃতি সমধিক প্রসিদ্ধিসম্পন্ন। বোপ, গ্রিম, হামবোণ্ট প্রভৃতি পণ্ডিতগণ ভারতীয় ও ইউরোপীয় ভাষা-সমূহের সাদৃশু প্রদর্শন ব্যপদেশে সংস্কৃত, জেন্দ, গ্ৰীক, লাটিন, প্লাব, টিউটন ও কেণ্টিক ভাষার বহু শব্দ আলোড়ন করিয়া, একই আদি-ভাষী হইতে ঐ সকলের উৎপত্তি হইয়াছে বলিয়া নিৰ্দ্ধারণ করেন। প্রথমে ইউরোপের জনসাধারণের মনে ৰিশ্বাস ছিল, লাটিন ও গ্রীক ভাষা হইতেই অদ্যান্ত ভাষার উৎপত্তি । কিন্তু পূৰ্ব্বোক্স পণ্ডিতগণের গবেষণা প্রভাবে তাঁহাদের সে ধারণা অন্তষ্ঠিত হয়। হুইটনে এবং বোথলিং সংস্কৃত ভাষার অভিধান-সঙ্কলনে প্রসিদ্ধি-সম্পন্ন হন । লাসেল তাহার প্রসিদ্ধ গ্রন্থে ভারতবর্ষের সাহিত্য সম্বন্ধে বিবিধ গবেষণা প্রকাশ করেন । তাহার পর ব্রাহ্মণ ও স্বত্র সহ শুক্লযজুৰ্ব্বেদ প্রকাশে ওয়েবার যশস্বী হন। বেনফি অনুবাদ সহ সামবেদ প্রকাশে, মুইর বিবিধ সংস্কৃত গ্রন্থের মূলাংশ প্রকাশে প্রসিদ্ধি-লাভ করেন। পরিশেষে ম্যাক্সমুলার সংস্কৃত সাহিত্যালোচনার জন্য অশেষ যশোভাজন হন। ১৮৫৯ খৃষ্টাব্দে তিনি সমগ্র সংস্কৃত সাহিত্যের পৌৰ্ব্বাপৌর্য্যের পরিচয় প্রদান করেন। সায়ণের টীকা সহ ঋগ্বেদ-সংহিতা-প্রকাশে এৰং ভাষা, ধৰ্ম্ম ও পুত্বাবৃত্ত সম্বন্ধে গবেষণায় তিনি অদ্বিতীয় খ্যাতিলাভ করিয়া আছেন। এই সকল পণ্ডিতের দ্বারাই এখন সংস্কৃত সাহিত্যের আদর বহুগুণে পরিবদ্ধিত হইয়াছে। ফলতঃ, এখন ইউরোপে ংস্কৃত-সাহিত্যের যেরূপভাবে আলোচনা হইয়াছে, সংস্কৃত- জন্মভূমি এই ভারতবর্ষে উহার সেরূপ চর্চ মার দেখিতে পাই না। এমন অনেক সংস্কৃত-গ্রন্থ ইংরাজী ভাষায় ও জৰ্ম্মণ ভাষায় অনুবাদিত হইয়াছে, ভারতবর্ষে যাহার মূল গ্রন্থ পৰ্যন্ত লোকলোচনের অন্তরালে রহিয়া গিয়াছে। শুভক্ষণে এ দেশে ইংরেজের আগমন হইয়াছিল ! তাক ন হইলে, ষে একটু ধূলিগুড়া এখন কুড়াইয়া পাইতেছি, তাহাও হয় তো খুজিয়া পাইতাম না। ভারতের কোথায় কি আছে, কি ভাবে লোপ পাইতে বসিয়াছে,—এ কালের মধ্যে ইংরেজই প্রথমে তাহার অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হন। তাহার পর অন্যান্য বৈদেশিক-জাতির দৃষ্টি পড়ে। তাঙ্কাদের অনুসরণে এখন আমাদের তৎপ্রতি একটু একটু দৃষ্টি পড়িয়াছে। এই দৃষ্টি একটু তীক্ষ না হইলে,—অতীত গৌরবের স্মৃতি উজ্জ্বল করিয়া রাখিবার জন্য প্রাণ না কাদিলে, শ্রেয়ঃ নাই—মঙ্গল নাই । 藝 蔡 畿