পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

響, ... •. 8“○ ভারতবর্ষ। করেন। শিশুবয়স হইতেই ইগর ভগবস্তুক্তি প্রকাশ পায়। ইহার জ্যেষ্ঠতাতদ্বয় রূপ ও সনাতন ঘথন গোড়ে হুসেন সাহের মন্ত্রিপদে অধিষ্ঠিত, শিশু শ্ৰীজীব অশেষ আদরে প্রতিপালিত চুইতেছিলেন। রূপ ও সনাতন যখন সংসার ত্যাগ করেন, ক্রীবের তখন একান্ত শৈশবাবস্থা । রূপ-সনাতনও সংসারত্যাগী হইলেন, শিশুও বেশভূষা পরিত্যাগ করিল। বৈষ্ণব কবির কবিতায় শ্রীজীব গোস্বামীর তাৎকালিক অবস্থার এইরূপ পরিচয় পরিদৃষ্ট হয়,— “নানার ভূত্ব পরিধেয় স্বক্ষ বাস। অপূৰ্ব্ব শয়ন শয্যা ভোজন বিলাস ॥ এ সব ছাড়িল কিছু নাহি ভয় চিতে । রাজ্যাদি বিষয় বার্তা না পারে শুনিতে।” ইহার পর বালক শ্ৰীজীব কৃষ্ণকথায় উন্মত্ত হইয় রছিলেন। তাহার ক্রীড়ায় খ্ৰীকৃষ্ণ, কৌতুকে শ্ৰীকৃষ্ণ -ভ্ৰীকৃষ্ণ ভিন্ন তিনি আর কিছুই জানিতেন না। কবির বর্ণনায় শ্ৰীকৃষ্ণগত প্রাণ শ্ৰী জীব গোস্বামীর সেই ভাব এইরূপ পরিব্যক্ত দেখিতে পাই,— “অল্প বয়সেতে অতি গভীর অন্তর । শ্ৰীমদ্ভাগবত জানে প্রাণের সোসর। সদা কৃষ্ণকথা-সুখ-সমুদ্রে সাতারে । অন্ত কথা কেহ ভয়ে কহিতে না পারে । শ্ৰীজীব বালককালে বালকের সনে। শ্ৰীকৃষ্ণ সম্বন্ধ ভিন্ন থেলা নাহি জানে ॥ কৃষ্ণ বলরাম মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া। করিতেন পূজা পুষ্প চন্দনাদি দিয়া ৷ বিবিধ ভূষণ বাস্ত্র শোভা অতিশয় । অনিমিষ নেত্ৰে দেখি উল্লাস হৃদয় ॥ কনক পুতলি প্রাস পড়ি ক্ষিতিতলে । করিতে প্রণাম সিক্ত হইত। নেত্রজলে । বিবিধ মিষ্টান্ন অতি যত্নে ভোগ দিয়া । ভুঞ্জিতেন প্রসাদ বালকগণে লইয়া ॥ কৃষ্ণ বলরাম বিনা কিছুই না ভায় । একাকীও দোহে লইয়া নির্জনে খেলায় ॥ শয়ন সময়ে দোহে রাখয়ে বক্ষেতে। মাতা পিতা কৌতুকেও না পারে লইতে।” বাল্যকালে যিনি এমনভাবে ভগবচ্চিস্তায় বিভোর হন, বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাহার সে ভাব কিরূপ পরিস্ফুট হয়, সহজেই বুঝিতে পারা যায়। শৈশবে মাতৃবিয়োগ হইয়াছিল ; শৈশবেই সংসার-বন্ধ:নর দৃঢ়-শৃঙ্খল জ্যেষ্ঠতাতদ্বয় সংসারত্যাগী হইয়াছিলেন। দেখিতে দেখিতে পিতা বল্লভও গঙ্গালাভ করিলেন। ঐ জীবের পথ প্রশস্ত হইল। এই সময় স্বপ্নে তিনি গৌর-নিতাইকে দেখিতে পাইলেন –দেখিলেন, যেন কৃষ্ণ-বলরাম মূৰ্ত্তিমান । “হইল প্রত্যক্ষ পৰ্ভু কৃষ্ণ বলরাম । শুাম-গুরু রূপ দোহে আনন্দের ধাম ॥ দোহার অদ্ভুত বেশ কদর্পমোহন। অঙ্গের ভঙ্গিতে মত্ত করে ত্রিভুবন ॥ এবে দোহে দেখি পুনঃ দেখে গৌরবর্ণ। ঝলমল করয়ে জিনিয়া শুদ্ধ স্বর্ণ। দুহু অঙ্গ-সৌরভে ব্যাপিল ত্রিভুবন । তাহে ধৈর্য্য ধরে এছে নাছি কোন জন ॥ । স্ত্রজীবের মনে মহা হৈল চমৎকার । অনিমিষ নেত্রে শোভা দেখয়ে দোহার ॥ ভাসয়ে দীঘল চুটী নয়নের জলে । লোটাইয়া পড়ে দুই প্রভু পদতলে ॥ করুণ সমুদ্র গেীর নিতানন্দ রায়। পাদপদ্ম দিলেন শ্ৰীজীবের মাথায় ।” - এই স্বপ্ন-দর্শনের পর শ্ৰীজাব আর গৃহে থাকিতে পারিলেন না ;-কৃষ্ণ-প্রেমে উম্মাদ হইয় হি। গৌর-হা কৃষ্ণ কহিতে কহিতে নবদ্বীপাভিমুখে অগ্রসর হইলেন। শ্ৰীধাম নবদ্বীপে গৌরচন্দ্রর সাক্ষাৎলাভ ঘটিল। হৃদয়ের সকল অন্ধকার চৈতন্যচক্রের বিমল বিভায় বিদূরিত হইল।