পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిచిన ভারতবর্ষ । দুষ্মন্ত শকুন্তলার পরিণয়-প্রার্থী হইলেন। শকুন্তলার চিত্ত রাজাকে দর্শনাবধি রাজার প্রতি আকৃষ্ট হইয়াছিল । দুই চারি বার বাদ-প্রতিবাদের পর, দুষ্মন্তের সহিত শকুন্তল। পরিণয়-সূত্রে আবদ্ধ হইলেন । পরিণয়-গান্ধৰ্ব্ব-মতে সম্পন্ন হইল। বিবাহের পর, রাজ। দুষ্মন্ত কিছুদিন ঋষির আশ্রমে অবস্থান করিলেন । এই সময়ে রাজা শকুন্তলাকে একটা অঙ্গুরী প্রদান করেন । রাজচিহ্ন-সমন্বিত সেই অঙ্গুরী রাজা দুষ্মন্তের সহিত শকুন্তলার পরিণয়ের নিদর্শন-মধ্যে গণ্য হয় । রাজধানীতে প্রত্যাবৰ্ত্তন-কালে রাজা শকুন্তলাকে অচিরাৎ রাজধানীতে লইয়। যাইবেন,—এইরূপ বলিয়া যান । রাজা দুষ্মন্ত প্রস্থান করিলে, শকুন্তলা তাহার চিন্তায় ব্যাকুল হইলেন। আবার কতদিনে কখন তাহার সাক্ষাৎ পাইবেন,—এই দুশ্চিন্তায় শকুন্তলার বাহ্যজ্ঞান একরূপ বিলুপ্ত হইল। এই সময়ে সহসা দুৰ্ব্বাস। ঋষি আশ্রমে আতিথ্য-গ্রহণে উপস্থিত হইলেন ! নেপথ্যে ঋষিকণ্ঠ কহিল,-“অয়মহং ভে ;”—“দ্বারে অতিথি ; আশ্রমবাসী, অতিথি-সৎকার কর । দুষ্মন্তের চিন্তায় অনন্তমন) শকুন্তলা ঋষির সে স্বর শুনিতে পাইলেন না। ঋষি অবমাননা বোধ করিলেন ; সঙ্গে সঙ্গে অভিসম্পাৎ দিলেন ; নেপথ্যে ধ্বনিত হইল,—“বিচিন্তয়ন্তী যমনন্তমানস তপোনিধিং বেৎসি ন মামুপস্থিতম্। ক্ষরিষ্ঠতি ত্বাং ন স বোধিতেহপি সন কথাং প্রমত্ত প্রথমং কৃতামিব ॥” “কি আম্পৰ্দ্ধা ! আমি অতিথি, স্বারে উপস্থিত । আমাকে তুই অবমাননা করিলি ! তুই যে পুরুষকে অনন্তমনে চিন্ত করিতে কবিতে অতিথি-রূপে উপস্থিত এই তপস্বীকে জানিতে পারিলি না, তাহার ফল নিশ্চয় পাইবি ! মদ্যপ ব্যক্তি যেমন অব্যবহিত-পূৰ্ব্বেউচ্চারিত প্রথম বাক্য স্মরণ রাখিতে পারে না, তোর প্রিয় ব্যক্তি ও সেইরূপ তোর বিবয় আর স্মরণ করিবে না । ’ ঋষির এই অতিসম্পাৎ শকুন্তলার কর্ণে প্রবেশ করিল না বটে ; কিন্তু তাহার সর্থীদ্বয় তাহ জানিতে পরিলেন । অনসূয়। ঋষির অসুসরণ করিয়া চরণে ধরিয়া কত মিনতি করিলেন । কিন্তু দুৰ্ব্বাস। কিছুতেই প্রত্যাবৃত্ত হইলেন না। তবে অনসূয়ার একান্ত অকুনয়ে ঋষি বলিয়া গেলেন —“আমার বাক্য কখনই লঙ্ঘন হইবে না। তবে কোনও আভরণ-রূপ অভিজ্ঞান দেখাইতে পারিলে, এই অভিসম্পাতে শকুন্তলা মুক্তিলাভ করিবে ।’ এই বলিয়াই ঋষি অস্তৰ্হিত হন । ঋষির আগমন বা অভিসম্পাত যদিও নাটকে সাক্ষাৎ-ভাবে প্রদর্শিত হয় নাই ; যদিও নেপথ্যে অভিসম্পাত হয় এবং পরিশেষে অনসূয়া ও প্রিয়ম্বদার কথোপকথনে ঋষির রোষের বিষয় প্রকাশ পায় ; কিন্তু দুৰ্ব্বাসার এই অভিসম্পতেই নাটকের মেরুদণ্ড, এই অভিসম্পাতের ফলেই নাটকের গতি ভিন্ন পন্থ পরিগ্রহ করে, এই নেপথ্যে-সংঘটিত ঘটনাই নাটকের নাটকত্ব । রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলার অঙ্গুলিতে যে অঙ্গুরীয়ক পরাইয়া দিয়া যান, রাজার নামাঙ্কিত সেই অঙ্গুরীয়কট ঋষি-কথিত অভিজ্ঞানের কাজ করিবে, এই মনে করিয়াই তখন সর্থীদ্বয়ের চিত্ত প্রবুদ্ধ হইল। তবে শকুন্তলাকে তাহার সে দুঃসংবাদের বিষয় কিছুই জ্ঞাপন কৱিলেন না। কেন-না,— “কে। দাব উaোদএণ ণোমালিক্সং সিঞ্চদি ।” কোন ব্যক্তি উঞ্চোদক দ্বার। নবমালিকাকে সেচুল করিয়া থাকে ? এই বলিয়। সখীদ্বয় সে ঘটনা অন্তরে রাখিয়া দিলেন। যেমন দুখন্তের অভিসম্পাত, তেমনই অঙ্গুরীয়ক অভিজ্ঞান—এই দুই ঘটনাই নাটকের প্রাণভূত।