পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য-সম্পং । 心8冷 হইয়াছে। শ্লোকোক্ত মকরধ্বজেন’, ‘মখনং, বহমাগগাং, বোলুং, ‘ভাৰকুটিলাং, কৃষ্ণকণ্ঠগ্রহং,—এই কয়েকট শব্দের অর্থ উপলব্ধি করিলেই শ্লোকের দ্ব্যর্থভাব অনুভূত হইবে । ‘মকরধ্বজ শব্দে–মদন এবং সমুদ্র অর্থ সুচিত হয় । ‘মথন’ শব্দে–বিনাশ এবং মন্থন বুঝায়। পুৰ্ব্বকালে মকরধ্বজ তোমার কর্তৃক মথন প্রাপ্ত হইয়াছিল বলিলে, মহাদেব কর্তৃক মদন-ভশ্নের ও বিষ্ণু কর্তৃক সমুদ্ৰ-মন্থনের স্মৃতি যুগপৎ মনোমধ্যে উদয় হয় । সুতরাং ঐ বাক্যে বিষ্ণুকেও স্তব করা যায়, আবার উহা মহাদেবের স্তবরূপেও প্রযুক্ত হইতে পারে। এইরূপ ‘বহুমার্গগাং’ শব্দে গঙ্গা ও সরস্বতী এবং বোনু শব্দে ধারণ ও বিবাহ অর্থ হুচিত হয়। তাহাতে শিবপক্ষে গঙ্গাকে মস্তকে ধারণ এবং বিষ্ণুপক্ষে সরস্বতীর পাণিগ্রহণ অর্থউপলব্ধি হইতে পারে। ‘ভাবকুটিলাং" শব্দে শিবপক্ষে স্বভাবতঃ বক্র এবং বিষ্ণুপক্ষে ‘অভিপ্রায় দুজ্ঞে প’ অর্থ স্থচিত হয় । ‘কৃষ্ণকণ্ঠগ্রহং একবার কৃষ্ণকণ্ঠ ও গ্রহ এই ফুই শব্দ স্বতন্ত্রভাবে এবং অন্তবার ‘কৃষ্ণ’ ও ‘কণ্ঠগ্রহ’ এই দুই শব্দ স্বতন্ত্রভাবে গ্রহণ করিয়া অর্থ করিলে, প্রথম দুই শব্দে সিতিকণ্ঠ-শিব ও আগ্রহ অর্থ এবং শেষ দুই শব্দে ‘কৃষ্ণ’ সম্বোধনসুচক ও কণ্ঠগ্রহ’ ‘কণ্ঠলিঙ্গন’ ভাব উপলব্ধি হয়। শ্লোকে বলা হইতেছে,—“যাহার উক্তবিধ পরিচয় শুনিলে পাৰ্ব্বতী বা লক্ষ্মী রুষ্ট হন, তিনিই তোমাদিগকে পরিত্রাণ করুন। ইহাই শেষ পংক্তির অর্থ। প্রথম তিন পংক্তিতে তাহার সেই পরিচয় আছে। পরিচয় এই যে, পূৰ্ব্বকালে মকরধ্বজ তোমার কর্তৃক মথন প্রাপ্ত হইয়াছিল। তুমি বহুমার্গগাকে বহন কর, সেই ভাবকুটিলার অনুনয় কর, ( কৃষ্ণকণ্ঠ । ) তুমি তাহার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ কর অথবা ( হে কৃষ্ণ ! ) তাহার কণ্ঠলিঙ্গন পরিত্যাগ কর। এইরূপ দ্ব্যর্থমূলক আরও অনেক কবিতা রত্নাবলীতে দেখিতে পাওয়া যায়। কবিত্ব ও উপমা সৌন্দর্য্য নাটকে বহুল দৃষ্ট হয়। কয়েকটা দৃষ্টান্ত— “তীব্ৰঃ স্মরসস্তাপে ন তথাদেী বাধতে যথাসন্নে তপতি প্রাবৃষি নিতবামভাণজলাগমো দিবসঃ ” রাজা উৎকষ্টিত-চিত্তে সাগরিকাৰ আগমন প্রতীক্ষা করিতেছেন ! সমাগমের সময় যতই নিকটবৰ্ত্তী, চিত্তচাঞ্চল্য ততই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত । কবি তাই বলিতেছেন,—মদনের তীব্র তাপ অপেক্ষাও আসন্ন-মিলন চিত্তকে অধিকতর উদ্বিগ্ন করে । বারিবর্ষণেব অব্যবহিত পূৰ্ব্বে বর্ষাকালে গ্রীষ্মের উত্তাপ যেমন বুদ্ধি পায়, আসন্ন-মিলনের সন্তাপও সেইরূপ প্রখরতর হয়। বৎসরাজ উদয়নের মুখে সাগরিকার রূপ-বর্ণনায় কবিত্বেব উৎস উৎসারিত হইয়াছে। তাঙ্গর এক স্থলের উক্তি,— “শীতাংশুমুখমুংপলে তব দুশে, পামুকবে, রস্তাগর্ভ-নিভং ভবোরুযুগলং, বাহু মৃণালোপমেী ; ইতালাকরাখিলাঙ্গি, বভসন্নিঃশঙ্কমালি মামঙ্গানি ত্বমনঙ্গতাপবিধুরাণেহেহি নিৰ্ব্বাপয়।” উপমার ঘনঘট । শতাংশুর স্তায় মুখকমল, উৎপলের স্থায় নয়ন, কমলের স্তায় করতল, রস্তাগঙনিভ উরুযুগল, মৃণালোপম ভুজ-যুগল,—তোমার এই সকল সুন্দর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমার আনন্দ-বৰ্দ্ধন করুক। তুমি নিঃশঙ্ক-চিত্তে আমায় আলিঙ্গন করিয়া আমার অঙ্গ-তাপ নিবারণ কয়।' উপবনে বৎসরাজ যখন সাগরিকার অম্বুধ্যানে নিমগ্ন, সেই সময় সহসা অবগুণ্ঠনে