পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৭১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য-সম্পং । 8 a 3 প্রথম শ্লোক বলিয়া উদ্ভূত হইয়াছে, বোম্বাই-প্রদেশে প্রচলিত সংস্করণে উছার পরিবর্তে নিম্নলিখিত শ্লোকটী নীতিশতকে ও বৈরাগ্য-শতকে--উভয় শতকেই দেখিতে পাই । “দিকালাস্কনবচ্ছিন্নানস্তচিন্মাত্রমূৰ্ত্তয়ে। স্বামৃভূত্যেকসারায় নমঃ শাস্তায় তেজসে।” পূৰ্ব্বোস্থত শ্লোকে দেবাদিদেব মহাদেবকে সম্বোধন করা হইয়াছে। কিন্তু এই শ্লোকে অনাদি অনন্ত চিন্ময়কে আহবান করা হইতেছে । দ্বিবিধ সংস্করণের এই দুই প্রকার প্রারম্ভে কবি শৈবমতাবলম্বী ছিলেন, কি অদ্বৈতবাদী ছিলেন,—তদ্বিযয়ে সংশয় উপস্থিত হয় । প্রথমোক্ত শ্লোকটী (চুড়োহুংসিত ইত্যাদি শ্লোক ) যদিও ভর্তুহরির রচনার মধ্যেই স্থান পাইয়া আছে ; কিন্তু উহা শতকাতিরিক্ত বিবিধ শ্লোকের মধ্যে পরিগণিত হইয়াছে । এ ভিন্ন আরও এক অভিনব সমস্তার বিষয় আছে । বৈরাগ্য-শতক, নীতিশতক প্রভৃতিতে যে সকল শ্লোক দেখিতে পাই, ঐ সকল শ্লোকের অনেক শ্লোক অন্যান্ত প্রসিদ্ধ প্রাচীন গ্রন্থের অন্তর্নিবিষ্ট হইয়া আছে। দৃষ্টান্ত-স্বরূপ নিয়ে চারিট শ্লোক উদ্ধৃত করিতেছি,— “ভবস্তি নম্রাস্তরব; ফলোদগমৈনবাস্তুভিদুরবিলম্বিনে ঘনাঃ। অমুদ্ধতাঃ সৎপুরুষাং সমৃদ্ধিভিঃ স্বভাব এবৈষ পরোপকারিণাম ॥ ১ ॥ প্রারম্ভতে ন থলু বিঘ্নময়েন নীচৈঃ প্রারম্ভ বিঘ্নবিহতা বিরমন্তি মধ্যাঃ । বিন্ধৈঃ পুনঃপুনরপি প্রতিহন্তমানাঃ প্রারস্ত চোত্তমজনী ন পরিত্যজস্তি ॥ ২ ॥ কিং কুৰ্মষ্ঠ ভরব্যথা ন বপুষি ক্ষমাং ন ক্ষিপত্যেষ যৎ কিং বা নাস্তি পরিশ্রমে দিনপতেরাস্তে ন যল্লিশ্চলঃ } কিংচাঙ্গীকৃতমুৎস্বজন্ন মনসা শ্লায্যে জনে লজ্জতে নিৰ্ব্বাহঃ প্রতিপন্নবস্তুযু সতামেতদ্ধি গোত্রব্রতম্ ॥ ৩ ॥ এতা হসস্তি চ রুদন্তি চ কার্য্যহেতোবিশ্বাসয়ন্তি চ পরং ন চ বিশ্বসস্তি । তস্মাল্লরেণ সুশীলসমন্বিতেন নাৰ্য্যঃ শ্মশানঘটিক ইব বর্জনীয়াঃ ॥ ৪ ॥ উল্লিখিত শ্লোক-চতুষ্টয়ের প্রথমটা কালিদাসের ‘অভিজ্ঞান-শকুন্তল নাটকে, দ্বিতীয়ট ও তৃতীয়টা বিশাখদত্তের ‘মুদ্রারাক্ষসে এবং চতুর্থটা শূদ্রকের মৃচ্ছকটিকে অবিকল দৃষ্ট হয়। এবম্বিধ সাদৃপ্তের বিষয় পৰ্য্যালোচনা করিয়া পণ্ডিতগণ বিভিন্ন সিদ্ধান্তে উপনীত হন। কেহ বলেন,—ঐ শ্লোকগুলি নীতিবাক্যরূপে আবহমানকাল সংসারে চলিয়া আসিতেছে। অধুনা যেমন চাণক্যের বা হিতোপদেশের নীতি-স্বত্রগুলি আধুনিক সাহিত্যিক-গণ আপনাদের রচনার মধ্যে দৃষ্টান্ত-স্বরূপ উদ্ধৃত করিয়া থাকেন, ঐ শ্লোকগুলিও কালিদাস প্রমুখ কবিগণ সেইভাবে আপন-অপন গ্রন্থ মধ্যে সঙ্কলন করিয়া থাকিবেন। ঐ সকল প্রতিভাবান মহাকবি আপনাদের রচনার মধ্যে অপরের রচনা গ্রহণ করিয়া সাহিত্য-সংসারে যে চৌর্য্যবিদ্যার আদর্শ রাখিয়া যাইবেন, তাহা কখনই মনে করা যায় না। সুতরাং পূৰ্ব্বোক্তরূপ সিদ্ধান্তই এ বিষয়ে এক হিসাবে সমীচীন বলিয়া মনে করা যাইতে পারে। অন্ত হিসাবে, ভৰ্ভুক্তরির কৃতিত্বের অপলাপ করিতে হয় । বলিতে হয়,—ভর্ভুহরি কেবল সংগ্ৰহকৰ্ত্ত ছিলেন, তিনি শ্লোকগুলির রচয়িত ছিলেন না । ভর্তুহরির ন্যায় কবি, বৈয়াকরণ ও দার্শনিকের সম্বন্ধে